8598

03/28/2024 হারিয়ে গেছে ধানের গোলা

হারিয়ে গেছে ধানের গোলা

রাজ টাইমস

৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১১:১০

গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধির প্রতীক ধানের গোলা। আগে এটি শোভা পেত অবস্থাসম্পন্ন কৃষকের বাড়িতে। তারা মূলত ধান সংরক্ষণ করত এই গোলায়। ধান ছাড়াও রাখা হতো চাল, গম ভুট্টাসহ নানা খাদ্যশস্য।

একসময় সমাজের নেতৃত্ব নির্ভর করত ধানের গোলার ওপর। যার বেশি ধানের গোলা ছিল সে-ই সমৃদ্ধশালী; এমনকি ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিতেও এক পক্ষ আরেক পক্ষের ধানের গোলার খবর নিত।

ধানের গোলা বানানো হতো মূলত বাঁশ দিয়ে। সহযোগী উপকরণ হিসেবে বেত, কাদাও প্রয়োজন হতো।

ধানের গোলা বানানোর শুরুতে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে গোল আকৃতির কাঠামো তৈরি করা হতো। কাঠামো বানানোর পর এঁটেল মাটির কাদা দিয়ে ভেতরে ও বাইরে আস্তরণ লাগানো হতো। ওপরে দেওয়া হতো টিন বা খড়ের চালা। এভাবেই ধানের গোলা তৈরি করা হতো।

বড় গোলায় ধান রাখা যেত প্রায় ৪০ থেকে ৫০ মণ। ছোট গোলায় ২০ থেকে ৩০ মণ। গোলায় ধান রাখার পর এর মুখ মাটি দিয়ে লেপে বন্ধ করে দিতে হতো, যাতে ইঁদুর ঢুকতে না পারে।

ধানের গোলা বসানো হতো উঁচুতে। ওপরের দিকে থাকত প্রবেশপথ। বর্ষার পানি গোলায় ঢুকতে পারত না। মই বেয়ে গোলায় উঠে ধান রাখতে হতো।

ধানের মৌসুমে ধান কেটে শুকিয়ে গোলাজাত করা হতো। প্রয়োজনের সময় গোলা থেকে ধান বের করে রোদে শুকিয়ে ভাঙানো হতো। এই চাল আবার গোলায় সংরক্ষণ করা হতো। গোলার নিচের ফাঁকা জায়গায় মাচা করে রাখা যেত ছাগল ও হাঁস-মুরগি।

কয়েক দশক আগেও ধানের গোলা দেখা গেছে। এখন আর খুব একটা দেখা মেলে না। গোলার পরিবর্তে ড্রাম বা বস্তার ব্যবহার হয় এখন। ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা আজ বিলুপ্তির পথে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]