12/19/2025 রাজশাহীতে গুঁড়িয়ে দিল আওয়ামী লীগের অফিস
মহিব্বুল আরেফিন
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:২১
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গুঁড়িয়ে দিয়েছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের অফিস। বৃহস্পতিবার এস্কেভেটর দিয়ে রাতভর ভবনটি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।
ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর শোনার পরই বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে ক্যাম্পাসে। পরে কয়েক হাজার শিক্ষার্থথী মিছিল নিয়ে রাজশাহী শহরে আসে। এতে নেতৃত্ব দেন রাকসু নেতৃবৃন্দ। শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও নেমে আসেন রাস্তায়। মধ্যরাতে সাহেববাজার এলাকা মিছিলে মুখর হয়ে ওঠে। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা রাত সাড়ে ১২টার দিকে এস্কেভেটর দিয়ে নগরীর কুমারপাড়া এলাকায় মহানগর আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙা শুরু করে। এক পর্যায়ে ভোর ৪টার দিকে আ. লীগ অফিস গুঁড়িয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়। এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মহানগর আওয়ামী লীগের এই অফিসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছিল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
এদিকে,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের এই কার্যালয়টি গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে একটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে। রাজশাহী মহানগর এনসিপির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিয়েছি। সিটি করপোরেশনকে বলা হয়েছে সেখান থেকে ধ্বসংস্তুপ সরিয়ে নিতে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুর থেকে হাদির মৃত্যুর খবর পৌঁছানোর পর জুলাই-৩৬ মঞ্চ, এনএসিপি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়ে হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে স্লোগান দেয়। পরে তারা মিছিল নিয়ে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে যায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে আসা শিক্ষার্থীরাও এ সময় তাদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে রাস্তার ওপর আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। এ সময় ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘হাদি ভাই মরলো কেন, ইন্টেরিম জবাব দে’, ‘রুখে দাও জনগণ, ভারতীয় আগ্রাসন’- স্লোগান দেয় আন্দোলনকারীরা।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই দেখা যায়, বিভিন্ন মানুষজন কুমারপাড়ায় এসে ধ্বংসস্তূপ থেকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রড আলাদা করছেন। পরে সেই রডগুলো ভ্যান ও রিকশায় করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সকাল থেকে বেশ কয়েকটি গ্রুপকে এভাবে রড বাছাই করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এমনকি অনেকে ভবনের কলামগুলো হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ভেতর থেকে রড বের করে নিচ্ছেন। সেখানে উপস্থিত সাব্বির হোসেন নামে একজন বলেন, 'রাতে এক্সকাভেটর দিয়ে ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর ধ্বংসস্তূপের কারণে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনের রাস্তাটি বন্ধ হয়ে গেছে। চারদিকে স্তূপ ছড়িয়ে পড়ায় যাতায়াত করা যাচ্ছে না। তাই রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য প্রথমে রডগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এরপর ইট ও সুরকি সরানো হবে।' আরেকজন জানান, অন্যরা রড নিয়ে যাচ্ছে শুনে তিনিও এখানে এসেছেন।