শিবির অপবাদে যুবককে মারধরের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ নেতার দায় স্বীকার

রাজটাইমস ডেক্স | প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২১ ১০:৩৭; আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:০৮

 ছবি : সংগৃহীত

পটুয়াখালীতে লকডাউনকালীন সময়ে খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে বিনামূল্যে ইফতার বিতরণ করে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা পাওয়া মাহামুদ হাসান রায়হানকে প্রকাশ্যে মারধরের অভিযোগ উঠেছে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২০ প্রিল) বিকেল ৫টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ওই স্বেচ্ছাসেবক যুবক মাহামুদ হাসান রায়হান শিবিরের সাথে জড়িত এই অভিযোগে তাকে মারধরের কথা স্বীকার করেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আলমগীর। তবে রায়হান ছাত্র শিবিরের সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন পটুয়াখালীর বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা।

হামলায় আহত রায়হান পটুয়াখালীর শিশুপার্ক এলাকার বাসিন্দা মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে এবং পটুয়াখালীবাসী স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের কর্মী। দুই বছর পূর্বে পটুয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স পাশ করে সে। দির্ঘদিন ধরে একটি মোবাইলের দোকানে কর্মরত রয়েছে রায়হান। ২০১০ সাল থেকে সে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। বাবা মারা যাওয়ার পর রাজনীতি থেকে সরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন তিনি।
রায়হান বলেন, পটুয়াখালীবাসী স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের উদ্যোগে দ্বিতীয় রোজা থেকে প্রতিদিন ৫০ জন রোজাদার শ্রমজীবী মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ শুরু করি। বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে সংগঠনের ব্যানারে ৮/১০ সদস্য এই ইফতার বিতরনের কাজ করে আসছি। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়। এই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিকেলে পটুয়াখালী সার্কিট হাউজের সামনে ইফতার সাঁজিয়ে রেখে শ্রমজীবী মানুষের মাঝে প্যাকেবট বিতরন হচ্ছিলো। আকস্মিক দু'টি মোটর সাইকেলযোগে কাজী আলমগীরের নেতৃত্বে ৬ জন লোক এসে আমাকে মারধর শুরু করে। কাজী আলমগীর নিজেই আমাকে মারধর করে।

এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রায়হান বলেন, আলমগীর ভাই আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে মামলা করে আমি কি এলাকায় থাকতে পারবো। কি কারণে এ হামলা হয়েছে জানতে চাইলে রায়হান বলেন, ইফতার বিতরণের প্রচার-প্রচারনা বেশি হওয়ায় তিনি ঈর্ষান্বিত হয়ে এই হামলা চালাতে পারেন। ছাত্র শিবিরের রাজনীতিতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন রায়হান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পটুয়াখালীর এক বাসিন্দা জানান, রায়হান কখনোই শিবিরের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না। ইফতার বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে আমন্ত্রণ না জানানোয় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে এই হামলা চালিয়েছেন বলে দাবি করেন সাবেক ওই ছাত্রলীগ নেতা।

পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন মুঠোফোনে রায়হানকে মারধরের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, পটুয়াখালী স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের ব্যানারে ইফতার বিতরণ করছিল শিবিরের কর্মীরা। দেশের এই ক্রান্তি লগ্নে ইফতার বিতরণের আড়ালে তারা যে কোন অঘটন ঘটাতে পারে। এমন আশঙ্কায় আমি তাদের মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছি।

রায়হান ছাত্রশিবির করেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার এমন দাবির বিষয়ে কাজী আলমগীর বলেন, তিনি নিজে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি থেকে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হয়েছেন। তাই কে কোন দলে করে তার চেয়ে ভালো কারোর জানান কথা নয়।

এ বিষয়ে জানতে পটুয়াখালী সদর থানার ওসি আকতার মোরশেদের সরকারি মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ কারনে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।



বিষয়: হামলা


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top