মন্দিরের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা, ভুয়া সম্পাদক সেজে ৩ টন চাল আত্মসাত

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:৪০; আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৪৭

ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনা শহরের ‘শ্রী শ্রী নরসিংহ জিউর আখড়া’ মন্দিরের নাম ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি দফতর থেকে তিন টন চাল তুলে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে আশিষ কুমার সরকার নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

চাল উত্তোলনের আবেদনে আশিষ কুমার সরকার নিজেকে মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক বলে দাবি করেছেন।

তবে ওই মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রী অসিত মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু সাহা কৃষ্ণ এ ঘটনাকে প্রতারণা বলে উল্লেখ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, তাদের মন্দিরের কমিটিতে আশিষ কুমার সরকার নামে কোনো ব্যক্তি নেই। তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

‘শ্রী শ্রী নরসিংহ জিউর আখড়া’ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এমন প্রতারণার ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। গত ২১ ডিসেম্বরের তারা জেলা প্রশাসকের কাছে এ অভিযোগ করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আশিষ কুমার সরকার নামে এক ব্যক্তি নিজেকে ‘শ্রী শ্রী নরসিংহ জিউর আখড়া’ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি বরাদ্দের তিন মেট্রিক টন চাল তুলে আত্মসাৎ করেছেন। চাল বরাদ্দের ওই ডিও লেটারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) স্বাক্ষর রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আশিষ কুমার সরকার নামে কেউ ‘শ্রী শ্রী নরসিংহ জিউর আখড়ার’ সদস্যও নেই।

এমনকি মন্দির কমিটির কেউ তাকে চিনেন না। মন্দিরের ভুয়া সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে তিন মেট্রিক টন চাল তুলে আত্মসাৎ করেছেন আশিষ কুমার। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে জালিয়াতি করেছেন তিনি। এ প্রতারণার ঘটনায় আশিষ কুমার সরকারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে ‘শ্রী শ্রী নরসিংহ জিউর আখড়া’ মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু সাহা কৃষ্ণ বলেন, আশিষ কুমার সরকার নামে আমাদের মন্দিরের কমিটিতে কোনো ব্যক্তি নেই। প্রতারণা করে মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক সেজে তিন মেট্রিক টন চাল তুলে আত্মসাৎ করেছেন ওই ব্যক্তি। আমরা কেউ আশিষ কুমার সরকারকে চিনি না।

যারা তাকে চাল দিয়েছেন তারা তো অব্যশই চিনেন। তাই ওই ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্বও তাদের। আমার এর যথাযথ বিচার চাই। যেন আর কেউ এমন প্রতারণা করার সাহস না পায়।

তিনি বলেন, গতবছর একটি মন্দিরের ধর্মীয় একটি অনুষ্ঠানের জন্য তিন মেট্রিক টন চালের আবেদন করে পেয়েছি এক টন। অথচ ভুয়া ব্যক্তিকে যাচাই বাচাই ছাড়াই প্রশাসন কিভাবে তিন টন চাল দিয়ে দিল বিষয়টা বুঝে আসছে না। এই প্রতারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে কর্মকর্তারা জড়িত আছে বলে আমার ধারণা।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বান্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, চালের বরাদ্দ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। নির্দেশনা অনুযায়ী বরাদ্দকৃত চাল দেওয়ার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর বাইরে আর কিছু জানি না।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া তাবাসুম বলেন, অভিযোগটা তো জেলা প্রশাসকের কাছে করেছে। এ বিষয়ে তদন্তের জন্য আমার কাছে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

বিষয়টি অবহিত করলে জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top