জবি ছাত্রলীগে পদ পাওয়া নেতা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই না!

রাজ টাইমস | প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:২৪; আপডেট: ৭ মে ২০২৪ ০২:৫৬

ইউনুস মাতব্বর। ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আইন বিভাগ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ইউনুস মাতব্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই নন। তিনি কখনো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই ছিলেন না। অথচ, বিগত এক বছর ধরে নিজেকে আইন বিভাগের ছাত্র পরিচয় দিয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসছেন। বাগিয়ে নিয়েছেন আইন বিভাগ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদ। অভিযুক্ত ইউনুস মাতব্বর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজির অনুসারী ও একই জেলার (ভোলা) বাসিন্দা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের চলমান ব্যাচগুলোতে ইউনুস মাতাব্বর নামে কোনো শিক্ষার্থী নেই। বিভাগের নথিপত্রে এ নামের কোনো শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে ক্যাম্পাসে নিয়মিত আসা-যাওয়া করলেও আদতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই নন। এই বিষয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। ইউনুস মাতব্বর এর মধ্যে ক্যাম্পাসে কয়েকটি মারামারির ঘটনায়ও অভিযুক্ত।

এদিকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি ইউনুস মাতব্বরকে তার পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দেওয়া ইউনুস মাতাব্বর মিথ্যা প্রত্যয়নপত্র ও পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে প্রতারণার মাধ্যমে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়ে আইন বিভাগ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পদায়িত হয়। বিষয়টি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নজরে আসার পর ঘটনার সত্যতা যাচাই করলে তার প্রতারণার বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আইন বিভাগ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে ইউনুস মাতাব্বরকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া ইউনুস মাতাব্বরের কোনো অপকর্মের দায়ভার পরবর্তীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ বহন করবে না এবং সেই সাথে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ বরাবর সুপারিশ করা হলো।

এ বিষয়ে একই শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব হোসাইন বলেন, শুরুর দিকে ওরিয়েন্টেশন ক্লাসে তাকে দু’একদিন দেখেছিলাম। এরপর থেকে কখনো কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে দেখিনি। কিন্তু সে আইন বিভাগের পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এতদিন রাজনীতি করে আসছে।

অভিযুক্ত ইউনুস মাতাব্বরের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহারকৃত মুঠোফোনটি বন্ধ রয়েছে, তার ফেসবুক প্রোফাইলটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজী বলেন, ইউনুস মাতাব্বর মিথ্যা প্রত্যয়নপত্র ও পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে প্রতারণার মাধ্যমে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়ে ছাত্রলীগের পদ নিয়েছেন। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর ঘটনার সত্যতা যাচাই করলে তার প্রতারণার বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া যায়। তাই তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং তার কোনো অপকর্মের দায়ভার পরবর্তীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ বহন করবে না।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top