18507

06/01/2024 ভোটারদের চাপ দেয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলেন কূটনীতিকরা

ভোটারদের চাপ দেয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলেন কূটনীতিকরা

রাজটাইমস ডেস্ক:

৫ জানুয়ারী ২০২৪ ০৯:১৮

নির্বাচন কমিশন বা সরকারের পক্ষ থেকে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে চাপ দেয়া হচ্ছে কিনা তা জানতে চেয়েছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। সেই সঙ্গে নির্বাচনের সময় সহিংসতা সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়েও জানতে চেয়েছেন তারা। জাতীয় নির্বাচনের আগে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে ইসি’র কাছে এমন প্রশ্ন ছিল বিদেশি কূটনীতিকদের।

আগামী ৭ই জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল বিকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার ও আন্তর্জাতিক মিশন প্রধানসহ সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ জনের বেশি কূটনীতিককে ব্রিফ করে নির্বাচন কমিশন। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিফিং শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা জানতে চেয়েছেন, সরকার থেকে বা নির্বাচন কমিশন থেকে ভোটারদের চাপ দেয়া হচ্ছে কিনা? যার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ভোট দিতে যেতে হবে। তাদের বুঝিয়েছি, আমাদের দিক থেকে চাপ সৃষ্টির কোনো কারণ নেই। যখনই নির্বাচন করি, আমরা ভোটার সাধারণের কাছে একটা আবেদন রাখি; যেটা দায়িত্বের অংশ। বলি, আপনারা ভোটকেন্দ্রে এসে অবাধে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সেটা চাপ নয়, এটা হচ্ছে সচেতনতা। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, একটা চাপ অন্যদিক থেকে হতে পারে।

একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছেন। কিন্তু ওখান থেকে যদি ভোটারদের প্রতি বলা হয়, আপনারা যাবেনই না। তাহলে একটা চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

কূটনীতিকদের আমন্ত্রণের বিষয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, তারা সবসময় আমাদের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী। তারা বিভিন্ন সময়ে আমাদের কার্যালয়ে এসেছেন, মতবিনিময় করেছেন। তাদের সবার প্রত্যাশা হলো, আগামী নির্বাচনটা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়। এ জিনিসটার ওপর তারা খুব জোর দিতে চান।

সিইসি বলেন, আমরা শেষ অবস্থাটা তাদের ব্রিফ করেছি এবং আমি একটা স্টেটমেন্ট রিড আউট করেছি। এখন পর্যন্ত আমরা কোন অবস্থানে আছি। বিদেশি দূতরা শুনেছেন। তারা দু’চারটা প্রশ্ন করেছেন। তেমন কিছু নয়। যে প্রশ্নগুলো এসেছে-তার মধ্যে একটি হলো, অভিযোগ কি পরিমাণ পাচ্ছি? আমরা তাদের জানিয়েছি যে, প্রায় ছয়শ’র মতো অভিযোগ পেয়েছি। এরমধ্যে প্রায় চারশ’র মতো অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছি।

অভিযোগ ছাড়াও রাষ্ট্রদূতরা ভোটের ফলাফল প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছেন উল্লেখ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা তাদের জানিয়েছি, রেজাল্টের ব্যাপারে আমরা একটা অ্যাপ করেছি। স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ। আমরা তাদের অবহিত করেছি, প্রতিটি কেন্দ্রে পোলিং চলাকালে দুই ঘণ্টা পরপর যে তথ্য আমাদের প্রতিটি ইলেকশন সেন্টার পাওয়া যাবে, তা আপলোড করা হবে। আপলোড করা হলে যেকোনো নাগরিক পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকে এক্সেস নিয়ে জানতে পারবে ভোটের পরিমাণটা কীভাবে হচ্ছে।

ভোটের সময় সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা নিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, আট লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী তারা পোলিং কালেকশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবেন। আরও এক লাখ স্ট্যান্ডবাই থাকবেন। নয় লাখ প্রস্তুত আছে। আনসার, বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, আর্মি, নেভি ও কোস্টগার্ড সব মিলিয়ে আরও আট লাখ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মাঠে আছেন।

সহিংসতা নিয়ে কিছু জানতে চেয়েছে কিনা? একই সঙ্গে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। অংশগ্রহণ নির্বাচনের বিষয়ে কূটনীতিকরা কিছু জানতে চেয়েছেন কিনা? এ বিষয়ে সিইসি বলেন, না, এ বিষয়ে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করেনি। আমরা ওদেরকে বলেছি সহিংসতা আছে। তবে খুব কম। ৭ তারিখে কোনো সহিংসতার আশঙ্কা করছেন কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন-না, ওটা আমি বলতে পারবো না।

এদিকে রুদ্ধদ্বার ব্রিফিংয়ে সিইসি কূটনীতিকদের বলেন, আপনারা জানেন যে, সুনির্দিষ্ট বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো অরাজনৈতিক সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়ে ভোট বর্জন করেছে। কিন্তু আইন অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের সময় ভিন্ন সরকার রাখতে হলে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। আর তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সম্মিলিত ইচ্ছা ও সিদ্ধান্তের ওপর। নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার ইসিকে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা করছে।

কূটনীতিকদের কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে, প্রধান বিরোধী দল এবং তার মিত্ররা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তারা নির্বাচনে আসলে এটি আরও অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হতো। তারা বার বার ঘোষণা করেছে যে, নির্বাচনে আগে নির্বাচন কমিশনকে ও সরকারকে সরে যেতে হবে। তবে নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো তা আদায় করতে পারেনি। ফলে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠান ছাড়া আমাদের অন্য কোনো পথ খোলা ছিল না।

ব্রিফিং শেষে ঢাকায় জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোসটার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ব্রিফিংয়ে আশ্বস্ত হয়েছেন কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভালো করার চেষ্টা করছে। তারা বেশ গুরুত্ব সহকারে ও কঠোর পরিশ্রম করছেন। তবে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, তারা এর জন্য দায়ী নয় বলে তারা জানিয়েছে।

সফল নির্বাচন হবে আশা জানিয়ে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেন, চীন আশা করে বাংলাদেশে একটি সফল নির্বাচন হবে। এর মাধ্যমে নির্বাচনের পর বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী, স্থিতিস্থাপক, আরও ঐক্যবদ্ধ হবে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]