10427

04/26/2024 হারিয়ে যাচ্ছে ঘানি শিল্প

হারিয়ে যাচ্ছে ঘানি শিল্প

রাজটাইমস ডেস্ক

২৪ জুলাই ২০২২ ০৪:৫১

কল-কারখানার সঙ্গে পাল্লা দিতে এবং কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার প্রাচীন ঐতিহ্য ঘানি শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। এলাকার প্রবীণরা জানান, এক সময় ঘানির তেল ছাড়া গ্রামাঞ্চলের লোকদের চলত না। রান্না-বান্নাসহ শরীরেও মাখা হতো। প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে ঘানি শিল্প টিকে থাকতে পারছে না। এক সময় চিরিরবন্দর উপজেলায় শতাধিক ঘানি ছিল। এখন হাতে গোনা ১২টি ইউনিয়নে পাঁচ থেকে সাত জন এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। তার মধ্যে তিনটি সচল রয়েছে— বাসুদেবপুর, বিন্যাকুড়ি ও নশরতপুরে।

উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ নশরতপুর তেলি পাড়ার মৃত পতিবদ্দিনের পুত্র মো. মোকছেদ আলী। তিনি দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে এই ঘানি শিল্পের ব্যবসা করে আসছেন। এটা তার পৈত্রিক ব্যবসা। ঘানিতে সরিষা ভেঙে তেল ও খইল বিক্রি করেন উপজেলার রাণীরবন্দর সুইহারী বাজারে। তবে তার বাড়িতেও তিনি তা বিক্রি করেন।

নশরতপুর তেলি পাড়ায় মো. মোকছেদ আলীর বাড়ি গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির মাঝখানে একটি ছোট ঘর। ঐ ঘরের ভেতর রয়েছে তার ঘানি। ঘরের মাঝখানে রয়েছে একটি গাছ জাতীয় জিনিস। সেটির মাথায় (ওপরে) রাখা হয়েছে অনেকখানি সরিষা। তার গোড়া দিয়ে বের হচ্ছে তেল। তেল ধরে রাখার জন্য রাখা হয়েছে দুটি পাত্র। একটি গরু ঘানি টানছে। গরুটির দু চোখ কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। গরুটি ঐ গাছটির চারদিক ঘুরছে। আর ক্যাঁচ ক্যাঁচ ঘানির শব্দ হচ্ছে। বাইরে আর একটি গরু প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। ঘানি টানা একটি গরু ক্লান্ত হলে বাইরের রাখা গরুটি দিয়ে টানা হবে। প্রতিবারে সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি সরিষা ভাঙা সম্ভব হয়। আর এই পাঁচ কেজি সরিষা থেকে দুই কেজি তেল উৎপাদন করা যায়। পাঁচ কেজি সরিষা ভাঙতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। এইভাবে দিনে পর্যায়ক্রমে একটি ঘানি থেকে ৩০ থেকে ৩৫ কেজি সরিষা ভাঙা সম্ভব। বাজারে এ তেলের চাহিদাও বেশ লক্ষ্য করা যায়। প্রতি কেজি ঘানির এ তেল বর্তমানে বিক্রি হয় ৪০০ টাকা দরে।

ঘানির মালিক মো. মোকছেদ আলী জানান, আগে এসব এলাকায় অনেক ঘানি ছিল। এখন আর সেই ঘানির তেল অনেকেই করেন না। দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে ঘানি শিল্প। তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন ঘানি টেনে সরিষা ভাঙাই। উপজেলার রাণীরবন্দর সুইহারী বাজারে তেল বিক্রি করি। খাঁটি ঘানির তেল ও খইলের এখনো চাহিদা রয়েছে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]