কত কয়েকদিন ধরে চলা গুজবই যেন শেষমেস সত্যি হল। না ফেরার দেশে দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা আবদুল কাদির।

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা ২০ মিনিটে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ... রাজিউন)।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। এ ছাড়া তিনি রেখে গেছেন নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী।

এই অভিনেতার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আবদুল কাদেরের পুত্রবধূ জাহিদা ইসলাম জেমি।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, অসুস্থতা নিয়ে চিকিৎসার জন্য সম্প্রতি ভারতে গিয়েছিলেন এ অভিনেতা। সেখানে গিয়ে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। গত ২০ ডিসেম্বর ভারত থেকে দেশে ফেরেন তিনি।

শারীরিক অবস্থা সংকটাপূর্ণ হওয়ায় দেশে ফেরার পরই রাজধানীর একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে করোনার টেস্ট করা হলে গত ২১ ডিসেম্বর তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

এই অভিনেতার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বদি খ্যাত এই অভিনেতার জন্ম ১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি থানার সোনারং গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর তিনি সিঙ্গাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে অধ্যাপনায় নিযুক্ত হন। পরে জুতা তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান বাটায় যোগ দেন ১৯৭৯ সালে; সেখানে ছিলেন ৩৫ বছর।

প্রয়াত এই অভিনেতার অভিনীত মঞ্চনাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে– ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘এখনও ক্রীতদাস’, ‘তোমরাই, স্পর্ধা’, ‘দুই বোন’, ‘মেরাজ ফকিরের মা’।

অভিনয় করেছেন তিনি তিন হাজারের মতো নাটকে। বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত শিল্পী তিনি।

মূলত এই অভিনেতা প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের বহু জনপ্রিয় নাটকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। তিনি হুমায়ূন আহমদের ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে বদিভাই চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান।

২০০৪ সালে আবদুল কাদের অভিনয় করেন ‘রং নাম্বার’ চলচ্চিত্রে।

প্রাপ্তির ঝুলিতে জমেছে অনেক কিছুই কাদেরের। দীর্ঘ অভিনয় জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে টেনাশিনাস পদক, মহানগরী সাংস্কৃতিক ফোরাম পদক, অগ্রগামী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী পদক, জাদুকর পিসি সরকার পদক, টেলিভিশন দর্শক ফোরাম অ্যাওয়ার্ড, মহানগরী অ্যাওয়ার্ডসহ বেশ কিছু পদকও পেয়েছেন আবদুল কাদের।

• এসএইচ