যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন

দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে ৮০ হাজার মানুষ পঙ্গু হয়

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:৪৯; আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ০৭:৪৭

ছবি: সংগৃহীত

যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না থাকায় দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছেই। প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ প্রতিবন্ধী বা পঙ্গু হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ১২ হাজারের বেশি ১৭ বছরের কম বয়সী শিশু। এ হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ২২০ জন মানুষ প্রতিবন্ধী হচ্ছেন কেবল সড়ক দুর্ঘটনায়।

শনিবার (২১ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮ হাজার মানুষের প্রাণহানির তথ্য মিলেছে। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সড়কে প্রতিদিন ৬৪ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। এই তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজার ৩৬০ জন মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ আহত হচ্ছেন।

প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ১২ হাজারের বেশি ১৭ বছরের কম বয়সী শিশু। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ২২০ জন মানুষ প্রতিবন্ধী হচ্ছে কেবল সড়ক দুর্ঘটনায়।

অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ লাখ মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশে মারা যায় ২৪ হাজার ৯৫৪ জন। সংস্থাটির তথ্যমতে, হতাহতদের ৬৭ শতাংশই ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী। এক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি। সংস্থাটি দাবি করছে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনাজনিত জিডিপির ক্ষতি ৫.৩ শতাংশ।

তিনি বলেন, দেশের কর্মক্ষম ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন। এর প্রভাব পড়ছে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তি এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের আর্থসামাজিক ক্ষতি হচ্ছে।

বুয়েটের এআরআই এর হিসেব বলছে, গত তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় এমন ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা। কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা যদি নির্ভরশীল মানুষের তুলনায় বেশি হয়, তাহলে সেটিকে জনসংখ্যা বোনাস বা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বলা হয়। বাংলাদেশ এ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের জন্য গর্ব করে। সড়ক দুর্ঘটনা এ গর্বের জায়গাতেই বেশি আঘাত হানছে।

পুলিশের তথ্যভান্ডার বিশ্লেষণ করে এআরআই বলছে, গত এক দশকে দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের ৫৪ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আর দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের সাড়ে ১৮ শতাংশ শিশু। এদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাব মতে, নিহতদের ৫১ শতাংশ একমাত্র উপার্যনক্ষম ব্যক্তি।

সমিতি আরও বলেছে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ১০ লাখ টাকা এবং আহতকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুসারে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ও আহতদের ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। এটি আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে সমিতি। তাঁরা আরও বলেছে, এই আইন কার্যকরের পাঁচ বছর হতে চললেও গত তিনদিন আগে মাত্র ১৬২ জনকে এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top