11499

04/30/2025 রিজার্ভ নেমেছে ৩৬ বিলিয়নের নীচে

রিজার্ভ নেমেছে ৩৬ বিলিয়নের নীচে

রাজটাইমস ডেস্ক

২২ অক্টোবর ২০২২ ০০:৪৬

নিম্নমুখী দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়নের নিচে নেমেছে। রিজার্ভ থেকে ক্রমাগত ডলার বিক্রি ও রেমিট্যান্স কমার কারণে এমন পরিস্থিতি। খবর টিবিএসের। 

বৃহস্পতিবার দিনশেষে দেশের ফরেইন কারেন্সির রিজার্ভ নেমে দাঁড়িয়েছে ৩৫.৯৮ বিলিয়ন ডলারে।

২০২০ সালের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ৩৬ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক পেরিয়েছিল দেশের রিজার্ভ। এরপর থেকে ওঠানামার মধ্যে থাকলেও এ পর্যন্ত রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়নের নিচে কখনোই নামেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, "রিজার্ভ দিয়ে সাধারণত ২ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা থাকলেই সেটিকে পর্যাপ্ত বলে ধরে নেওয়া হয়।"

"বর্তমানে যে রিজার্ভ আছে সেটি দিয়ে অন্তত ৫ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। সেদিক থেকে আমরা রিজার্ভ নিয়ে এখনই শঙ্কিত হচ্ছি না," যোগ করেন তিনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, জুলাইয়ের শুরুতে রিজার্ভ ৪১.৪৩ বিলিয়ন ডলার ছিল। চাহিদা অনেক বেশি থাকায় রিজার্ভ থেকে প্রায় প্রতিদিনই ডলার বিক্রি করতে হয়েছে। এটি রিজার্ভ কমার অন্যতম কারণ।

বৃহস্পতিবার রিজার্ভ থেকে ৬০ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪ মাসে রিজার্ভ থেকে ৪.৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে।

সে হিসাবে ডলারের বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে প্রতি মাসে রিজার্ভ থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পুরো ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭.৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছিল রিজার্ভ থেকে।

রিজার্ভ থেকে এসব ডলার জ্বালানী, সরকারি ও সামরিক কেনাকাটার এলসি সেটেলমেন্টে ব্যয় হচ্ছে। জ্বালানী তেলে ডলারের দাম কম পড়লে বিপিসির ক্ষতির অংশ কমে আসে, তাতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে জ্বালানী সরবরাহ করা সহজ হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেকটি সূত্র টিবিএসকে জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের নেতৃত্বে একটি রিসার্চ টিম রিজার্ভকে কীভাবে স্থিতিশীল রাখা যায়, তা নিয়ে কাজ করছে। টিমটি রিজার্ভ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপ পর্যালোচনার পাশাপাশি রিজার্ভকে কীভাবে বাড়ানো যেতে পারে, সেটি নিয়েও গবেষণা করছে।

গত জুন মাসে দেশের আমদানি এলসি সেটেলমেন্টে ব্যয় হয়েছিল ৭.৭৫ বিলিয়ন ডলার। বিলাসদ্রব্য আমদানিতে শতভাগ মার্জিন সংরক্ষণ, ৩ মিলিয়নের বেশি এমাউন্টের আমদানি এলসি খোলার আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানোসহ মনিটরিং বাড়ানো ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে জুলাই মাসে এলসি সেটেলমেন্টে ব্যয় কমে ৭.৪২ বিলিয়ন ডলারে নামে।

আগস্টেও আগের মাসের তুলনায় প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার কমে সেটেলমেন্টে খরচ ৫.৯৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। তবুও প্রধানত আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়ার কারণে আগের অর্থবছরের জুলাই-আগস্টের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি ১৭% বেড়েছে। সে তুলনায় রপ্তানি বেড়েছে ১৩.৩৮% এর মতো।

রেমিট্যান্স প্রবাহও চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ভালোই ছিল। অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই ও আগস্টে গড়ে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি এমাউন্টের রেমিট্যান্স এসেছে। ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্সের ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেওয়াসহ বেশকিছু কারণে সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স কিছুটা কমে ১.৫৪ বিলিয়ন ডলারের মতো এসেছে।

আগের বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে ৪.৮৮%। সর্বশেষ অক্টোবরের ১৩ তারিখ পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৭৭০ মিলিয়ন ডলার।

বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান জানান, রেমিট্যান্সের ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ায় রেমিট্যান্স কিছুটা কমেছে, এটা সত্য। তবে এই দাম নির্ধারণ ব্যাংকগুলোর মধ্যে রেমিট্যান্স সংগ্রহ নিয়ে প্রতিযোগিতা কমিয়েছে। ফলে আমদানি এলসি সেটেলমেন্টে ডলারের দাম কম পড়ছে। এছাড়া করোনার কারণে এক বছর প্রবাসী শ্রমিক পাঠানো একরকম বন্ধ ছিল। বছরখানেক ধরে সেটি চালু হওয়ায় রেমিট্যান্স সামনের দিনগুলোতে বাড়বে বলে আশাবাদ জানান তারা।

সানেম এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সেলিম রায়হান টিবিএসকে বলেন, "রিজার্ভ নিয়ে উদ্বেগের কথা আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছিলাম। রিজার্ভ ক্রমাগত কমছে। রিজার্ভের বর্তমান অবস্থা যদিও আতঙ্ক ছড়ানোর মতো কোনো অবস্থায় যায়নি, তবে এর কমার ধারাটি আমাদের জন্য একটি কনসার্নের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

"এর সঙ্গে এক্সপোর্ট ও রেমিট্যান্স সেপ্টেম্বরে কমেছে। ফলে রিজার্ভের উপর চাপ পড়ছে। আমদানি এলসি খোলার পরিমাণ কমছে, তবে এর ফল পেতে আমাদের কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে," যোগ করেন তিনি।

নিউজের লিঙ্ক

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]