04/30/2025 ঠা-ঠা গরমে ইফতারে প্রাণ জুড়াচ্ছে মাঠা আর ঘোল
নিজস্ব প্রতিবেদক
৭ এপ্রিল ২০২২ ০১:১২
পবিত্র মাহে রমজানের আগে থেকেই রাজশাহীতে থেকেই বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। আর তিব্র গরমে রোজাদারদের প্রাণ যেন ওষ্ঠাগত। ঠা-ঠা এই রোদ গরমে ইফতারের সময় ভাজাপোড়া খাবারের চেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাঠা আর ঘোল। বরফ কুঁচি দেয়া এক গ্লাস মাঠা-ঘোল যেনো মুহূর্তেই স্বর্গীয় তৃপ্তি এনে দিচ্ছে রোজাদারদের মনে।
মাঠা আর ঘোল দুগ্ধজাতীয় একটি পানীয়। যা মানব শরীরের জন্য সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর। সারা বছরই রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন বাজার-ঘাটে ঘোল এবং মাঠা পাওয়া যায়। তবে বরাবরই রমজান উপলক্ষে এ পানীয়র চাহিদা দ্বিগুণ বেড়ে ডায়। যার ব্যতিক্রম এবারও হয়নি। দোকান এবং ভ্রাম্যমাণ ঘোষদের দোকানে ক্রেতাদের ভীড় এখন তুঙ্গে। রোদ আর রোজার ক্লান্তি দূর করতে রোজাদাররা ইফতারে বেছে নিয়েছেন দুগ্ধজাতীয় পানীয় মাঠা আর ঘোল। দুধ থেকে ঘোল আর মাঠা তৈরি হলেও মাঠাতে বিশেষ কিছু আলাদা উপকরণ ব্যবহার করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে দুধ, চিনি, লবণ, আমন্ড, পেস্তাবাদাম বাটা, পাতিলেবু। সহজ কথায় মাঠা তৈরি করতে দুধ ভালো করে ঘুটে ননি (মাখন) তুলে নিয়ে প্রয়োজনমত অন্যান্য উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়। পরে বরফ কুচির সঙ্গে তা ইফতারে পরিবেশন করা হয় ।
রাজশাহী নগরীর কুমারপাড়া এলাকার ঘোষ সম্প্রদায়ে এই ঘোল তৈরির জন্য সুখ্যাতি রয়েছে। একই সাথে তাদের আদিকাল থেকে মাঠার প্রচলন রয়েছে। পবিত্র রমজান মাসের শুরু থেকে প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে নগরীর সাহেব বাজার ন্যাশনাল ব্যাংকের সামনে, জিরোপয়েন্ট ও কুমারপাড়া এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে ঘোল ও মাঠা। তবে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে স্পেশাল ঘোল বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে রাজশাহী মহানগরীতে বিভিন্ন ফাস্টফুড, মিষ্টির দোকান, কনফেকশনারিতে এখন মাঠা পাওয়া যাচ্ছে। ঘোল ৬০ টাকা লিটার ও মাঠা ৭০-৮০ টাকা লিটার বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি গ্লাস ঘোল ১০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। ইফতারে জন্য মঙ্গলবার দুপুরে ঘোল ও মাঠা কিনতে আসা কুমারপাড়া এলাকার জামিল হোসেন বলেন, রোজা থাকার পরে আমাদের শরীরে পানির স্বল্পতা দেখা দেয় ঘোল ও মাঠা পানে অনেকটাই ভালো লাগে। আর পরিবারের সবাই অন্য সময় না খেলেও এ রমজানে ঘোল ও মাঠা পান করেন।
মহানগরীর কুমারপাড়া ঘোষপাড়ার মৃত অনিল কুমার ঘোষের ছেলে গহুর ঘোষ জানান, তার বাবা মারা যাওয়ার পরে থেকেই তিনি এই ঘোল বিক্রি করেন। আগে তার বাবা মৃত অনিল কুমার ঘোষ ঘোলের ব্যবসা করতেন এবং তিনি শহরে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছিলেন। বাবার হাত ধরেই তিনি ঘোল বানানো শিখেছেন। বাবার মৃত্যুর পর থেকে তিনি ঘোলের ব্যবসা ধরে রেখেছেন। প্রায় ৩০ বছর থেকে একই স্থানে ঘোল বিক্রি করে আসছেন তিনি।