4443

04/20/2024 বগুড়ায় মেস খালি করার নির্দেশ পুলিশের, বিপাকে হাজারো শিক্ষার্থী

বগুড়ায় মেস খালি করার নির্দেশ পুলিশের, বিপাকে হাজারো শিক্ষার্থী

রাজটাইমস ডেস্ক

৮ এপ্রিল ২০২১ ০৩:৪৫

করোনা সংক্রমণ রোধে বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের আশপাশসহ শহরের সব মেস, ছাত্রাবাস, ছাত্রীনিবাস ও আবাসিক হোস্টেল খালি করার নির্দেশ দিয়েছে জেলা পুলিশ। আজ বুধবার পুলিশের পক্ষ থেকে ছাত্রাবাস ও আবাসিক হোস্টেল খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে পুলিশের এমন নির্দেশ ‘অমানবিক’ বলছেন শিক্ষার্থীরা।
 
শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারের জারি করা নির্দেশনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কথা উল্লেখ করা হলেও মেস বন্ধের কোনো নির্দেশনা ছিল না। শহরজুড়েই যানজটের চিত্র। রাস্তা, বাজারঘাটসহ সবখানেই মানুষ অবাধ চলাচল করছে। অথচ পুলিশ অত্যুৎসাহী হয়ে মেস বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
 
আজ বুধবার পুলিশের পক্ষ থেকে ছাত্রাবাস ও আবাসিক হোস্টেল খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে পুলিশের এমন নির্দেশ ‘অমানবিক’ বলছেন শিক্ষার্থীরা।
 
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসকে ঘিরে শহরের কামারগাড়ি, জহুরুল নগর, পুরান বগুড়া, সেউজগাড়ি, জামিলনগর, সবুজবাগসহ আশপাশের এলাকায় বাসাবাড়ি ভাড়া নিয়ে গড়ে উঠেছে প্রায় ৫০০ ছাত্রাবাস ও বেসরকারি হোস্টেল। এ ছাড়া আজিজুল হক কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শাখা, সরকারি শাহ সুলতান কলেজ, সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ, বগুড়া সরকারি কলেজ, সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, সরকারি মুস্তাফাবিয়া আলিয়া মাদ্রাসা, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘিরে শহরের ফুলবাড়ি, বৃন্দাবনপাড়া, সুত্রাপুর, খান্দার, ঠনঠনিয়া, রহমাননগর, মালতীনগর, লতিফপুর কলোনি, হাকিরমোড়, নামাজগড়, নুরানীমোড়, কাটনারপাড়া, নারুলী, চেলোপাড়া, বউবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় আরও হাজারখানেক মেস গড়ে উঠেছে। আজ শহরের জহুরুলনগর, কামারগাড়ি, পুরান বগুড়া, সেউজগাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের মেস খালি করার নির্দেশ দেয়।
 
 
সরকারি আজিজুল হক কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী গোলাম মোস্তফা বলেন, অনেক শিক্ষার্থী বাসাবাড়িতে টিউশনি পড়িয়ে, খণ্ডকালীন নানা কাজ করে পড়াশোনার খরচ জোগান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও এসব শিক্ষার্থী মেসে থেকে পড়াশোনার খরচ জোগাচ্ছেন। অনেকের উপার্জনে সংসার চলে। মেস বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন।
 
রিয়াদ চৌধুরী নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘বাস, ট্রেনসহ গণপরিবহন বন্ধের মধ্যে হঠাৎ করে মেস খালি করার নির্দেশ দেওয়ায় চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি।’
 
সরকারি আজিজুল হক কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সিরাজ উদ্দিন বলেন, গত বছর ১৯ মার্চ করোনার শুরুর দিকে প্রশাসনের নির্দেশে মেস ছেড়ে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে অবস্থান করেন। করোনার মধ্যে টানা প্রায় আট মাস বাড়িতে অবস্থান করেও মেসভাড়া টানতে হয়েছে। সময়মতো ভাড়া শোধ দিতে না পারায় অনেক মেসমালিক শিক্ষার্থীদের চেয়ার, পড়ার টেবিল, খাট, কাপড়চোপড় বিক্রি করে ভাড়া উশুল করে নিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করেছেন, আটকে রেখে ভাড়া আদায় করেছেন। প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। এবার মেস বন্ধ করতে হলে অবশ্যই প্রশাসনকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে বন্ধ করতে হবে। মেস বন্ধ করতে হলে আগে ভাড়া মওকুফের ঘোষণা দিতে হবে। বিদ্যুৎ, গ্যাস, ওয়াইফাই, ডিশ লাইনের বিল শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে চাপানো যাবে না। কারণ, মেস ছেড়ে বাড়ি যেতে চাইলে মালিকদের আগাম দুই মাসের ভাড়া শোধ করতে হবে। সিংহভাগ শিক্ষার্থীর পক্ষে ভাড়া শোধ করা সম্ভব নয়।
 
জানতে চাইলে বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মেসে অবস্থান করে শিক্ষার্থীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়ানোর শঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে পরিবারে করোনা ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে শহরের ছাত্রাবাস খালি করার জন্য শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
 
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বলে শিক্ষার্থীরাও মানবেন না, এমনটা হতে পারে না। শহরে মানুষের ভিড় আছে বলে শিক্ষার্থীরা মেসে থেকে করোনা ছড়াবেন, এমনটা হতে পারে না।
 
 
 
 
 
 
সূত্র: প্রথম আলো
প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]