05/02/2025 পুঁজিবাজারে আসছে বিকাশ !
ডেস্ক নিউজ
১ আগস্ট ২০২৩ ০৫:৩৮
ডিজিটাল ব্যাংক গঠনে আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ব্র্যাক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি এমএফএস প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশ’। এতে প্রয়োজনীয় অর্থ জোগান দেবে মূল প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ব্যাংক। ইতোমধ্যে প্রস্তাবিত এ প্রকল্প ‘বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’তে বিনিয়োগ করার আগ্রহের কথা বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে ব্যাংকটি।
পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। গতকাল সোমবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ওয়েবসাইটে এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় বড় ধরনের কোনো বিনিয়োগ বা ব্যবসায় নতুন কিছু সংযোজিত হলে বিনিয়োগকারীদের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) জানাতে হয়। এর অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার ব্র্যাক ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি পেলে ডিজিটাল ব্যাংকে বিনিয়োগে যাবে ব্র্যাক ব্যাংক।
এ বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর এফ হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, ‘বিকাশের ডিজিটাল ব্যাংকে বিনিয়োগের বিষয়ে আমাদের বোর্ডে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পেলে এ প্রকল্পে আমরা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।’
তথ্যমতে, সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান বিকাশের মালিকানার ৫১ শতাংশ হচ্ছে ব্র্যাক ব্যাংকের। এমএফএস প্রতিষ্ঠান বকাশের মালিকানায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের খোলা ওয়েব পোর্টালে আবেদন না করলেও যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) থেকে ‘বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’ নামের ছাড়পত্র নিয়েছে বিকাশ। এ নামেই আবেদন করতে চাচ্ছে বিকাশের ডিজিটাল ব্যাংক। উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে অর্থ সংগ্রহ করে ১২৫ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন হতে হবে ডিজিটাল ব্যাংকের, প্রচলিত ব্যাংকের যেখানে পরিশোধিত মূলধন হচ্ছে ৫০০ কোটি টাকা। কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকার শেয়ার ধারণ থাকতে হবে উদ্যোক্তা হতে চাইলে। ডিজিটাল ব্যাংকের ব্যবসা শুরুর পর পাঁচ বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে হবে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে। তবে এখানে শর্ত দেয়া হয়, আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ উদ্যোক্তাদের সরবরাহ করা প্রাথমিক মূলধনের কম হতে পারবে না।
অর্থাৎ, আইপিওর মাধ্যমে কমপক্ষে ১২৫ কোটি টাকা বা ওই সময়ে উদ্যোক্তাদের সরবরাহকৃত অর্থের সমপরিমাণ মূলধন সংগ্রহ করতে শেয়ার ছাড়তে হবে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মাঝে। উদ্যোক্তাদের শেয়ার তিন বছরের পূর্বে হস্তান্তর করতে অনুমোদন দিতে পারবে না বাংলাদেশ ব্যাংক।
ডিজিটাল ব্যাংকের বেলায় কিছু বিশেষ নির্দেশনা থাকলেও ব্যাংকিং-সংক্রান্ত প্রচলিত ব্যাংকের পরিপালনীয় নীতিমালার পুরোটাই মানতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, প্রচলিত ব্যাংকের মতোই ব্যাসেল-৩ অনুসরণ, সিএসআর নীতি মানা, ঋণ আমানত অনুপাত, খেলাপি ঋণের শ্রেণিকরণ, বিধিবদ্ধ জমা, ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ, ক্রেডিট রিস্কসহ যাবতীয় নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। এছাড়াও সময় সময় যেসব নির্দেশনা নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক জারি করবে, তাও মানতে হবে।
ব্যাখ্যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ডিজটাল ব্যাংকের নীতিমালায় না উল্লেখ থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমতি হয়নি— এমন কোনো কার্যক্রমে নিয়োজিত হতে পারবে না। ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে গত জুনে সার্কুলার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে আলোচনায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়ায় আবেদন জমা পড়েনি একটিরও। গতকাল ১ আগস্ট আবেদনের শেষ তারিখ থাকলেও গত রোববার সময় বাড়িয়ে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিকাশের কর্পোরেট কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম আমার সংবাদকে বলেন, ‘ডিজিটাল ব্যাংকের বিষয়ে আমরা আগ্রহী। এ বিষয়ে আমরা যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের শেয়ারহোল্ডাররা আমাদের সঙ্গে আছেন। ব্র্যাক ব্যাংক বিকাশের ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক। তারা ডিজিটাল ব্যাংকেও অর্থায়ন করবে। শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকে এ বিষয়ে আবেদন করা হবে।’ তবে ডিজিটাল ব্যাংক শেয়ার ধারণের হার কেমন হবে— তা আবেদনের আগে প্রকাশ করতে চাননি বিকাশের এ মুখপাত্র।
সূত্র: রেদওয়ানুল হক; দৈনিক আমার সংবাদ।