'৩২ বছর বয়সের হাদির পাশে দাঁড়ানোর মতো বর্তমানে এই বাংলাদেশে কেউ নেই। সম্ভবত বাংলাদেশের এমন কোনো মানুষ নাই যে বাংলাদেশের সকল পর্যায়ের মানুষের ভালোবাসায় শিক্ত হয়ে গিয়েছিল।' এমন কথা বলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব।

সোমবার (২২ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাবির সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত 'বুদ্ধিবৃত্তিক, সাংস্কৃতিক ও ইনসাফের বাংলাদেশ বিনির্মাণের লড়াইয়ে পথপ্রদর্শক একজন হাদি' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

উপাচার্য আরও বলেন, 'ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে নিজের সাথেই নিজেরই লড়াই করতে হবে৷ ইনসাফ মানে এই না যে আমি আমার বন্ধুর জন্য কিছু করবো, ইনসাফ মানে এই যে আমি মানুষের অধিকার কীভাবে রক্ষা করবো। মানুষের অধিকার রক্ষা করতে গিয়ে এমনভাবে মানুষের অধিকার রক্ষা করতে হবে, যে তোমার ক্ষতি করার সম্ভাবনা রয়েছে।'

উপাচার্য জানান সুন্দর দেশ গড়তে গেলে হিংসা বিদ্বেষ করে দেশ এগিয়ে নেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, 'যারা হাদীর অনুসারী বলে দাবি করে তাদের মধ্যেই ইনসাফ নেই, যারা অনুসারী দাবি করে তারা আছে দখলদারিত্ব, ভাগবাটোয়ারার মধ্যে। আমরা হাদীর জন্য দোয়া করি, এবং আমি খুব করে চাই যেন হাদীর কিছু গুণাবলি বর্তমান তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বর্তায়৷'

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন , 'আমরা হাদির দর্শন প্রত্যক্ষ করেছি। তিনি ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক। দলীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি ইনসাফভিত্তিক সংগ্রাম প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। প্রচলিত সামাজিক ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে তিনি একটি সুন্দর ও ন্যায্য সমাজব্যবস্থার স্বপ্ন দেখতেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা হাদীকে শুধু স্মরণই করব না, বরং অনুস্মরণ করব যুগ যুগান্তরে। দেশকে নিয়ে তাঁর ভালোবাসা ও চিন্তাভাবনা ছিল অসাধারণ। অল্প বয়সেই তিনি কীভাবে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া যায়—সে বিষয়ে গভীর উপলব্ধি অর্জন করেছিলেন। ইতিহাস সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান ছিল বিস্তৃত, যা অনেক প্রবীণ রাজনীতিবিদের মধ্যেও দেখা যায় না। '

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রাকসু'র সহ-সভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, 'এই দেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে আমরা নতুন করে লক্ষ্য হাদি তৈরি হবো। তিনি বলেন, যারা আজকে ভয় দেখিয়ে শাসন করতে চায়, যে শাসন ফ্যাসিবাদ কায়েমের প্রচেষ্টা চালায়, যে শাসন ভারতীয় আধিপত্যবাদ কায়েম করতে চায়, আমরা তার মুখ চেপে ধরবো ইনশাআল্লাহ।'

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার এবং ছাত্রউপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আমিরুল ইসলাম কনক।