2612

04/24/2024  বন্ধ হতে যেতে পারে ফেসবুক

 বন্ধ হতে যেতে পারে ফেসবুক

রাজ টাইমস ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:১৫

মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থা অ্যাপলের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে নেমেছে বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। এর ফলে তারা গভীর সমস্যার মধ্যে পড়ে গিয়েছে। এতে এমনকি প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের মতো সংবাদমাধ্যমগুলোতে বেশ কয়েকটি পূর্ণ পৃষ্ঠার বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে ফেসবুক। বিজ্ঞাপনগুলোর মাধ্যমে ফেসবুক মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থা অ্যাপলের গোপনীয়তার পরিবর্তন সংক্রান্ত নতুন নীতিমালাকে আক্রমণ করেছে। এই নীতিমালা ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করবে জানিয়ে তাদের দাবি, ‘আরও খারাপ যা হতে পারে তা হচ্ছে, এটি আমাদের চির পরিচিত ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করবে’।

ফেসবুকের সাম্প্রতিক এই হতাশা অবাক করার মতো কোন বিষয় নয়। এটি বহু বছর আগে শুরু হওয়া ধারাবাহিক ইভেন্টের চূড়ান্ত পরিণতি এবং আমরা দীর্ঘদিন ধরে এটির দিকে এগিয়ে চলেছি। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ বলেছিলেন, ‘সমস্ত বাঁধা ভেঙে দ্রুত এগিয়ে যান। যদি আপনি বাঁধা না ভাঙেন, তাহলে আপনি যথেষ্ট দ্রত এগিয়ে যেতে পারবেন না।’ গত কয়েক বছর ধরে ফেসবুকও এই নীতি মেনে চলেছে। যদিও এই নীতি ডিজাইনার এবং পরিচালকদের দিকনির্দেশনা দেয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিল, তবে এটি সংস্থার মূলনীতির একটি অত্যাবশ্যক অংশে পরিণত হয়েছিল।

এটি ঠিক, ফেসবুক দ্রুত অগ্রসর হয়েছে এবং এ পথে তারা অনেক বাঁধাই ভেঙে এসেছে। তবে এর পাশাপাশি, সংস্থাটি তার ব্যবহারকারীদের আস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো ভেঙে ফেলেছে। যাদের মধ্যে অনেকেই বুঝতে পেরেছিলেন যে ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুক ‘ফ্রি’ হলেও থাকাকালীন তারা পণ্য হয়ে অর্থ প্রদান করছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখার সুবিধার বিনিময়ে, একটি ব্যক্তিগতকৃত নিউজ ফিড রাখা এবং বিভিন্ন ভিডিও দেখতে বাধ্য হওয়ার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা অজান্তেই তাদের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি বিক্রি করে দিয়েছিল। ফেসবুক ব্যক্তিগত তথ্য ডেটা আকারে ব্যবহার করে যার উদ্দেশ্য প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন বিক্রি। বিষয়টি বুঝতে পারার সাথে সাথে অনেকে ‘ফেসবুক মুছতে’ প্রচার শুরু করেছিলেন। কিন্তু ফেসবুক তার ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকারীর ভিত্তিতে ‘নিউজ ফিড’ এর স্বীকৃতি দিতে মরিয়া ছিল। সর্বোপরি, সংস্থাটির বিরুদ্ধে একের পর এক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠলেও কোটি কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে।

ফেসবুকের জন্য সমস্যাটি হ’ল অ্যাপলের আপডেটটি ফেসবুক আসলে তাদের কতটা ট্র্যাক করছে সে সম্পর্কে প্রচুর ব্যবহারকারীকে জানিয়ে দিয়েছে এবং এর ফলে আরও অনেক ব্যবহারকারী ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে উৎসাহিত হতে পারেন। অ্যাপলের বিরুদ্ধে ফেসবুক এতটা কঠোর লড়াই করছে যে মনে হচ্ছে সংস্থাটি তার ব্যবসায়ের জন্য বিরাট আঘাতের প্রত্যাশা করছে। ফেসবুক দাবি করেছে যে, এই অ্যাপলের পরিবর্তনটি আপনার পছন্দসই রান্নার সাইট বা স্পোর্টস ব্লগগুলোর জন্য সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে বাধ্য করবে। এটি ইন্টারনেটকে আরও ব্যয়বহুল করে তুলবে এবং উচ্চমানের সামগ্রী বিনামূল্যে পেতে বাধা সৃষ্টি করবে। তবে বাস্তবতা হলো ইন্টারনেটে বিনামূল্যে সেবা পাওয়ার ধরাণা অনেক আগেই ভেঙে গেছে। এ কারণেই বেশিরভাগ অনলাইন প্রকাশনা ইতিমধ্যে সাবস্ক্রিপশন, পণ্য বিক্রি বা অনুরূপ উপায়ে অর্থ উপার্জনের অন্যান্য উপায়ে চলে গেছে। অন্য কথায়, ফেসবুক কেবল অ্যাপলের সাথে লড়াই করছে না, ভবিষ্যতের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

ফেসবুক ইন্টারনেট ব্যবসার নতুন ধারার দিকে মনোনিবেশ না করে অ্যাপলের গোপনীয়তা নীতি নিয়ে লড়াই করে মূল্যবান সময় এবং অর্থ নষ্ট করছে।তারা এমন কিছুর বিরুদ্ধে লড়ছে যার উপরে তাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই এবং অ্যাপলের পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা কম। ফলে ব্যবসায়ী নীতিতে আমূল পরিবর্তন না আনলে ফেসবুক অচিরেই আরও বড় সমস্যার মুখোমুখি হবে যার ফলে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সূত্র: আইএনসি।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]