14160

03/29/2024 গাসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কেমন চলছে

গাসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কেমন চলছে

রাজটাইমস ডেস্ক

২৫ মে ২০২৩ ১৮:৩৬

বাংলাদেশের গাজীপুর সিটি করপোরেশন (গাসিক) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে এই ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে কোনো প্রার্থী দেয়নি বিএনপি। তবে বিএনপির বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সিটি নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ ও প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর সেখানে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়। নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে।

গাজীপুরে থাকা বিবিসির সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নির্বাচনে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার কথা জানা যায়নি। তবে কিছু কিছু কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট দিতে অনেকের আঙ্গুলের ছাপ মিলতে দেরি হচ্ছে।

সকাল ৮টার দিকে ভোট কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের লাইন চোখে পড়লেও সাড়ে ৮টার পর থেকে ভিড় কমতে থাকে।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদক আবুল কালাম আজাদ সকালে পশ্চিম জয়দেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত মোট চারটি ভোট কেন্দ্রে ঘুরেছেন। এসব ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য নয়। ভিড় একদম নেই বললেই চলে।

পশ্চিম জয়দেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার তিন হাজার ২৭৪ জন। তবে খুব বেশি ভোটার উপস্থিতি দেখা যায়নি। ওই কেন্দ্রে মোট নয়টি বুথ রয়েছে। কেন্দ্রটিতে প্রথম ঘণ্টায় ১০০-এর কম ভোট পড়েছে বলে জানা যায়।

আজাদ জানান, তিনি বেশ কয়েকজন ভোটারের সাথে কথা বলেছেন। তারা জানিয়েছেন, ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে ভোট দিতে কিছুটা সময় লাগছে। তবে এতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

তবে কিছু ভোটার- বিশেষ করে নারী ভোটাররা কিছুটা সমস্যার মুখে পড়েছে। তারা ভোট দেয়ার নির্দিষ্ট বুথ খুঁজে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছে।

সকালে আউচপাড়া নিউ ব্রুন স্কুল কেন্দ্রে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ভোট দেন। সেখানে ইভিএম কাজ না করার কারণে তিনি বেশ কিছুক্ষণ ভোট দিতে পারেননি।

বেশ কিছুক্ষণ পর ভোট দিয়ে বের হয়ে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

তিনি জানান, ‘ভোট দিয়েছি। মেশিনে বোধহয় একটু সমস্যা ছিল। আমিই প্রথম ভোটার। মেশিনটা স্টার্ট দেয়ার মুহূর্তে বোধহয় কিছুটা জটিলতা ছিল। কিন্তু অল্প কিছুক্ষণ পরেই সেটি ঠিক হয়েছে।’

তিনি মনে করেন, ভোটগ্রহণের সামগ্রিক পরিবেশ ভালো।

সকালে টঙ্গী এলাকার দু’টি ভোট কেন্দ্রে ছিলেন বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা শাহনেওয়াজ রকি।

তিনি জানান, টঙ্গীর নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকাল থেকে প্রচুর আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর উপস্থিতি চোখে পড়েছে। তবে ওই কেন্দ্রে তেমন কোনো ভোটারের উপস্থিতি সকাল পর্যন্ত দেখা যায়নি।

দারুস সালাম মাদরাসা ভোট কেন্দ্রে সকাল থেকেই ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা গেছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, কয়েকটা ইভিএম ঠিক মতো কাজ করছিল না বলে তাদের ভোট দিতে দেরি হচ্ছিল।

হানিফ সরকার নামে এক ভোটার অভিযোগ করে বলেন, সাতবার ফিঙ্গার স্ক্যান করার পরও ভোট দিতে ব্যর্থ হয়ে পরে তিনি স্মার্ট কার্ড দিয়ে ভোট দিতে পেরেছেন।

ইভিএম কাজ না করার বিষয়ে এ ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার জাকির হাসান তালুকদার বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কয়েকটি মেশিনে ভোট দিতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে ভোটারদের। পরে সেগুলো ঠিক করা হয়েছে।

টঙ্গী দারুস সালাম মাদরাসা ভোট কেন্দ্রটিতেই ভোট দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান। ইভিএম-এর সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, তার ভাইও ভোট দিতে এসে ভোট দিতে পারেননি। পরে স্মার্ট কার্ড নিয়ে এসে ভোট দিয়েছেন।

ইভিএম ত্রুটির কারণে যেন কেউ ভোট দেয়া থেকে বঞ্চিত না হয় তার জন্য সময় শেষ হওয়ার পরও উপস্থিত ভোটারদের ভোটগ্রহণ করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ করেছেন তিনি।

আউচপাড়া নিউ ব্রুন স্কুল কেন্দ্রের আটটি বুথের মধ্যে সবকটিতেই ইভিএম মেশিন চালু না হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল। পরে অবশ্য সেগুলো ঠিক করা হয় বলে জানা যায়। ওই কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৬৯৭ জন।

৩০ নম্বর ওয়ার্ডের একটি স্কুলে ভোট দেয়ার কথা রয়েছে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের।

এর আগে নির্বাচন কমিশন জানায়, এ নির্বাচনে ৪৮০টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে প্রায় ৩৫১টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছিল।

পরে সেগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য পুলিশের পাশাপাশি আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। একইসাথে সিসিটিভি ক্যামেরাও লাগানো হয়।

গাজীপুর নির্বাচনে মোট আটজন প্রার্থী মেয়র পদের জন্য প্রতিযোগিতা করছেন।

এই নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজারের বেশি। নির্বাচন পরিচালনায় থাকছে ৪৭৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, প্রায় সাড়ে তিন হাজার সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, প্রায় সাত হাজার পোলিং অফিসার ও প্রায় ১২ হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে কোনো প্রার্থী দেয়নি বিএনপি। দলটি বলছে, ২০১৮ সালের অভিজ্ঞতা থেকে তারা এ সরকারের অধীনে সব ধরনের নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে বলেই মনে করে অনেকে।

তফসিল অনুযায়ী দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশনের মধ্যে ২৫ মে ভোট হচ্ছে গাজীপুরে। এরপর ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল এবং ২১ জুন সিলেট ও রাজশাহী সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র : বিবিসি

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]