16197

05/01/2025 আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণ ২০০০০ কোটি টাকা

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণ ২০০০০ কোটি টাকা

রাজ টাইমস ডেস্ক :

১৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:১৮

দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পর এবার নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও অস্বাভাবিকভাবে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। গত তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) ২০৯৬ কোটি বেড়ে মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। খবর যুগান্তরের। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, তারল্য সংকটের মধ্যে ব্যাংকের সঙ্গে আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে তীব্র প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। এ ছাড়া অনিয়মের কারণে ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ায় আমানত পেতে সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি ঋণগ্রহীতাদের ব্যবসা-বাণিজ্য খারাপ থাকার কারণে অনেকে ঋণ সময়মতো পরিশোধ করতে পারেনি। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় ১৯ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এর তিন মাস আগে গত মার্চ শেষে ঋণ স্থিতি ছিল ৭১ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা।

ওই সময়ে খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল ১৭ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৫ দশমিক ০৫ শতাংশ। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। তবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪ হাজার ১৫ কোটি টাকা। গত বছরের জুন শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ স্থিতি ছিল ৬৯ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। ওই সময়ে খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল ১৫ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২২ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ বেড়েছে চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। এর পরের প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কমেছে ৫০৬ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের (জানুয়ারি-মার্চ) প্রান্তিকে বেড়েছে ১ হাজার ৩৪ কোটি এবং এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ২ হাজার ৯৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা ছাড়ের পরও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খেলাপি ঋণ কমাতে পারছে না। গত জুন পর্যন্ত কেউ কিস্তির অর্ধেক পরিশোধ করলে তাকে খেলাপি না করার নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নির্দেশনার ফলে খেলাপি ঋণ কমার কথা ছিল। কিন্তু উলটো খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কায়সার হামিদ বলেন, গত অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান উভয় খাতেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে। মূলত ঋণ পরিশোধে বেশিরভাগ শিথিলতা তুলে নেওয়া হয়। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিস্থিতি খারাপ হওয়াতে অনেকে কিস্তি পরিশোধ করেনি। তাই খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

জানা গেছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত বেশ আগে থেকেই খারাপ অবস্থায় পড়েছে। আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে না পারাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও লুটপাটের কারণে ২০১৯ সালে পিপলস লিজিং অবসায়নের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে একসময় প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) নিয়ন্ত্রণে থাকা আরও তিন প্রতিষ্ঠান তথা বিআইএফসি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও এফএএস ফাইন্যান্সের নানা জালিয়াতির বিষয় সামনে আসে। ব্যাপক লুটপাটের কারণে তহবিল সংকট চলছে এসব প্রতিষ্ঠানে।

এদিকে দেশের ব্যাংক খাতেও খেলাপি ঋণ অস্বাভাবিক বেড়েছে। গত জুন শেষে দেশে ব্যাংক খাতে ঋণ ছিল ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। ওই সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয় ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা, যা মোট ব্যাংকঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশই এখন খেলাপি। গত মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২১ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]