নিয়োগ নীতিমালায় ১২ দফা দাবি বাস্তবায়নে রাবি কর্মকর্তাদের অবস্থান কর্মসূচি

রাবি প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২২ ০২:৫৫; আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ০৭:১২

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অফিসারদের মানববন্ধন।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের পেশাগত বৈষম্য দূরীকরণ ও কর্মকর্তা নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদোন্নয়ন সংক্রান্ত অভিন্ন নীতিমালায় ১২ দফা অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কর্মকর্তাবৃন্দ।

রোববার (১৯ জুন) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এসময় ড. গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে মো. শহীদুল্লাহ'র সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা কামরুজ্জামান চঞ্চল বলেন, ইউজিসি কর্তৃক গোপনীয়ভাবে কর্মকর্তাদের ন্যায্য অধিকার খর্ব করার যে যড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে তা প্রকাশ করার মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের জানাতে চাই। তার প্রতিবাদে আজ আমরা আন্দোলনে নেমেছি। আমি ওই সকল শিক্ষকদেরকে ধিক্কার জানাই যারা আমাদেরকে লেবার মনে করে, আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাবে বলতে চাই আমরাও আপনাদের থেকে কোনো অংশে কম নয়। যদি তাই না হয় তাহলে কেন আপনারা আমাদের কর্মস্থল কেন দখল করতে আসেন?

দর্শন বিভাগের কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, আজকে আমাদের অফিসে বসে শিক্ষার্থীদের সেবা দেওয়ার পরিবর্তে রাস্তায় অবস্থান করছি। ইউজিসির এই কালো থাবার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাদের রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হয়েছে এর মতো লজ্জা আর কি হতে পারে? ইউজিসি একটি আমব্রেলা নামক কমিটি গঠন করে বাংলাদেশের ৫২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একটি নীতিমালায় আনতে চাচ্ছে। আমরা গোপন সূত্রে শুনেছি তারা আমাদেরকে দুটো প্রমোশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চায় যেটা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্টের নীতিগত লঙ্ঘন।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে আমার ৬২ নয় ৬৫ বছর পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করতে চায়। যত প্রশাসনিক কোটা খালি আছে সেগুলোতে যোগ্যতম লোক বাচাই করে নিয়োগ দিতে হবে। কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও পদায়নের সুযোগ সুবিধা থাকবে। অফিসার নিয়োগ হওয়ার একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর আমাদের পদোন্নতির ব্যবস্থাসহ ১২ দফা দাবি নিয়ে আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। উপাচার্য স্যার আমাদের দাবিগুলো অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করে আমাদের পাশে দাঁড়াবে এমনটাই প্রত্যাশা স্যারের কাছ থেকে।'

ফিসারিজ বিভাগের কর্মকর্তা শেখ ফরিদ আলি বলেন, 'আমরা আমাদের সম্মান বৃদ্ধির জন্য এখানে দাঁড়িয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নীতিমালা বাস্তবায়ন হলেও কর্মকর্তাদের নীতিমালা বাস্তবায়ন হয়না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের যোগ্যতা থাকা সত্বেও তাদের সাথে কেরানির মতো আচরণ করা হয়। এত সুযোগ সুবিধা আমরা কেন পাচ্ছি?এ নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন। আমি বলতে চাই, এখানে যারা এসেছে তারা সবাই মাস্টার সম্পন্ন করে ভালো পজিশন নিয়ে এখানে এসেছে। আমাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে আমাদের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হোক। প্রশাসনের কাছে তাদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নেওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।'

অডিট সেলের কর্মকর্তা মাসুম আল রশিদ বলেন, 'অনেকেই আমাদেরকে প্রশ্ন করছে ১২ দফা দাবির যৌক্তিকতা কতটুকু? বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আমাদের চাওয়া দাবিগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন বাস্তবায়ন হবে না? যারা সেকশন অফিসার হিসেবে যোগদান করবে শুধু তাদেরই পদোন্নতি হবে এটি কেমন নীতিমালা। প্রাইমারিতে চাকরিরত কর্মকর্তাদের পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে কিন্তু বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে চাকরি করেও সেই সুযোগ সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত। বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কেন এতো বৈষম্যের শিকার হতে হবে? আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।'

এসময় বিভিন্ন বিভাগ, অনুষদ, প্রশাসন ভবন থেকে আসা প্রায় দুই শতাধিক কর্মকর্তা এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top