12/05/2024 ভুয়া অনলাইনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
রাজ টাইমস ডেস্ক
২৭ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২১
শিগগিরই ভুয়া অনলাইনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে তাদের অনলাইন জার্নাল ‘রিপোর্টার্স ভয়েস’ উদ্বোধন ও ডিআরইউ সদস্য লেখক সম্মাননা ২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা জানান।
ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিকুর রহমান এবং ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী এ সময় বক্তব্য দেন।
মন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে হাতেগোনা কয়েকটি অনলাইন ছিল, এখন অনলাইনের সংখ্যা অনেক। তবে সবগুলো অনেক ক্ষেত্রেই সহায়ক নয়। সেজন্য আমরা অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের কার্যক্রম শুরু করেছি। আমাদের পরিকল্পনা আছে এ বছরের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমটি যতদূর সম্ভব সম্পন্ন করা। একইসঙ্গে যে সমস্ত অনলাইন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের পরিবর্তে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহৃত হয়, যে সমস্ত অনলাইন গুজবের সঙ্গে যুক্ত, সমাজে অস্থিরতা তৈরি করে, সেগুলোর ব্যাপারে আমরা আগামী বছর থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া শুরু করব।
অনলাইন নিউজপোর্টাল রেজিস্ট্রেশনের কার্যক্রমটি এগিয়ে যাওয়ার পর এই আইনগত ব্যবস্থা শুরু হবে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, এটি যেমন সমাজের চাহিদা, একইভাবে সাংবাদিক সমাজেরও চাহিদা। যে অনলাইন নিউজপোর্টালগুলো সত্যিকার অর্থে সংবাদ পরিবেশনের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা না করে ভিন্ন উদ্দেশ্যে কাজ করে, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা পৃথিবীর প্রেক্ষাপট। উন্নত দেশগুলোতে এক্ষেত্রে অনেক শৃঙ্খলা স্থাপন করা সম্ভবপর হয়েছে, যেটি এখনও এখানে পুরোপুরি সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে দিতে গিয়ে অনেক সময় ভুল সংবাদ এবং অসত্য তথ্য পরিবেশিত হয়। আবার অনেক সময় দেখা যায়, অনেক বেশি ক্লিক পাওয়ার জন্য দেয়া হেডিংয়ের সঙ্গে ভেতরের সংবাদের সেই মিল নেই। বিশেষ করে যে অনলাইনগুলোতে কোনো অনুষ্ঠান চলাকালীন সংবাদ পরিবেশনের ক্ষমতা রিপোর্টারকে দেয়া থাকে, সেখানে অনেক অনিচ্ছাকৃত ভুল হতে দেখা যায়। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এটা কমিয়ে আনা সম্ভব। এ বিষয়ে পিআইবির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে থাকে, যা সত্যিই প্রয়োজনীয়।
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, এখন দেখা যায় কেউ একজন অনলাইন পোর্টাল খুলে তাকে সাংবাদিকের কার্ড দিয়ে দিল। তিনি আসলে প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিক নন, সেই কার্ডটির জন্যই সাংবাদিক সেজেছেন। এগুলোকে বন্ধ করার জন্য রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন সাংবাদিকদের যে ফোরামগুলো আছে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কিছু কিছু ‘সাংবাদিক নামধারী’র জন্য পুরো সাংবাদিক সমাজের বদনাম হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ কোর্টে অনেক সময় ভুয়া উকিল ধরা পড়ে। আইনজীবী সমিতিই কিন্তু ভুয়া উকিল খুঁজে বের করে। এক্ষেত্রেও সাংবাদিকদের ফোরামগুলো উদ্যোগী হলে সরকার আপনাদের পাশে থাকবে, সহায়তা করবে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিকে অনলাইন জার্নাল শুরুর জন্য অভিনন্দন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনলাইনের মাধ্যমে মানুষের কাছে সহজে তথ্য পৌঁছানো সম্ভব। দেশ ডিজিটাল হয়েছে, সে কারণে এটা করা সম্ভব হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে আমরা যখন সরকার গঠন করি তখন বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল ৪০ লাখ। আর আজকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১১ কোটির বেশি। ২০০৯ সালে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী ছিল সাড়ে ৩ থেকে ৪ কোটি মানুষ, এখন ১৭ কোটি মানুষের দেশে সাড়ে ১৫ কোটির কাছাকাছি মোবাইল সিম ব্যবহারকারী । এই ব্যাপক পরিবর্তন জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল, দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই সম্ভবপর হয়েছে। অথচ ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে আমরা যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের শ্লোগান দিয়েছিলাম, তখন অনেকে হাস্যরস করেছে। আর আজ ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে আমরা প্রতিবছর কয়েক মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি।
এই আয়োজনে ৩০জন ডিআরইউ সদস্য লেখকের হাতে সম্মাননা স্মারক ২০২০ তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। লেখক হিসেবে এ সম্মাননা পেয়েছেন যুগান্তরের দুই সাংবাদিক ও লেখক। ঐহিত্য থেকে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘গল্প ছাড়া মলাট’ গ্রন্থের জন্য যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি ও কবি মিজান মালিক এবং পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ ‘শহরে দেবশিশু’র জন্য যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার ও কথাসাহিত্যিক হক ফারুক আহমেদ সম্মাননা পেয়েছেন।