পরিবারের দাবি হত্যা

ইবি ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০২০ ১৮:৫৭; আপডেট: ৩ অক্টোবর ২০২০ ১৯:০৪

নিহত উলফাত আরা তিন্নি।

গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় আত্মহত্যা করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রী। তবে পরিবারের দাবি এটি আত্মহত্যা নয় বরং হত্যা।

বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) রাতে ছাত্রীর শয়ন কক্ষ থেকে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পরিবার।

নিহত ছাত্রী উলফাত আরা তিন্নি (২৪) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তিন্নি শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলীর মেয়ে।

নিহত ছাত্রীর পরিবার জানিয়েছে, তিন্নির বড় বোনের সাবেক স্বামী দলবল নিয়ে দুই দফা বাড়িতে হামলা চালিয়ে নির্যাতনের পর ওই ছাত্রীকে হত্যা করেছে। এরপর 'আত্মহত্যা' বলে প্রচার চালাতে লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

নিহত তিন্নির আত্মীয় মখলেছুর রহমান জানান, তিন্নির বড়বোন মিন্নির সঙ্গে একই গ্রামের পুনুরুদ্দিনের ছেলে জামিরুলের বিয়ে হয়। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় জামিরুলের সঙ্গে মিন্নির বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কিন্তু কিছুদিন পরেই আবার মিন্নিকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে জামিরুল। এজন্য জামিরুল নানা ভাবে নিহত তিন্নির পরিবারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে আসছিল।

পূর্বের ঝামেলার রেশ ধরে মিন্নির সাবেক স্বামী জামিরুল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিন্নিদের বাড়িতে এসে জামিরুল বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে ভাংচুর চালায়। পরে রাত ১০টার দিকে জামিরুল আরও ১৫/২০ জন লোক নিয়ে তিন্নিদের বাড়িতে হামলা করে। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী তিন্নি বাড়ির দুই তলায় নিজের ঘরে পড়ছিলেন। এসময় জামিরুল লোকজন নিয়ে ওই ঘরে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে তিন্নিকে চরম মারধর করে। একপর্যায়ে জামিরুল তার লোকজন নিয়ে চলে যায়।

হামলা চালিয়ে জামিরুল চলে যাওয়ার ১০ মিনিট পরেই তিন্নির মা ও বোন বাড়ির দুই তলায় গিয়ে তিন্নির ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। পরে তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে পুলিশে খবর দেয়।

তিন্নিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ এনে বড়বোন মিন্নি দাবি করেন, তার সাবেক স্বামী জামিরুল ও তার দলবল দোতলায় উঠে তিন্নির সঙ্গে খারাপ কিছু করেছে। তারা সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা অবস্থায় তিন্নিকে পেয়ে দ্রুত কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, তাকে নিয়ে আসার আগেই মারা গেছেন।

এদিকে, ময়নাতদন্তের পর প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যায় মিন্নীর প্রাণ গেছে জানান কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রুমন রহমান। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে কিছু আলামত পাওয়া গেছে। সেগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর জানা যাবে আরও কোনও ঘটনা আছে কি না। ওই প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

তিন্নীর আত্মহত্যার বিষয়ে সার্বিক তথ্য জানতে চাইলে শৈলকুপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম জানান, তিন্নির মৃত্যুটি রহস্যজনক। হয়তো হামলাকারীরা তার সঙ্গে এমন কিছু করেছে, যে কারণে সে আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।

অন্যদিকে, তিন্নী হত্যার বিচার চেয়ে এবং তার মৃত্যুর ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করার দাবি জানিয়ে হতকাল শুক্রবার (২ অক্টোবর) বিকেলে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে মানববনন্ধন করছে তার সহপাঠীরা। খবর-বাংলাদেশ প্রতিদিন।

  • এসএইচ

 

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top