10821

04/30/2025 এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোতে ডলারের বাড়তি দাম

এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোতে ডলারের বাড়তি দাম

রাজটাইমস ডেস্ক

২৪ আগস্ট ২০২২ ২০:২১

ডলার নিয়ন্ত্রিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও কমছে ডলারের দাম। এদিকে, এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো আগের মতো রেমিট্যান্সের ডলারের জন্য বেশি দাম চাইলেও বেশিরভাগ ব্যাংকই বাংলাদেশ ব্যাংকের শাস্তি এড়াতে এত দাম দিয়ে হাউজগুলো থেকে ডলার কিনতে চাইছে না। খবর টিবিএসের।

ব্যাংকগুলোর কাছে এখনও ১১০ টাকার বেশি দর হাঁকছে মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো। তাদের যুক্তি বেশি দামে ডলার সংগ্রহ করতে হচ্ছে, তাই বিক্রির ক্ষেত্রেও দাম বেশি।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) বেশ কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জ হাউজের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা গেছে, মানিগ্রাম ১০৩.৯৫ টাকা, স্মল ওয়ার্ল্ড ১০৯.৪১ টাকা এবং ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন ১০৮.৭৩ টাকা দিয়ে প্রবাসীদের কাছে থেকে রেমিট্যান্সের ডলার কিনছে।

এছাড়া, ব্যাংকগুলো মঙ্গলবার আমদানির জন্য এলসি সেটেলমেন্ট বা নিষ্পত্তি করেছে ১০৫ থেকে ১০৬ টাকা দরে। এক্সপোর্ট পেমেন্ট এনক্যাশের ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকরাও ১০৪ টাকার মতো দাম পেয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক আগের মতোই ৯৫ টাকা দরে ডলার বিক্রি করেছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই দামে ৭০ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে ব্যাংকগুলোর কাছে।

রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলো সরকারি এলসি নিষ্পত্তির দিকেই নজর দিচ্ছে বেশি। যেমন- অগ্রণী ব্যাংক মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে কিনতে পেরেছে ১৫ মিলিয়ন ডলারের মতো। এই ডলার দিয়ে সরকারি আমদানির অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে। এদিন বেসরকারি কোনো এলসির পেমেন্ট করেনি ব্যাংকটি।

বেশ কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডলারের দাম এখন কমার দিকে রয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকিও এখন বেড়ে গেছে। তাদের ধারণা, ডলারের বাজার এখন আগের তুলনায় কিছুটা স্থিতিশীল।

তবে দুই-তিনদিনের স্থিতিশীলতাকে বাজারের দীর্ঘমেয়াদী অবস্থা বলা যায় না বলেও মন্তব্য করেন ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি বাড়ার কারণে ব্যাংকগুলো লেনদেনের ক্ষেত্রে এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সতর্ক।

ডলারের দাম নিম্নগামী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বেসরকারি একটি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, বাজারে ডলারের চাহিদা আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। আমদানিও কমেছে। সেইসঙ্গে, ডলার প্রবাহ কিছুটা বেড়েছে। ফলে দাম কমে আসছে।

তিনি বলেন, এলসি পেমেন্ট ম্যাচুরিটি সাধারণত গড়ে ৯০ দিনের হয়। মে থেকে এলসি খোলার বিষয়ে ব্যাংকগুলো অনেক কঠোর হয়ে গেছে। অপ্রয়োজনীয় রপ্তানির ক্ষেত্রে তাদেরকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল। ফলে প্রায় তিন মাসের ব্যবধানে ইমপোর্ট এলসির চাপটাও এখন কিছুটা কমে এসেছে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমে যাওয়াটাও ডলারের চাহিদায় প্রভাব ফেলেছে।

আগের ডলারের দামে এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর আধিপত্য ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, "অনেক ব্যাংক শুনেছি বেশি দাম দিয়ে ডলার কিনছে। ব্যাংকগুলোর ডলার কেনায় কম্পিটিশনও আগের তুলনায় কমেছে। বেশিরভাগ ব্যাংকই বেশি দাম দিয়ে ডলার কিনছে না।"

ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্স আসার প্রবণতা বেড়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, "শুধু আমার ব্যাংকই নয়, বেশিরভাগ ব্যাংকেই রেমিট্যান্স আসা বেড়েছে।"

"আমাদের ব্যাংকগুলোও প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য উৎসাহিত করছে। সবকিছু মিলিয়েই রেমিট্যান্সে একটি ইতিবাচক ভাব দেখতে পাচ্ছি", যোগ করেন তিনি।

ডলার সংকটের কারণে গত ৮ অগাস্ট এলসি সেটেলমেন্ট রেট সর্বোচ্চ ১১২ টাকায় গিয়ে পৌঁছায়। ওইদিনই ডলার কেনাবেচা থেকে মাত্রাতিরিক্ত লাভ করায় পাঁচটি দেশি ও একটি বিদেশি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানদের অপসারণ করে ব্যাংকের হিউমেন রিসোর্স ডিপার্টমেন্টে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই সিদ্ধান্তের জেরে পরদিনই ১১০ টাকায় নেমে আসে এলসি সেটেলমেন্টে ডলারের দাম। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে কমছে ডলারের দাম। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, অতিরিক্ত লাভ করা আরো কয়েকটি ব্যাংকে অনিয়ম হয়েছে কিনা জানতে অনুসন্ধান চলছে।

খোলাবাজারে ডলারের দাম ১১০ টাকার নিচে

ব্যাংকে ডলারের দাম কমে আসায় খোলাবাজারেও কমেছে ডলারের দাম। মঙ্গলবার দেশের বেশিরভাগ এক্সচেঞ্জ হাউজই ১০৮ টাকায় ডলার কিনে ১০৯.৫০ টাকায় বিক্রি করেছে।

কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম ১২০ টাকা ছাড়িয়েছিল। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে ধীরে ধীরে কমে আসে ডলারের মূল্য। সর্বশেষ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে এক বৈঠকে মানি চেঞ্জারদের ডলারপ্রতি সর্বোচ্চ ১.৫০ টাকা লাভ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর থেকে আরো সতর্ক হয়েছে মানি চেঞ্জারগুলো।

৫টি মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া, নানা অভিযোগে ৪২টি মানি চেঞ্জারকে সতর্কও করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেইসঙ্গে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য উঠে আসার পর এবার অর্থ পাচার বা হুন্ডিতে কোনো মানিচেঞ্জারের সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-(বিএফআইইউ)। ২৮টি মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য তলব করেছে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কাজ করা এ ইউনিট।

মূল খবরের লিঙ্ক

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]