25079

05/01/2025 অনুরোধ সত্ত্বেও হাসিনাকে নিতে বিমান পাঠায়নি ভারত, নেপথ্যে যত কারণ

অনুরোধ সত্ত্বেও হাসিনাকে নিতে বিমান পাঠায়নি ভারত, নেপথ্যে যত কারণ

রাজ টাইমস ডেস্ক

২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:১৫

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জীবন বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ভারতকে বিমান পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু ভারত তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল।

প্রশ্ন উঠছে, কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলো দিল্লি? কূটনৈতিক জটিলতা, আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির শঙ্কা এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সমীকরণ—সব মিলে এই অস্বীকৃতি কি পরিকল্পিত কৌশল ছিল? এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়, যা আজও বহুল আলোচিত।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত শেখ হাসিনা দফায় দফায় ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি তাদের জানান, ঢাকার পরিস্থিতি তার জন্য নিরাপদ নয় এবং প্রাণ বাঁচাতে তাকে দেশ ছাড়তেই হবে।

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালসহ একাধিক কর্মকর্তার কাছে তিনি সরাসরি বিমান পাঠানোর অনুরোধ জানান। হাসিনা বারবার বলেন, “জনগণ ও সেনাবাহিনী আমার বিরুদ্ধে চলে গেছে। এখন প্রাণ বাঁচানোর জন্য আমাকে দিল্লি যেতে হবে।”

হাসিনার অনুরোধের প্রেক্ষিতে দিল্লিতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেওয়া হয়। আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়, ভারত সরাসরি বিমান পাঠাবে না। তাদের যুক্তি ছিল— এটি করলে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠবে। এমনকি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিয়েও বিতর্ক হতে পারে।

ভারতীয় নেতারা আরও যুক্তি দেন, বাংলাদেশের ভেতর থেকেই হাসিনার দেশত্যাগের ব্যবস্থা করা হোক। এতে করে দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের ওপর থাকবে এবং ভারতের ওপর সরাসরি কোনো দায় বর্তাবে না।

অপর দিকে, ঢাকায় তখন চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেনাবাহিনী ও জনতার চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দেয়। সেনা কর্মকর্তারা শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেন, হাসিনাকে নিরাপদে দেশত্যাগ করতে দেওয়া হবে। জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নেতৃত্বে সেনা কর্মকর্তারা হাসিনার জন্য নিজস্ব বিমানে ব্যবস্থা করেন। এর মাধ্যমে তাকে দ্রুত দিল্লি পাঠানো হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন— ভারতের বিমান না পাঠানোর পেছনে দুটি কারণ ছিল। প্রথমত, তারা বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখাতে চেয়েছিল, যেখানে নিজের প্রধানমন্ত্রীকে নিজেরাই নিরাপত্তা দিয়ে পাঠিয়েছে। দ্বিতীয়ত, ভারতের ভেতরেই বাংলাদেশবিরোধী এবং ভারতবিরোধী মনোভাব উস্কে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।

দেশ ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা তিন পৃষ্ঠার একটি লেখা তৈরি করেন। ভ্যানিটি ব্যাগে করে সেই লেখা তিনি দিল্লি নিয়ে যান। দিল্লিতে পৌঁছার পর রাত ১২টায় ঢাকায় তার বিশ্বস্ত সহকর্মীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।

এভাবে কূটনৈতিক জটিলতা এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্য দিয়ে হাসিনা দিল্লি পৌঁছান। তবে ভারতের বিমানের অনুপস্থিতি এবং তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা এখনো থামেনি। এটি কি শুধুই কূটনৈতিক কৌশল, নাকি আরও গভীর কোনো রাজনীতির অংশ? প্রশ্ন রয়ে গেছে।

সূত্র: জনতার চোখ (মানবজমিন)

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]