৬০ ফুট ওপরে ঝুলে থাকার ঝুঁকি আর কে নেবে!

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:০০; আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৯:০৫

ছবি: সংগৃহীত

মাঝেমধ্যে জয়ার মাথায় যেন ভূত চাপে। না হলে স্টান্টম্যান ছাড়া শুটিংয়ে কেউ ৬০ ফুট উঁচু থেকে দড়ি ধরে লাফ দেয়? স্বয়ং মাহুত যখন বলেছিলেন, হাতি নারীদের পিঠে নিতে চায় না, যেকোনো সময় ফেলে দিতে পারে, পিষে ফেললে তিনি কোনো দায় নেবেন না—এরপরও কেউ ঝুঁকি নিয়ে হাতির পিঠে ওঠেন? কেউ সার্কাসের মঞ্চে উঁচুতে টানানো দড়ি ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাঁটে? এমন অনেক বিপদ মাথায় নিয়েও ‘বিউটি সার্কাস‘–এ বেপরোয়ার মতো ঝুঁকি নিয়েছেন জয়া আহসান। গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটির ট্রেলার। এরপর থেকেই দেশ–বিদেশে ভক্তদের প্রশংসায় ভাসছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।

‘শূন্যে দড়িতে ঝুলে আছি। দৃশ্যটি ধারণের পরে ফাইট ডিরেক্টরের কাছ থেকে শুনতে হয়েছিল আপা, জীবনের সদকা দিয়ে দিয়েন। এভাবে নিরাপত্তা ছাড়া কেউ শুটিং করে না। যেকোনো মুহূর্তে দড়ি ছিঁড়ে বড় দুর্ঘটনায় পড়তে পারতেন। ভালো নিরাপত্তাব্যবস্থা আমাদের ছিল না। আমি জয়া সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েছি,’ কথাগুলো বলে লম্বা একটা নিশ্বাস ছাড়েন জয়া।

চার বছর আগে মাহমুদ দিদারের কাছ থেকে প্রস্তাবটা পেয়ে কিছুটা চমকেই গিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। বিউটি সার্কাস সিনেমার বিউটি চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। ধাঁধার মধ্যে পড়ে গেলেন জয়া। চরিত্রটির জন্য অনেক ঝুঁকি নিতে হবে যে! ঝুঁকিটা নেবেন ঠিক করলেন জয়া, ‘নিজেকে আবিষ্কার করাই তো শিল্পীর কাজ। সব শিল্পীই তো বারবার নিজেকে ছাপিয়ে যেতে চান। এই যে গত দুই দিন হলো বিউটি সার্কাস সিনেমার ট্রেলার দেখছেন দর্শক। অন্য এক জয়াকে দেখছেন তাঁরা। দেশ বা বিদেশের বন্ধুরা অবাক হয়ে ফোন দিচ্ছে। তারা সবাই বিস্মিত। দড়ি ধরে ঝুলে থাকা, দড়ি ধরে ওপর থেকে নামা, হাতির ওপর পতাকা নিয়ে চক্কর দেওয়া—প্রতিটা মুহূর্তই ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলো যখন বিশেষভাবে আলোচনায় এল, মনে হলো আমার জায়গায় আমি ঠিকমতো কাজটি করেছি।’

জয়া এখন কলকাতায় আছেন। সেখান থেকে জানালেন, পরিচালক, প্রযোজক তাঁকে যেভাবে পরিকল্পনায় রেখেছেন, অন্যান্য কাজের ফাঁকে সেভাবেই প্রচারণায় অংশ নিতে চান। তবে যেখানেই থাকবেন, সেখান থেকেই সিনেমার অনলাইনে প্রচারে সরব থাকবেন। পূজার কিছু কাজের পাশাপাশি এখন মায়ের সঙ্গেই সময় কাটাচ্ছেন জয়া। এই প্রথম মাকে নিয়ে কোনো চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছিলেন। জয়া বলেন, ‘ব্রাত্য বসুর ঝরাপালক বেঙ্গালুরুর একটি চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়েছে। প্রথম কোনো উৎসবে নানা ভাষার লোকের সঙ্গে আমার ছবিটি দেখলেন মা। অবাক হয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। মনোযোগ দিয়ে সিনেমার লাবণ্যকে দেখছিলেন মা। শুধু তা–ই নয়, দর্শক যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সিনেমাটি দেখছিলেন, সেটায় অবাক হয়েছিলেন মা। বাঙালিদের অংশগ্রহণ দেখে আমি ও মা মোহিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘উৎসবে বিভিন্ন প্রদেশের দর্শকদের প্রশ্ন শুনে বোঝা যায়, বাঙালি জাতির কত বড় একটা ট্রেজার জীবনানন্দ দাশ।’

বিউটি সার্কাস ছাড়াও বাংলাদেশে জয়ার আরেকটি ছবি মুক্তি পাচ্ছে। পিপলু আর খানের ’জয়া আর শারমিন’। করোনার মধ্যে অদ্ভুত একটি সময় আমরা পার করে এসেছি। সেই করোনার শুরুর দিকে আমাদের সিনেমাটির শুটিং করা হয়েছিল। এটা সংবেদনশীল দর্শকদের খুবই ভালো লাগবে। অন্য রকম রিয়্যালিটির ছবি। আমাকেই দর্শক প্রথমবার পর্দায় দেখবেন।’ জয়াকে নিয়ে এই বছরই ডিসেম্বর দর্শকদের সামনে মুখোমুখি হতে পারেন জয়া। এই সময়ে দেশের দর্শক আরও বেশি হলমুখী হবেন বলে মনে করেন এই অভিনেত্রী, ‘একটার পর একটা নতুন ছবি আসতে হবে। দর্শক রেস্তোরাঁয় যাওয়ার মতো রিক্রিয়েশনের জন্য সিনেমা হলেও যেন যান, সেই সুযোগ করে দিতে হবে। তাহলে আমাদের সিনেমার বিপুল দর্শক হলমুখী হবেন। বিকল্প ধারার সিনেমাগুলোও দর্শক দেখবেন। একের পর এক এভাবে ভালো কাজ দিয়ে সিনেমাও আলোচনায় থাকতে পারে।’

‘দিন দিন জয়ার রূপে মুগ্ধ হচ্ছেন ভক্তরা,’ এমন কথা শুনে হাসলেন এই অভিনেত্রী। ইরানের সিনেমা ফেরেশতের শুটিং শেষ করে এখন একাধিক সিনেমার ডাবিং নিয়ে ব্যস্ত। এর মধ্যেও নতুন রূপে নিয়মিত ধরা দেন ফেসবুকে। নিজেকে কতটা সময় দিতে হয়? এমন প্রশ্নে হেসে বলেন, ‘নিজেকে সময় দেওয়াই হয় না। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাই। আর লোকে ভালোবাসে বলে আমার ফেসবুকে ছবিগুলো পছন্দ করেন। আর শোনেন, আমি কিন্তু এখন প্রচুর খাচ্ছি। পূজার সময় মাকে নিয়ে প্রচুর খাচ্ছি, প্রচুর শপিং হচ্ছে। একটু ঘুরছি, পার্কে যাচ্ছি। এর মধ্যে যা একটু নিজের যতœ।’ সবশেষে জানালেন, এখন দেশের চেয়ে ভারতেই তাঁর ব্যস্ততা বেশি। সময় বুঝে তাঁর প্রযোজনার ছবি ’রইদ’ নিয়ে ব্যস্ত হবেন। হাওয়াখ্যাত পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের ছবিটি পরিচালনার কথা।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top