28695

09/13/2025 ফেক আইডি নিয়ন্ত্রণে রাকসুর নারী প্রার্থীদের ৭ দফা দাবি

ফেক আইডি নিয়ন্ত্রণে রাকসুর নারী প্রার্থীদের ৭ দফা দাবি

রাবি প্রতিনিধি:

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৫৫

সাইবার সুরক্ষায় বট/ফেক আইডি নিয়ন্ত্রণ ও গ্রুপ অ্যাক্সেস যাচাইসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসুর) নারী প্রার্থীরা।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা।

তাদের দাবিগুলো হলো-

১. অফিশিয়াল সুরক্ষা নীতি প্রণয়ন:

সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিতে পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা নীতি প্রণয়ন করতে হবে। যেখানে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অনলাইন আচরণবিধি, তথ্য যাচাই প্রক্রিয়া, অপরাধ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে। বিশেষত, নারী শিক্ষার্থীদের সাইবার নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষায় আলাদা ধারা সংযোজন করতে হবে।

২. নারীবান্ধব অবকাঠামো ও সুরক্ষা:

ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত আলো, সিসিটিভি, নিরাপত্তা টহল জোরদারের পাশাপাশি নারী পুরুষ নির্বিশেষে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ বোধ করানোর পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

৩. সাইবার সেফটি ও জেন্ডার রেসপন্স সেল:

নারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক, আইটি বিশেষজ্ঞ ও মনোবিজ্ঞানী সমন্বয়ে, দিনরাত ২৪ ঘন্টা কার্যকর একটি বিশেষ সেল গঠন করতে হবে। যা অনলাইন হয়রানি, ভুয়া তথ্য এবং সাইবার অপরাধের অভিযোগ দ্রুত তদন্ত ও শাস্তি নিশ্চিত করবে। ব্যক্তিগত পরিচয় প্রকাশ না করে অভিযোগ জানানোর সুযোগ এবং ভুক্তভোগীর পরিচয় সুরক্ষিত রাখতে বাধ্য থাকবে।

৪. বট/ফেক আইডি নিয়ন্ত্রণ ও গ্রুপ অ্যাক্সেস যাচাই:

বিশ্ববিদ্যালয়-সম্পর্কিত সব অফিসিয়াল ও স্বীকৃত গ্রুপ/পেজে সদস্যপদ দেওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড বা প্রাসঙ্গিক ডকুমেন্ট যাচাই বাধ্যতামূলক করতে হবে। ইতোমধ্যে থাকা বট, ফেক বা ভুয়া আইডি শনাক্ত ও অপসারণের জন্য নিয়মিত মনিটরিং চালু করতে হবে। গ্রুপ অ্যাডমিনদের জন্য যাচাই-বাছাই প্রটোকল নির্ধারণ করতে হবে, যেমন জয়েন রিকোয়েস্টে ডকুমেন্ট চেক, সন্দেহজনক প্রোফাইল রিভিউ, এবং নিয়মিত সদস্যপদ অডিট। শুধুমাত্র যাচাইকৃত সদস্যদের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করতে হবে।

৫. গোপনীয়তা সুরক্ষা নীতি:

ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি ও ভিডিও অনুমতি ছাড়া প্রকাশ বা বিকৃত করার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবে, কোনো পরিস্থিতিতেই শিক্ষার্থীদের উপর গণনজরদারি কিংবা মনিটরিং টুল বা সফটওয়্যার ব্যবহার করা যাবে না।

৬. ডিজিটাল লিটারেসি ও সেফটি প্রশিক্ষণ:

সভ্য ও মর্যাদাপূর্ণ সাইবার সোসাইটির বিকাশে ডিজিটাল মিডিয়া ব্যবহার, তথ্য যাচাই, সাইবার নিরাপত্তা এবং হয়রানি প্রতিরোধ বিষয়ে কর্মশালা আয়োজন। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রযুক্তি সক্ষমতা ও সাইবার সাক্ষরতা বাড়াতে বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করা। যেমন: উন্মুক্ত ও স্বল্পমেয়াদী বিশেষ সার্টিফিকেট কোর্স চালু করা যেতে পারে।

৭. ভেরিফায়েড অফিসিয়াল চ্যানেল তথ্যের নির্বিঘ্ন ও পেশাদার প্রবাহ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ, হল, ও প্রশাসনিক ইউনিটের জন্য ভেরিফায়েড সোশ্যাল মিডিয়া পেজ/গ্রুপ চালু করা।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে অংশীজনদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সুস্পষ্ট কোনো সাইবার নীতিমালা নাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে খোলা বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ, পেজ ও মেসেঞ্জার চ্যাটে বিভ্রান্তিকর তথ্য, গুজব, চরিত্রহনন এবং ব্যক্তিগত আক্রমণমূলক তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, নারী শিক্ষার্থীদের ছবি, ভিডিও ও ব্যক্তিগত তথ্য অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বা বিকৃত করে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, পোস্ট ও কমেন্টে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, অপমানজনক ও হেয়প্রতিপন্নকারী ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সাইবার নিপীড়নের একাধিক অভিযোগ দেয়া হলেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এর উপর, শিক্ষার্থীদের ফোন নাম্বারসহ ভোটার তালিকার মতো অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যাচ্ছে। যা আমাদের আরও অনিরাপদ করে তুলছে।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এসব উদ্বেগের বিষয়ে বারবার জানানোর পরেও এখনো তারা নির্বিকার। রাকসু নির্বাচন কেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে সেল গঠন করছে সেটার কার্যক্রম এখন পর্যন্ত আমরা দেখতে পাই নি।

বিগত কয়েকদিনে নারী ও নবীন শিক্ষার্থীদের সাথে উপর্যুপরি এধরণের ঘটনা ঘটতে থাকলেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতির পাশাপাশি স্পষ্ট সাইবার সুরক্ষা নীতিমালা না থাকায় পরিস্থিতি দিনদিন আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]