765

05/21/2024 পুকুরে বিষক্রিয়ায় মারা যাচ্ছে টনে টনে মাছ

পুকুরে বিষক্রিয়ায় মারা যাচ্ছে টনে টনে মাছ

রাজ টাইমস ডেস্ক

৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:০৩

 

রাজশাহীতে বৈরী আবহওয়ায় পুকুরে বিষক্রিয়া তৈরি হয়ে অক্সিজেন স্বল্পতায় মারা যাচ্ছে মাছ। গেলো দুদিনে শুধু পবা উপজেলাতেই প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ মেট্রিক টন মাছ বিষক্রিয়ায় মারা যায়।

রোদ আর ভ্যাপসা গরমের মধ্যে হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টি। এতেই অনেকের চাষকৃত পুকুরের সব মাছই মরে ভেসে উঠেছে। এতে হঠাৎ বড় ধরনের এমন ক্ষতিতে বিপাকে পড়েছেন মাছ চাষিরা।

এতে করে মাছের বাজারে কমে গেছে দাম। এদিন ব্যবসায়ীরা ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের মাছ ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করে। প্রতি কেজি সিলভার কার্প বিক্রি হয় ১০ টাকা থকে ২০ টাকা কেজি দরে।

রাজশাহী জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, মঙ্গলবার ও বুধবার পবা উপজেলাতেই মাছ ব্যবসায়ীদের প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পবা ছাড়াও প্রায় সব উপজেলাতেই কম-বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোহনপুর উপজেলা কেশরহাটে বুধবার খুব সকালে অন্যান্য দিনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মাছ নিয়ে চাষী হাজির হয়েছেন। অতিরিক্ত মাছ আমদানির কারণে আড়ৎদাররা মাছ বেচা-কেনা বন্ধ করে দেয়। এদিন কেশরহাট বাজারে অনেক মাছ পচে নষ্ট হওয়ার কারণে অনেক ব্যবসায়ী মাছ ফেলে দেন। এছাড়া অতিরিক্ত মাছ আমদানির কারণে রাজশাহী-নওগাঁ মহসড়কের কেশরহাটের বড়ব্রীজ এলাকায় ১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে যানজট তৈরি হয়।

দুর্গাপুর উপজেলার মাছ চাষি নুরুল ইসলাম নুরু জানান, বৃষ্টির পরই তিনি পুকুরে গিয়ে মাছ মরে ভেসে উঠতে দেখেন। তার চোখের সামনেই লাখ টাকার মাছ মরে গেছে। এক দিনেই তার বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।

কেশরহাট মাছ বাজারের আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন বলেন, বুধবার বাজারে হঠাৎ অতিরিক্ত মাছের আমদানি হয়। প্রায় মাছ পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ঢাকায় পাঠানোর উপযোগী ছিল না। যার কারণে ব্যবসায়ীরা ঠিকা দরে মাছ বিক্রি করেন। এছাড়া এদিন মোহনপুর ছাড়াও পুঠিয়া, দুর্গাপুর, পবা, বাগমারা থেকেও মাছ নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা।

বাগমারা উপজেলার মাদারীগঞ্জ, ভবানীগঞ্জ, হাটগাঙ্গোপাড়াসহ বিভিন্ন মাছের আড়ৎগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় ছিল। বাগমারার বাজারগুলোতেও ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের রুই, কাতলা ও সিলভার মাছ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

বাগমারা উপজেলার বালানগর গ্রামের মৎসচাষী আব্দুল মতিন জানান, বুধবার সকালে জানতে পারেন তার পুকুরের মরা মাছ ভাসছে। বিষয়টি জেনে পুকুরে গেলে ততক্ষণে অনেক মাছ মরে ভেসে উঠে। পরে মাছগুলো কিছু অংশ তুলে বাজারে নেন। বাকি মাছ পুকুরে পচে গেছে।

একইভাবে উপজেলার নন্দনপুর গ্রামের বাবুল হোসেন জানান, তার পুকুরের অর্ধেকের বেশি মাছ মরে গেছে। বাকি কিছু মাছ পকুরে রয়েছে। এতে করে তার প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

বাগমারা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন জানান, দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে পুকুরগুলোতে অক্সিজেনের সল্পতা দেখা দেয়। পুকুরে অতিরিক্ত মাছ থাকলে ওই সব পুকুরগুলোর মাছ মরার সম্ভাবনা বেশি। তবে যাদের পুকুরে পরিমিত মাছ আছে, তাদের ক্ষতি কম হবে।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অলক কুমার সাহা জানান, মঙ্গলবার ও বুধবার রাজশাহীর আবহওয়া খারাপ ছিল। আর রাজশাহীর অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা পুকুরে অতিরিক্ত খাবার দিয়ে মাছ চাষ করেন। যার কারণে পুকুরগুলোতে অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দেয়। আর এতেই মাছ মারা গেছে।

কাফি/১

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]