28041

07/20/2025 ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ নির্মাণে ভারতের উদ্বেগের তোয়াক্কা করছে না চীন

ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ নির্মাণে ভারতের উদ্বেগের তোয়াক্কা করছে না চীন

রাজটাইমস ডেস্ক

২০ জুলাই ২০২৫ ১৬:১৭

তিব্বত ও ভারত হয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদে বৃহৎবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করেছে চীন। শনিবার এই প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং। চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

তিব্বতে ইয়ারলুং জ্যাংপো এবং ভারতে ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত নদীর ওপর এই প্রকল্পের অনুমোদন গত ডিসেম্বরে দেয় বেইজিং। এটি চীনের কার্বন নিঃসরণ শূন্যের লক্ষ্য ও তিব্বত অঞ্চলের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

রোববার (২০ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি।

চীনা সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, ‘এই বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রধানত অন্যান্য অঞ্চলে সরবরাহের জন্য প্রেরণ করা হবে, পাশাপাশি তিব্বতের স্থানীয় চাহিদা মেটাতেও ব্যবহৃত হবে।’

একবার নির্মাণ সম্পন্ন হলে, এই ডাম চীনের ইয়াংসি নদীর উপর নির্মিত রেকর্ডধারী থ্রি গর্জেস ডামকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। এতে ভারত এবং বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের ওপর সম্ভাব্য গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।

প্রকল্পে পাঁচটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। সিনহুয়া জানিয়েছে, এই প্রকল্পে প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (১৬৭.১ বিলিয়ন ডলার) ব্যয় হবে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারত এই প্রকল্প নিয়ে চীনের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, তারা ‘পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’

তখন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, ‘উজানে চীনের কার্যকলাপে যেন ব্রহ্মপুত্রের নিম্নপ্রবাহের দেশগুলোর স্বার্থ ক্ষুণ্ণ না হয়, সে বিষয়ে চীনকে সতর্ক করা হয়েছে।’

অন্যদিকে, গত ডিসেম্বরে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, এই প্রকল্পের ফলে নিম্নপ্রবাহের কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না এবং চীন ‘নদীর নিম্নপ্রবাহের দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখবে।’

এদিকে, শুধু নিম্নপ্রবাহের দেশগুলোর উদ্বেগই নয়, পরিবেশবাদীরাও তিব্বতের পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল অঞ্চলে এ ধরনের মেগা প্রকল্পের কারণে অপূরণীয় ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

পরিবেশগত শঙ্কা

পরিবেশবিদরা বলছেন, তিব্বতের পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল হিমবাহ-নির্ভর এই অঞ্চলে বড় ডাম নির্মাণ জলবায়ু পরিবর্তন, নদীর ইকোসিস্টেম এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উপর অপূরণীয় প্রভাব ফেলতে পারে। হিমবাহ গলে যাওয়া, নদীর স্বাভাবিক গতি পরিবর্তন হওয়া এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়তে পারে।

কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে বাঁধ?

বিশাল এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে পাঁচটি হাইড্রোপাওয়ার স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে এবং প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (১৬৭.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। এটি সম্পূর্ণ হলে ইয়াংসি নদীর ওপর নির্মিত বিশ্বের বৃহত্তম থ্রি গর্জেস ডামকেও অতিক্রম করতে পারে।

তবে এই বাঁধ ভারত এবং বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের জীবিকা, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ, কৃষিকাজ ও জীববৈচিত্র্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। বিশেষ করে শুকনো মৌসুমে পানির প্রবাহ কমিয়ে বা বন্যার সময় হঠাৎ পানির চাপ ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে নিম্নপ্রবাহের দেশগুলোর ক্ষতি হতে পারে।

প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিব্বুল আরেফিন
যোগাযোগ: ২৬৮, পূবালী মার্কেট, শিরোইল, ঘোড়ামারা, রাজশাহী-৬০০০
মোবাইল: ০৯৬৩৮ ১৭ ৩৩ ৮১; ০১৭২৮ ২২ ৩৩ ২৮
ইমেইল: [email protected]; [email protected]