নতুন বিতর্কে রাবি ভিসি: নিজ নামে মাদ্রাসা চালু

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২০ ১৭:০৫; আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২০ ১৭:৪৫

ছবিঃ (সংগৃহীত)

নিজের নামে মাদ্রাসা স্থাপন করে এবার নতুন বিতর্কের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর এম আবদুস সোবহান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশাসনিক কাজে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিস্তর অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চলমান তদন্তের মধ্যেই যুক্ত হল আরেকটি বিতর্ক।

স্থাপিত মাদ্রাসার নাম ‘সোবহানিয়া আলকুরআনুল কারীম হিফজখানা’। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে নিজের নামে প্রতিষ্ঠানের নামকরণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।

এই ধরণের নামকরনে বিষয়টি নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয় বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের। তারা বলছেন, উপাচার্যের নামের সঙ্গে মিলিয়ে মাদ্রাসার নাম রাখা এক ধরনের অন্যায়।

তবে উপাচার্যের সম্মতির ভিত্তিতে এই নামকরন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাদ্রাসাটির নামকরণ কমিটির সদস্যরা। তারা বলছেন, উপাচার্যের নামের সঙ্গে মিল রেখেই মাদ্রাসার নামকরণ করা হয়েছে।

উপাচার্য সোবহানের উদ্যোগে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা হওয়ায় তার জন্য 'দোয়াও করতে' ও 'স্মরণে রাখতে' এমন নামকরণ। এমনটাই ভাষ্য কমিটির সদস্যদের।

এই বিষয়ে কথা হয় মাদ্রাসার নামকরণ কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ আলী হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, উপাচার্যের আমলে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে তার নামের সঙ্গে মিলিয়ে ‘সোবহানিয়া আলকুরআনুল কারীম হিফজখানা’ নামকরণ করার প্রস্তাব রাখি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও আমি পরামর্শ করে উপাচার্যের কাছে এই নামের প্রস্তাব রেখেছিলাম। ‘সোবহান' শব্দের বাংলা অর্থ পবিত্র। আমরা দোয়াও করবো, স্মরণ করবো যে, তিনি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। উপাচার্য নামটি রাখার ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছেন।

উপাচার্যকে এই নামের প্রস্তাব দিলে তিনি তাতে সম্মত হন বলে ও জানান তিনি। তিনি জানান, নামকরণের আগে উপাচার্যকে বলেছিলাম, আপনার জন্য দোয়া করবো। আপনার উদ্যোগে যখন মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হলো, আপনার জন্য দোয়া করতে আমরা বলবো, উনার নামে দোয়া করো। তাই উপাচার্যের নামের সঙ্গে মিলিয়ে নামকরণ করা হয়েছে। 

গত ৬ মে উদ্বোধন করা হয় প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবরস্থান জামে মসজিদের পুনর্নিমান। সম্প্রতি ওই মসজিদের দ্বিতীয় তলায় ‘সোবহানিয়া আলকুরআনুল কারীম হিফজখানা’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নভেম্বর মাস থেকে এ হাফিজিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানা গেছে।

কথা হয় মসজিদের ইমাম মোসাদ্দেক হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, হাফেজিয়া মাদ্রাসায় নভেম্বরের শুরুতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হবে। প্রাথমিকভাবে ২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির পরিকল্পনা রয়েছে। মাদ্রাসার ২ জন শিক্ষকের দ্বারা তাদের পড়ানো হবে। ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। আবাসিক এই প্রতিষ্ঠানে থাকা-খাওয়াসহ সর্বমোট ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ২০০ টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, উপাচার্যের নামের সঙ্গে মিলিয়ে মাদ্রাসার নামকরণ যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই এটা এক ধরনের অন্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদে কারো নাম দিতে গেলে বিভিন্ন কমিটির সিদ্ধান্ত লাগে। একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে অনুমোদন দরকার হয়। এক্ষেত্রে অনুমোদন হয়েছে কি না, সেটা আমি জানি না। তবে উপাচার্যের নামে মাদ্রাসার নামকরণ করার কোনো কারণ নেই।  

সার্বিক বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।  

  • এসএইচ

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top