আ‘লীগ নেতার কীটনাশক প্রয়োগ

পরিচর্যায় রক্ষা পেল আলোচিত অর্ধশত তালগাছ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা | প্রকাশিত: ৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৩:২৫; আপডেট: ৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৩:২৭

রাজশাহীর বাগমারায় আওয়ামীলীগ নেতা শাহারিয়া আলীর বিরুদ্ধে ভবানীগঞ্জ-হাটগাঙ্গোপাড়া সড়কের বাইগাছায় এলাকায় প্রায় অর্ধশত তালগাছ কীটনাশক প্রয়োগ করে মেরে ফেলার উপক্রমের গাছগুলো অবশেষে পরিচর্যায় রক্ষা পাচ্ছে। নির্বোধ শাহরিয়া আলী নিজের পুকুরপাড়ের আমগাছ রক্ষার জন্য রাস্তার পাশের তাল গাছে তরল জাতীয় বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করে। এর পর গাছ গুলো নিশতেজ হতে থাকে। ওই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসনসহ আদালত।

এ নিকৃষ্ট কাজে মহামান্য আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে শাহরিয়া আলীকে আদালতে তলব করেন। সেই সাথে তালগাছগুলো রক্ষায় উপজেলা কৃষি অফিসারকে নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশনায় কীটনাশক প্রয়োগকৃত তালগাছ রক্ষায় কাজ শুরু করেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা। কৃষি অফিসারের নিবিড় পরিচর্যায় মৃতপ্রায় তালগাছ মারা যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে তালগাছের বাকল তুলে সেখানে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছিল। সেই বিষক্রিয়ায় সড়কের পাশে থাকা তালগাছ গুলো মরার উপক্রম দেখা দেয়। কৃষি অফিসের তত্ত্ববধানে বর্তমানে ওই সকল তালগাছে নতুন করে পাতা এসেছে। গাছ গুলো আগের অবস্থায় ফিরে আসতে শুরু করেছে। পরিবেশ বান্ধব তালগাছ রক্ষা পাওয়ায় সেখানের পরিবেশটা বর্তমানে অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে পড়েছে। রাস্তার দুই পাশে পরিবেশ বান্ধব এই তালগাছ একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করবে অন্যদিকে প্রাকৃতিক বর্জ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা করবে লোকজনকে।
উপজেলা প্রকৌশলী দেশব্যাপি রাস্তার পাশে তালগাছ রোপনের অভিযান বাস্তবায়ন করতেই প্রায় ১০-১২ বছর আগে ওই রাস্তায় সারিবদ্ধ ভাবে তালগাছ লাগিয়েছিলেন। গাছগুলো বেশ তারতাজা হওয়ায় পাশের পুকুরের মালিক আ’লীগ নেতা শাহরিয়া পুকুর ধারের নিজ রোপণের আম গাছ বাড়াতে তালগাছ গুলো মেরে ফেলতে চেয়ে ছিল।

গতকাল শনিবার ওই গাছ গুলো দেখতে গিয়ে গাছের নতুন পাতার অস্তিত্ব এসেছে। ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য এমরান হোসেন বাবু ও জনৈক বেলাল হোসেনের বলেন, প্রথমে তালগাছ বিষক্রিয়ায় মরতে লাগলেও এখন গাছ গুলোতে পাতা গুজাচ্ছে। স্থানীয় কৃষি অফিসার এসে বিভিন্ন পদ্ধতি ও প্রয়োগকৃত কীটনাশক প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে গাছগুলো বেঁচে যাচ্ছে। এখন তালগাছে আগের মতোই পাতা বের হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক সাথে ৪৭টি তালগাছে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছিল। ঘটনাটি মহামান্য আদালত আমলে নেয়। পরে সেই তালগাছগুলো রক্ষার জন্য আদালতের নির্দেশনায় পরিচর্যা করা হয়। প্রায় ১ মাস ওই সকল তালগাছে বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক প্রতিরোধক ব্যবহার করে বর্তমানে কৃষি অফিসের নিবিড় পরিচর্যায় মৃতপ্রায় তালগাছগুলো সেরে উঠছে।
অপর দিকে সম্প্রতি তালগাছ গুলো প্রশাসনের পক্ষে পরিদর্শন যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ,এফ,এম আবু সুফিয়ান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগীতায় গাছ গুলো অনেকটা সেরে উঠেছে। বর্তমানে দু’ দফায় বৃষ্টিতে গাছ গুলো অনেকটা সতেজ দেখাচ্ছে। আগামী বর্ষা কালে গাছ গুলো আরো সতেজ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

 

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top