রাজশাহী-৩

পবা-মোহনপুরে নেই ভোটের আমেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:৩৭; আপডেট: ২ মে ২০২৪ ০৯:৪২

ফাইল ছবি

নির্বাচন এলেই প্রার্থীদের ভিতরে প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠে এলাকা। নানা ধরণের নির্বাচনি স্লোগান আর মাইকের আওয়াজে ভরপুর হয়ে উঠে হাট বাজার। চায়ের দোকানে উঠে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। মিছিল মিটিং আর সমাবেশে প্রার্থীদের ব্যাস্ত সময় অতিবাহিত হয়। নির্বাচন এলেই পবা-মোহনপুরে বইতো উৎসবের আমেজ। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সন্নিকটে চলে আসলেও এখনো জমে উঠেনি নির্বাচনি আমেজ।

সংসদীয় আসন ৫৪ রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুরে) মোট ভোটার ৪,০০,৬৬১ জন। তার ভিতরে পুরুষ ভোটার ২,০০,১৮০ জন, মহিলা ভোটার ২,০০৪৭৮ জন এবং হিজড়া ভোটার ৩ জন।  এই আসনে প্রতিদ্বন্বীতা করছে মোট ৬ জন প্রার্থী। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আগেই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্বান্ত আগেই জানিয়েছে। এই আসনের টানা দুই বারের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন দলীয় মনোনয়ন না পাওয়াই নৌকা প্রতিককে সর্মথন জানিয়ে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যহার করে নিয়েছেন। এখন বর্তমান ৬ জন প্রতিদ্বন্বী প্রার্থীর ভিতরে হবে লড়াই । প্রার্থীরা হচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ,  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দলের নোঙ্গর প্রতিকের প্রার্থী মতিউর রহমান, ন্যাশনাল পিপুলস পার্টি এনপিপির আম প্রতিকের প্রার্থী সইবুর রহমান, ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট বিএনএফ এর টেলিভিশন প্রতিকের প্রার্থী বজলুর রহমান, জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতিকের প্রার্থী আব্দুস সালাম খান, সাংস্কৃতি মুক্তি জোট ছড়ি প্রতিকের প্রার্থী এনামুল হক নির্বাচনে লড়ছেন।

৬জন প্রার্থী থাকলেও এই আসনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ তিনি নিয়মিতই পবা-মোহনপুর চষে বেড়াচ্ছেন। তার নেতাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন নৌকার পক্ষে। এছাড়া বাকি ৫ জন প্রার্থীর দেখা এখন পর্যন্ত পবা-মোহনপুরবাসী পাইনি বলে জানা যায়। তবে গত শনিবার (২৩ ই ডিসেম্বর) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন নোঙ্গর প্রতিকের প্রার্থী মতিউর রহমান তিনি মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট পৌরসভায় কয়েকজায়গায় তার নোঙ্গর প্রতিকে ভোট চেয়ে গণসংযোগ করেছেন বলে জানা যায়।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে যেরকম জমজমাট আয়োজন কিংবা সভা-সমাবেশ কিংবা প্রচারণ হওয়ার কথা এই আসনে নৌকা প্রতিক বাদে তার কোনকিছুই নেই পবা-মোহনপুর । সরজমিনে ঘুরে দেখা যায় এই পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভা, বড়গাছি, হুজুরিপাড়া, হরিয়ান ইউনিয়ন সহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর পোষ্টার, ব্যানার ছাড়া অন্য কোন প্রার্থীর কোন পোষ্টার ব্যানার নেই। তবে দুএক জায়গায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন নোঙ্গর প্রতিকের প্রার্থীর পোষ্টার দেখতে পাওয়া গেছে। এই অবস্থায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আমেজ হয়ে উঠেছে নিরুত্তাপ। ভোটের হাওয়া লাগেনি এখনো এই অন্চলে।

নওহাটা পৌরসভার ব্রীজঘাট এলাকার চা দোকানে কয়েকজনের সাথে কথা বললে এবং কয়েকজনের কাছে সংসদ নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে তারা সংসদ নির্বাচনে অনীহা দেখিয়ে বলেন, একটি নির্বাচনের যেই আমেজ থাকে তা বর্তমানের নির্বাচনে নেই। এই নির্বাচনে পরিষ্কার হয়ে গেছে এখানে নৌকাই জিতবে। সুমন আলীর নামের এক ভ্যান চালকের সাথে কথা বললে সে বলে, এখানে নৌকা মার্কার প্রচার প্রচারণ ছাড়া আর কোন মার্কার প্রচার নাই। নির্বাচনে আমরা দেখতে পাচ্ছি এখানে নৌকা মার্কা জিতে আছে তাহলে আমাদের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে অযথা বিশৃঙ্খলার ভিতরে পড়ার দরকার আছে? আপনারা কি নৌকা মার্কার বাইরে কোন মার্কার এখন পর্যন্ত কোন পোস্টার দেখেছেন? তাহলে নির্বাচন জমবে কিভাবে বলেন?

মোহনপুর উপজেলার থানার মোড়ে নোঙ্গর প্রতিকের প্রার্থীর কয়েকটা পোষ্টার ছাড়া বাকি পোস্টার সব নৌকা প্রতিকের দেখতে পাওয়া যায়। এই অবস্থায় নির্বাচনে জৌলুস কমেছে। নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকায় নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর জয় অনেকে অগ্রিম ভেবে নিয়েছে বলে জানান। উপজেলা পরিষদ গেটে কয়েকজন বাসিন্দা ও সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বললে তারা জানান বিএনপি নির্বাচনে না আসায় এই আসনে ভোটের লড়াই জমতো আওয়ামী লীগ দলের দুই প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ এবং আয়েন উদ্দিনের ভিতরে। কিন্তু আয়েন উদ্দিন নির্বাচন থেকে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাাহার করে নেওয়ায় বর্তমানে নির্বাচন হয়ে গেছে সাদামাটা। বাকিঁ যে কয়জন প্রার্থী আছে তাদের এই আসনে সেইরকম কোন প্রভাব নেই বলে জানান তারা।

এইদিকে সরকার থেকে বলা হয়েছে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে হবে। কিন্তু এই আসনে উত্তাপ বিহীন  নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কতটা বাড়বে সেটা নিয়ে শন্কা থেকেই যায়!



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top