26937

04/28/2025 ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের পর কার্গো সক্ষমতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের পর কার্গো সক্ষমতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের

রাজটাইমস ডেস্ক

১৯ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৪৯

ভারত হঠাৎ করে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ার পর বাংলাদেশ দ্রুত বিমানের কার্গো অবকাঠামো বৃদ্ধি করছে। গুরুত্বপূর্ণ পণ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাকের নিরবিচ্ছিন্ন রপ্তানি নিশ্চিত করতে সক্ষমতা বৃদ্ধি, জনবল নিয়োগ ও পরিবহণ খরচ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এবং একমাত্র গ্রাউন্ড-হ্যান্ডলিং এজেন্ট বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নিরবচ্ছিন্ন কার্গো কার্যক্রম সহজতর করতে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া শুক্রবার বলেছেন, আমরা (বেবিচক ও বিমান বাংলাদেশ) বিমানের কার্গোকে আরও সাশ্রয়ী করার জন্য বর্তমান বেসামরিক বিমান চলাচল ও গ্রাউন্ড-হ্যান্ডলিং শুল্ক সংশোধন করতে একসঙ্গে কাজ করছি।

তিনি বলেন, কার্গো কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পর্কিত ফি ও খরচ সহজতর ও হ্রাস করতে সরকার বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সব অংশীদারদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠনের পরিকল্পনা করছে।

মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, বাহ্যিক বাধাবিঘ্নের পরেও যেন বিমানে পণ্য পরিবহণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকে, সেজন্য আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা খুব শিগগিরই হ্রাসকৃত হ্যান্ডলিং চার্জ ঘোষণার আশা করছি।

বেবিচক ইতোমধ্যেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো টার্মিনালে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ করেছে। এছাড়াও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৭ এপ্রিল পূর্ণাঙ্গ কার্গো কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এরপর শিগগিরই চট্টগ্রাম বিমানবন্দরেও তা শুরু হবে। কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স দ্রুত করার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার বেবিচক চেয়ারম্যান কার্গো কার্যক্রম চালুর প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে সিলেট বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন। ২৭ এপ্রিলের মধ্যে টার্মিনালের প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।

সিলেটের অত্যাধুনিক কার্গো টার্মিনাল অত্যন্ত ক্ষমতা সম্পন্ন উল্লেখ করে মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর আগে আমাদের বিদ্যমান অবকাঠামো শিগগিরই দুই থেকে তিনগুণ বেশি কার্গো পরিচালনা করবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. সাফিকুর রহমান জরুরি পদক্ষেপের কথা জানান।

তিনি বলেন, ভারতের বন্দর হয়ে যেসব পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে না, সেসব পণ্য পরিবহনের চাপ মোকাবেলায় নতুন কার্গো কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে।

বিমান বাংলাদেশের কার্গো পরিচালক শাকিল মিরাজ বলেন, আমাদের বিমান সংস্থা সিলেটে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং পরিষেবা প্রদানের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেখানে গ্যালিস্টেয়ার এভিয়েশনের এয়ারবাস এ৩৩০-৩০০ পণ্যবাহী বিমান ২৭ এপ্রিল স্পেনে ৬০ টন তৈরি পোশাক পরিবহন করবে।

তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই ঢাকা থেকে সিলেটে গ্রাউন্ড-হ্যান্ডলিং সরঞ্জাম স্থানান্তর করেছি এবং উদ্বোধনী কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। বিমান বাংলাদেশ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৭শ’ জনেরও বেশি কর্মীর বর্তমান দলের পরিপূরক হিসেবে ৪শ’ জন অতিরিক্ত গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার নিয়োগ করছে।

গত সপ্তাহে বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের জন্য সম্ভাব্য বিকল্পগুলো চিহ্নিত করতে এবং ক্ষতি কমাতে শিল্প সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন ব্যবসা-বান্ধব বাস্তুতন্ত্র তৈরিতে সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

তিনি বলেছেন, বাণিজ্য সুবিধা ও বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিমান কার্গো অবকাঠামো একটি মূল স্তম্ভ।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের বহুল প্রত্যাশিত তৃতীয় টার্মিনালটির কাজ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী, আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন এই টার্মিনাল আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোর ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনবে এবং বাংলাদেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করবে।

পুরোপুরি চালু হলে তৃতীয় টার্মিনাল বার্ষিক রপ্তানি পণ্য পরিবহনের ক্ষমতা ২ লাখ থেকে ৫ লাখ ৪৬ হাজার টনে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যার মধ্যে ৩৬ হাজার বর্গমিটারের একটি নিবেদিত কার্গো জোন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বাসস’কে বলেন, নতুন টার্মিনালে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা ও বর্ধিত স্টোরেজ আমাদের আরো স্বাধীন ও দক্ষতার সঙ্গে পণ্য পরিবহন করতে সাহায্য করবে। যার ফলে রাজস্ব উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফা)-এর সভাপতি কবির আহমেদ তৃতীয় টার্মিনালের প্রশংসা করে এটিকে ‘দ্য ফাইনেস্ট অব ইটস কাইন্ড’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, এটি সিঙ্গাপুরের বিমানবন্দর অবকাঠামোর সঙ্গে তুলনীয়। যার মধ্যে আধুনিক স্ক্যানিং, পরীক্ষা ও তাপমাত্রা-নিয়ন্ত্রিত স্টোরেজ সুবিধা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]