রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলা’র লাশ তুলে আগুন

রাজ টাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৩৩; আপডেট: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০০:৩৪

- ছবি - ইন্টারনেট

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের দরবারে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ভাঙচুর চালিয়েছে তৌহিদি জনতা। এ সময় নুরাল পাগলের ভক্তদের সঙ্গে সংঘর্ষে দুই পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এসে পুলিশও হামলার শিকার হয় এবং তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে নুরাল পাগলের মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয় তৌহিদী জনতা।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগল বহু বছর আগে নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন দরবার শরীফ। আশির দশকের শেষের দিকে নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করে আলোচনায় আসেন তিনি। ওই সময় তার বিরুদ্ধে তীব্র জনরোষ সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালের ২৩ মার্চ জনরোষ এড়াতে তিনি মুচলেকা দিয়ে এলাকা ত্যাগ করেন। কিছুদিন পর তিনি আবার ফিরে এসে দরবার শরীফের কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন।

গত ২৩ আগস্ট ভোরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুরাল পাগল। সেদিন সন্ধ্যায় এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

পরে ভক্ত-অনুরাগীদের অংশগ্রহণে দরবার শরীফের ভেতরে দ্বিতীয় জানাজা শেষে রাত ১০টার দিকে তাকে মাটি থেকে প্রায় ১২ ফুট উঁচু স্থানে বিশেষ কায়দায় দাফন করা হয়। পবিত্র কাবা শরীফের আদলে তার কবরের রং করা হয়। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হন তৌহিদী জনতা। আন্দোলনের মুখে কবরের রং পরিবর্তন করা হয়।

এ নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয় তৌহিদী জনতা ও নুরাল পাগলের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। তবে কবর নিচে নামাতে গড়িমসি করে নুরাল পাগলের পরিবার।

পরে দুই দফা সংবাদ সম্মেলন করে তৌহিদী জনতা কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন। কবর নিচে না নামানো হলে কবর ভেঙে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার জুমার পর গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ করে তৌহিদী জনতা। সেখান থেকে তারা হামলা চালায় নুরাল পাগলের দরবারে। পাল্টা আক্রমণ করেন নুরাল পাগলের ভক্তরা।

ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ তুমুল সংঘর্ষে দুই পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হন। একপর্যায়ে নুরাল পাগলের দরবারে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেন তৌহিদী জনতা। পরে তার মরদেহ কবর থেকে তুলে গোয়ালন্দ পদ্মার মোড়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ওপর নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয় এবং পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে ৬ পুলিশ সদস্য আহত হন। সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদের ওপরেও চড়াও হন তৌহিদী জনতা।

হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম। এর বাইরে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ঘটনাস্থলে গেছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীবসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারাও। তবে তারাও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top