05/01/2025 রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে তাণ্ডাব চালানো সার্কাসের হাতি আটক
রাজ টাইমস ডেস্ক :
৯ নভেম্বর ২০২৩ ২১:৪৭
রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে রাতভর তাণ্ডব চালিয়ে স্কুল ছাত্রসহ দুজনকে আছড়ে মারার পর রাজশাহীর তানোরে বনবভাগের বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তাদের হাতে ধরা পড়েছে সার্কাসের একটি পাগলা হাতি।
অনেক চেষ্টার পর তানোর উপজেলার বৈদ্যপুর গ্রামের কবরস্থানের জঙ্গলে সামাজিক বনবিভাগের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে বন্দুকের মাধ্যমে দেহে চেতনানাশক পুশ করে হাতিটি ধরে ফেলেন।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে ঢাকা থেকে আসা সামাজিক বনবিভাগের বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও তানোর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দিনভর চেষ্টা চালিয়ে বৈদ্যপুর গ্রামের গোরস্থানের জঙ্গলে হাতিটি চেতনানাশক প্রয়োগ করে শিকল ও দড়ি দিয়ে চার পা গাছের সঙ্গে বাঁধতে সক্ষম হন।
এ সময় তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিল্লাল হোসেন, তানোর থানার ওসি আব্দুর রহিমসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে খবর পেয়ে হাতির মালিকের লোকজনসহ আরেক হাতির মাহুত উপস্থিত ছিলেন। এসময় উৎসুখ জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় করেন।
এদিকে আটক পাগলা হাতির সঙ্গীটিকে আগেই স্থানীয়রা ধরে ফেলেন। পরে প্রশাসন হাতিটি তার মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেন।
অন্যদিকে বন্যপ্রাণিকে অবহেলা এবং হাতির কারণে প্রাণহানির ঘটনায় নাচোল থানায় ৩০৪/ক ধারায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচ আসামিকে আদালতের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাচোল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মঈনুল জানান, এ ঘটনায় বুধবার রাতেই পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিনজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় হাতি দুটির মাহুত ও তাদের সহকারীসহ ৫ জনকে বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে কালাম, শুকুর, আজিজুল এবং হারুনকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, হাতির আক্রমণে আদিবাসী রামপদের মৃত্যুর ঘটনাস্থল রাজশাহীর তানোরে হওয়ায় তানোর থানা এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।
জানা যায়, বগুড়া থেকে সার্কাসের দু’টি হাতি নিয়ে মাহুত (হাতির রাখাল) ও তাদের সহকারীরা গত কয়েকদিন ধরে নাচোলে এসে চাঁদাবাজি করছিল। একপর্যায়ে মঙ্গলবার থেকে এর একটি হাতি অনিয়ন্ত্রিত আচরণ শুরু করে।
গত বুধবার (৮ নভেম্বর) সকালে নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের মানিকড়া গ্রামে স্কুল ছাত্র মো. মুফাসসির হোসেন ও বিকালে পাশের তানোর থানাধীন জুমারপাড়ায় রামপদকে শুঁড় দিয়ে আছড়ে ও পিষে মারে। নষ্ট করে প্রায় পাঁচ বিঘা জমির ধান।
হাতির মালিকের লোকজন জানান, যতক্ষণ পর্যন্ত হাতিটি শান্ত ও বশ না মানানো যাবে ততক্ষণ হাতিটি পাহারায় রাখতে হবে। হাতির এক মাহুত বলেন, বর্তমানে হাতিটি কিছুটা শান্ত ও সুস্থ রয়েছে। পুরোপুরি বশ মানিয়ে এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার সকালে নাচোল উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের এক কিশোর ও বিকালে তানোরের জুমার পাড়ার এক আদিবাসী কৃষককে হত্যা করে এই হাতিটি। খবর পেয়ে প্রশাসনের লোকজন সন্ধ্যায় হাতিটিকে ধামধুম গ্রামের এক জঙ্গলে দেখে গ্রামের প্রবেশ মুখে বেড়া দিয়ে চলে আসেন এবং ঢাকায় বণ্যপ্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর খবর দেন।