‘সচিবালয়ে আগুন লেগেছে, এই আগুন স্বাভাবিক আগুন নয়। তথ্য মন্ত্রণালয়ের যেখানে বসেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, সেখানে লেগেছে। এটা রহস্যময় আগুন। উপদেষ্টা জানিয়েছেন, লুটপাট চিহ্নিত করতে কাজ করছিলাম। তখন পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পলকের (আইসিটি) জায়গায় আগুন দেখা গেছে। এখন বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র চলছে। পতিত স্বৈরাচারি সরকারের প্রধান পালিয়ে গেলেও তার দোসররা জাল বিস্তার করে রেখেছে। তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহীর সার্কিট হাউসে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ এসব তথ্য জানান। বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম কিস্তির অনুদানের চেক বিতরণ উপলক্ষে 'সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা ও কল্যাণে করণীয় শীর্ষক' মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত রাজশাহী জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও সারাদেশের সাংবাদিকদের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় তৈরি করা হবে বিশেষায়িত হাসপাতাল। একইসাথে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকরা মামলার শিকার হলে, তাদের আইনী সহায়তা প্রদানে তৈরি হবে ল'ইয়ার্স প্যানেলে। অনুদান পাওয়ার যোগ্য প্রত্যেক সাংবাদিকই পর্যায়ক্রমে পাবেন সরকারি অনুদান। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সারাদেশের ৩৫০ জন সাংবাদিকের জন্য সম্মানি বরাদ্দ ব্যবস্থা করেছিলাম। সেটার শেষদিকে আছি। বরিশাল ও সিলেট দিয়ে প্রথম কিস্তি শেষ হবে। বিভাগীয় শহর ও বৃহত্তর জেলাগুলোতে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আব্দুল আউয়াল ও সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সভাপতি গণেশ দাস। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহকারী মহাসচিব ও রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন। এম আব্দুল্লাহ বলেন, অন্য পেশার তুলনায় সাংবাদিকদের আয়ুর জায়গাটায় সমস্যা হচ্ছে। সাংবাদিকদের মৃত্যু হার বেশি, শেষ বয়সে অসহায় হয়ে যান। সন্তান যাদের কাছে নাই, ওষুধপত্র খাওয়ার মতো সংগতি নাই। সাংবাদিকদের বিষয়ে উপদেষ্টা জানার পর সাই দিলেন। প্রবীণ সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদানের নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করছি। অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করছি, আমি মাস ছয়েক দায়িত্বে থাকলে প্রবীণ সাংবাদিকদের জন্য ভাতা চালু করে যাব। কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি বলেন, চিকিৎসার জন্য কী করা যায়, পথ খুজছি। বিশেষভাবে ঢাকায় বড় হাসপাতালে চুক্তির আওতায় সাশ্রয় রেটে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করছি।

এম আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের নিজস্ব জায়গা বরাদ্দ নেওয়া যায় কিনা সেই, প্রাণান্তকর চেষ্টা করছি। যদি নিতে পারি, হাই রেস বিল্ডিং হবে। কল্যাণ ট্রাস্টের নিজস্ব অফিস হবে, হাসপাতাল হবে, ডরমিটরি থাকবে, ঢাকার বাইরের সাংবাদিকরা নামমাত্র খরচে যাতে থাকতে পারেন। এছাড়া ভবনের ভাড়া দিয়ে আর্থিক শক্তিশালী হবে। হাসপাতালে সাংবাদিকরা বিশেষ সুবিধায় চিকিৎসা পাবেন, সেটা চিন্তাভাবনায় রয়েছে। আইনী সহায়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর বাইরে চিন্তা আছে, সাংবাদিকরা যখন তখন মামলায় পড়ে বিপদে পড়েন। সাংবাদিকদের জন্য ল'ইয়ার্স প্যানেল তৈরি নিয়ে চিন্তা করছি। সাংবাদিকরা মামলায় পড়লে এই প্যানেল কাজ করবেন। এদিন রাজশাহী বিভাগের ২৬ জন সাংবাদিকের মাঝে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার অনুদান চেক প্রদান করা হয়। সাংবাদিকদের নাম চূড়ান্ত প্রসঙ্গে কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আব্দুল্লাহ বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় আবেদন বিবেচনা করা হয়নি। যারা ডাক পেয়েছেন, কল্পনাও করেননি। আগেও জানেন না। গতকাল (বুধবার) জানতে পেরেছেন। কোনো তদবিরও করতে হয়নি। তিনি বলেন, মৃত্যু জনিত কেসটাও ফেলে রাখা হয়েছে, দেওয়া হয়নি। প্রত্যাখ্যাত তালিকা থেকে তুলে নিয়ে আবেদন বরাদ্দ দিয়েছে। আমি যদি থাকি পাওয়ার যোগ্য সবাই অনুদান পাবেন। অনুষ্ঠানে রাজশাহী ও এই বিভাগের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মী ও সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।