গৃহিণীদের ব্যাংক হিসাবে ৮২ হাজার কোটি টাকার মেয়াদি আমানত
রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ২১:৫০; আপডেট: ২ মে ২০২৫ ০১:৩৪
-2022-12-18-10-50-12.jpg)
দেশের ব্যাংক আমানতে নারীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। নানা বৈষম্যের মাঝেও গচ্ছিত মেয়াদি আমানতে পুরুষের সমানতালে অবস্থান দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গৃহিণীদের ব্যাংক হিসাবে মেয়াদি আমানত রয়েছে ৮১ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা, যা ব্যক্তিশ্রেণীর মোট মেয়াদি আমানতের প্রায় ২৩ শতাংশ। খবর বণিক বার্তার।
গৃহিণীদের নামে মেয়াদি আমানতে জমা হওয়া অর্থ দেশের ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও বেতনভুক্ত বিপুল পরিমাণ চাকরিজীবীর জমাকৃত মোট মেয়াদি আমানতেরও কাছাকাছি। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোয় ব্যক্তিশ্রণীর মোট মেয়াদি আমানত জমা হয়েছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৬ দশমিক ৯১ শতাংশ জমা রয়েছে বেতনভুক্ত চাকরিজীবীদের নামে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬ দশমিক ২৬ শতাংশ মেয়াদি আমানতের অর্থ জমা করেছেন ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা। চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ী নারীদের জমাকৃত মেয়াদি আমানত এ দুই হিসাবের অন্তর্ভুক্ত। শুধু গৃহিণী বা বেগম হিসেবে পরিচয় দানকারী নারীদের হিসাবে মেয়াদি আমানতের ২২ দশমিক ৯৩ শতাংশ অর্থ জমা রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন শিডিউলড ব্যাংকস স্ট্যাটিসটিকসে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গৃহিণীদের ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত প্রায় ৮২ হাজার কোটি টাকার মেয়াদি আমানতের সামান্য অংশই মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত গৃহিণীদের। সব মিলিয়ে এ শ্রেণীর গৃহিণীদের আমানতের পরিমাণ সর্বোচ্চ ১০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। বাকি ৭২ হাজার কোটি টাকার মেয়াদি আমানত দেশের উচ্চবিত্ত শ্রেণীর বেগমদের। ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, উচ্চপর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী ও বিভিন্ন উপায়ে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থবিত্তের মালিকদের বেগমদেরই ব্যাংকে মেয়াদি আমানত হিসাবে এ পরিমাণ অর্থ জমা রয়েছে।
প্রতিবেদনটির তথ্য বলছে, গৃহিণীদের ব্যাংক হিসাবে জমা হওয়া মেয়াদি আমানতের অর্থের পরিমাণ প্রবাসী বাংলাদেশীদের চেয়ে তিন গুণ বেশি। আবার ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবীদের মতো স্বাধীন পেশাজীবীদের মেয়াদি আমানতের তুলনায়ও তা সাড়ে তিন গুণ বেশি। বেগমদের ব্যাংক হিসাবে ৮১ হাজার কোটি টাকার বেশি মেয়াদি আমানত থাকলেও অবসরপ্রাপ্তদের আছে মাত্র ১২ হাজার কোটি টাকা। দেশের সব কৃষক ও মত্স্যজীবীর মেয়াদি আমানতে জমাকৃত অর্থ ১০ হাজার কোটি টাকারও কম।
বেগমদের ব্যাংক হিসাবে থাকা আমানতের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। শুধু গত এক বছরে ব্যাংকে বেগমদের মেয়াদি আমানতের অর্থ বেড়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা, যেখানে ৮ হাজার ৮০২ কোটি টাকা বেড়েছে চাকরিজীবীদের মেয়াদি আমানত। ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের মেয়াদি আমানত বেড়েছে মাত্র ১ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। শতাংশের হিসাবে বেগমদের মেয়াদি আমানতের প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। অথচ চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে মেয়াদি আমানতের প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ১০ ও ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ।
দেশের ব্যাংকগুলোয় মেয়াদির বাইরে অন্যান্য শ্রেণীর আমানতেও বেগমদের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকগুলোয় গৃহিণীদের জমাকৃত মোট আমানতের (মেয়াদি, চলতি ও সঞ্চয়ী) অর্থ ছিল ১ লাখ ৫৭ হাজার ২৪ কোটি টাকা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে তা ১ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। অথচ বিভিন্ন সংস্থার গবেষণা ও জরিপ বলছে, বাংলাদেশের ৭৪ শতাংশ নারীর কাছে এখনো ব্যাংকের সেবাই পৌঁছেনি।
ব্যাংকে হিসাব খোলার জন্য সব গ্রাহককে কেওয়াইসি (নো ইয়োর কাস্টোমার) ফর্ম পূরণ করতে হয়। এতে নির্ধারিত কলামে গ্রাহকের পেশা উল্লেখ থাকে। যেসব বিবাহিত নারী কেবলই ঘরদোর সামলান তারা কেওয়াইসিতে নিজেদের পেশার স্থলে হাউজওয়াইফ বা গৃহিণী উল্লেখ করেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, যেসব নারী চাকরি করেন তাদের আমানতের হিসাব চাকরিজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। আবার নারী শিক্ষার্থীদের আমানত জমা হয় স্টুডেন্ট হিসেবে। নারী উদ্যোক্তাদের আমানতও দেখানো হয় ব্যবসায়ী বা শিল্পোদ্যোক্তা হিসেবে। গৃহিণী হিসেবে শুধু তাদেরই দেখানো হয়, যারা আয়বিহীন এবং অর্থের জন্য স্বামী বা পরিবারের অন্য সদস্যদের ওপর নির্ভরশীল।
একাধিক ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী ও শাখা ব্যবস্থাপক জানান, আয়কর রিটার্ন জমা দেন এমন শ্রেণীর সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের অনেকে সম্পদ গোপন রাখার জন্য নিজেদের স্ত্রী, মা ও সন্তানদের ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা রাখেন। আবার অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঘুস লেনদেনের ক্ষেত্রেও অনেকে পরিবারের নারী সদস্যদের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করেন। মূলত এ কারণেই গৃহিণীদের ব্যাংক হিসাবে এত পরিমাণ অর্থ জমা পড়তে দেখা যাচ্ছে। তবে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের একটি অংশও আমানত হিসেবে গৃহিণীদের ব্যাংক হিসাবে জমা হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার তত্পরতায় নানা সময়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের দেয়া এ তথ্যের বাস্তবসম্মততা উঠে এসেছে। ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীমের অফিসে অভিযান চালায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। যুবলীগ নেতা পরিচয় দেয়া এ ঠিকাদার জিকে শামীম নামেই বেশি পরিচিত। রাজধানীর নিকেতনের ওই অফিস থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, মদসহ অন্যান্য অবৈধ উপকরণের পাশাপাশি ১৬৫ কোটি টাকা মেয়াদি আমানত বা এফডিআরের ভাউচার উদ্ধার করে র্যাব। বিপুল অংকের এফডিআরের মধ্যে ১৪০ কোটি টাকাই রাখা হয়েছিল জিকে শামীমের মা আয়েশা আক্তারের নামে। জিকে শামীমের নামে ছিল মাত্র ২৫ কোটি টাকার এফডিআর। অর্থ লেনদেনের জন্য জিকে শামীম তার স্ত্রী সামিমা সুলতানার ব্যাংক হিসাবও ব্যবহার করেছিলেন। অভিযান শেষে র?্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেছিলেন, জিকে শামীমের মায়ের কোনো আয় নেই। কিন্তু তার মায়ের নামে ১৪০ কোটি টাকার এফডিআর পাওয়া গিয়েছে।
প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারকে দেশের আর্থিক খাতে লুণ্ঠনের অন্যতম ‘দিকপাল’ মনে করা হয়। অন্তত চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ লুণ্ঠনের প্রক্রিয়ায় পিকে হালদার তার মা লিলাবতী হালদারের নাম ব্যবহার করেছিলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, লীলাবতী হালদারের হিসাবে ১৬০ কোটি টাকা জমা হয়েছিল। নামে-বেনামে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে টাকা বের করে নেয়ার ক্ষেত্রে পিকে হালদার তার বান্ধবীদের নামও ব্যবহার করেছিলেন বলে বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে।
বিদেশে অর্থ ও মানব পাচারের মামলায় কুয়েতে গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করছেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। চতুর্থ প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাংক এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। অবৈধ অর্থ ব্যাংকে জমা রাখার জন্য পাপুল স্ত্রী, কন্যা ও শ্যালিকার ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করেছিলেন। পাপুল ও তার পরিবারের তিন সদস্যের ৬১৭টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। আদালতকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী জানান, পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম অবৈধভাবে পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করতেন। তাদের কোনো পেশা না থাকলেও জেসমিন ও ওয়াফার ব্যাংক হিসাবে যেসব লেনদেন হয়, তা মূলত পাপুল ও তার স্ত্রীর। এক্ষেত্রে এনআরবিসি, প্রাইমসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ৬১৭টি হিসাব ব্যবহার করা হয়। তাদের ব্যাংক হিসাবে ৩৫৫ কোটি টাকার বেশি পাওয়া গিয়েছিল।
ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ আমানত জমা হওয়ার পেছনে গৃহিণীদের সঞ্চয়প্রবণতারও ভূমিকা আছে বলে মনে করেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান আনিস এ খান। তিনি বলেন, চাকরিজীবী নারীদের আয় যেমন হয়, তেমনি ব্যয়ও হয়। কিন্তু প্রকৃত গৃহিণীদের তেমন কোনো ব্যয় নেই। স্বামী বা স্বজনদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ তারা সঞ্চয় করেন। অনেকে সংসার খরচের টাকা থেকেও সঞ্চয় করেন। উত্তরাধিকার হিসেবে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রি করা অর্থও গৃহিণীরা ব্যাংকে রাখেন। ব্যাংকে গৃহিণীদের বড় অংকের আমানত জমা হওয়ার পেছনে এসব প্রেক্ষাপটের ভূমিকা রয়েছে। তবে অনেকে কালো টাকা পার্কিং করার জন্যও মা, স্ত্রী, কন্যার ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করেন।
যেকোনো ব্যাংকের প্রধান শক্তি হলো ফিক্সড ডিপোজিট বা মেয়াদি আমানত। এ ধরনের আমানতের সর্বনিম্ন মেয়াদ হয় তিন মাস। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকগুলোয় ব্যক্তিবিশেষ বা একক গ্রাহক হিসেবে জমাকৃত মেয়াদি আমানতের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৯৫ হাজার ৯২১ কোটি টাকার মেয়াদি আমানত চাকরিজীবীদের (বেতনভুক্ত)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৩ হাজার ৬০২ কোটি টাকার মেয়াদি আমানত জমা রেখেছেন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা। আর ব্যাংকগুলোর মেয়াদি আমানতের তৃতীয় বৃহত্তম উৎস গৃহিণীরা। সেপ্টেম্বর শেষে গৃহিণীদের ব্যাংক হিসাবে থাকা মেয়াদি আমানতের পরিমাণ ৮১ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা।
এছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশীদের ব্যাংক হিসাবে জমা আছে ২৫ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকার মেয়াদি আমানত। ডাক্তার, আইনজীবী, ট্যাক্সিচালকদের মতো স্বাধীন পেশাজীবীদের ব্যাংক হিসাবে ২১ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকার মেয়াদি আমানত জমা রয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবীদের ব্যাংক হিসাবে মেয়াদি আমানত আছে ১২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। কৃষক ও মত্স্যজীবীদের ব্যাংক হিসাবে ৯ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা, বাড়িওয়ালাদের ব্যাংক হিসাবে ৭ হাজার ৫৯৭ কোটি, ছাত্রদের ব্যাংক হিসাবে ৬ হাজার ৮৪০ কোটি, বয়োবৃদ্ধদের ব্যাংক হিসাবে ২৫৩ কোটি, প্রতিবন্ধীদের ব্যাংক হিসাবে ৩২৩ কোটি ও বিদেশী ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবে ২৮ কোটি টাকার মেয়াদি আমানত জমা রয়েছে।
গত এক বছরে ব্যাংকে গৃহিণীদের ব্যাংক হিসাবে ২৫ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকার আমানত বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকে গৃহিণীদের মোট আমানত ছিল ১ লাখ ৫৭ হাজার ২৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭০ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা ছিল মেয়াদি আমানত। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকে গৃহিণীদের মোট আমানত ১ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে মেয়াদি আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮১ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকায়। গৃহিণীদের মেয়াদি আমানতের বড় অংশের মেয়াদ তিন থেকে ছয় মাস। মেয়াদ ছয় মাসের কম এমন আমানতের পরিমাণ ৩৯ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। ছয় মাস থেকে এক বছর মেয়াদি আমানত আছে ৭ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। এছাড়া গৃহিণীদের এক-দুই বছর মেয়াদি ১৫ হাজার ৮২৫ কোটি, দু-তিন বছর মেয়াদি ২ হাজার ১৮০ কোটি ও তিন বছরের বেশি মেয়াদি ১৭ হাজার ১০০ কোটি টাকার আমানত রয়েছে।
দেশের অর্থনীতির আকার ৪৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেলেও রাজস্ব আয় বাড়ছে না। সর্বশেষ অর্থবছরের এখন পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন মাত্র ২৬ লাখ করদাতা। ব্যক্তিশ্রেণীর আয়কর রিটার্নের মধ্যে খুবই নগণ্যসংখ্যক গৃহিণী রিটার্ন দাখিল করেন বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, চাকরিজীবী নারীদের বড় একটি অংশ আয়কর রিটার্ন দাখিল করলেও গৃহিণীদের রিটার্ন দাখিলের ঘটনা বিরল। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যানও পাওয়া যায়নি।
দেশের শ্রমশক্তির বড় একটি অংশ বিদেশমুখী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে প্রায় এক কোটি বাংলাদেশী কর্মরত। প্রবাসী এ বিপুল জনগোষ্ঠীর একটি অংশের দেশে ব্যাংক হিসাব নেই। তারা স্ত্রীসহ স্বজনদের ব্যাংক হিসাবে রেমিট্যান্সের অর্থ পাঠান। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, রেমিট্যান্সের অর্থের সিংহভাগই ভোগে ব্যয় হয়। তবে কিছু অর্থ আমানত হিসেবে ব্যাংকে জমা থাকে। অনেক প্রবাসী নিজের ব্যাংক হিসাবের বাইরে স্ত্রী ও স্বজনদের ব্যাংক হিসাবেও আমানত হিসেবে অর্থ জমা রাখেন।
বণিক বার্তার প্রতিবেদনের লিঙ্ক
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: