মসজিদে গিয়ে ম্যানেজারকে ধরে এনে ব্যাংকের টাকা লুট করে দুর্বৃত্তরা 

রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৫০; আপডেট: ২১ মে ২০২৪ ০১:৪৯

ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের শাখায় ডাকাতির আগে স্থানীয় মসজিদ থেকে ব্যাংকের শাখাটির ব্যবস্থাপককে ধরে নিয়ে যায়। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত ৭০-৮০ জনের সদস্য আলাদা গ্রুপে উপজেলা মসজিদ ঘেরাও করে মুসল্লিদের মোবাইল ফোন ছিনতাই, আনসার ও পুলিশের অস্ত্র ও গুলি লুট এবং সোনালী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা লুট করে দুর্বৃত্তরা।

ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। ওই মসজিদের ইমাম নুরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, এশার নামাজের সময় একদল অস্ত্রধারী মসজিদে ঢুকে পড়ে। ফরজ নামাজ শেষ করে দেখলাম সবার মুঠোফোন নিয়ে নিচ্ছে তারা।’

জানা গেছে, এসময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে ১০টি অস্ত্র ও ৩৮০ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেয়। ব্যাংকের অদূরে থাকা আনসার ব্যারাক থেকে ৪টি অস্ত্র ও ৩৫টি গুলি ছিনিয়ে নেয় সশস্ত্র এ সন্ত্রাসীরা। ওই সময় পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মারধরও করা হয়।

এদিকে বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে ব্যাংক লুটের পর অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার মো. নিজাম উদ্দিনকে প্রায় ১৭ ঘণ্টা পার হলেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় এখনো থানায় মামলা করেনি কেউ।

বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে রুমা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজাহান কালবেলাকে বলেন, উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, তবে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

বুধবার সকালে জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার (এসপি) সৈকত শাহিন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুমা সার্কেল মো. জুনায়েদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সোনালী ব্যাংক পরিদর্শন করেছেন।

এর আগে, মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটের অভিযোগ উঠেছে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে। এ সময় ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করা হয়।

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত ইউএনও) মো. দিদারুল আলম বলেন, রুমায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাণ্ডব চালিয়েছে। সোনালী ব্যাংক লুট, ব্যাংক ও ইউএনও অফিসের স্টাফদের মারধর করেছে। ঘটনার পরপরই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশের নিরাপত্তাকর্মীরা টহল কার্যক্রম জোরদার করে ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে।

তবে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা লুটের অনুমান করা হলেও, ঠিক কী পরিমাণ টাকা লুট হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

অন্যদিকে একটি সূত্র জানায়, ব্যাংকে টাকা সংরক্ষণ করা লোহার বাক্সের তালা খুলতে পারেনি। মূলত এ কারণে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. নেজাম উদ্দিনকে নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে, বুধবার বেলা ১১টার দিকে বান্দরবানের থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। তবে ব্যাংকের ভল্ট এখনো অক্ষত আছে বলে জানিয়েছেন থানচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মামুন।

তিনি বলেন, দুই ব্যাংক থেকে মোট ১৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা লুট করা হয়েছে। ডাকাতরা ভল্ট খুলতে পারেনি। কাউন্টারে রাখা টাকা নিয়ে গেছে তারা।

এর আগে দুটি গাড়িতে করে মোট ৩০-৪০ জনের একটি সশস্ত্র দল থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতিতে অংশ নেয়। থানচি থানার ওসি জসিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে আছি।

সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ওমর ফারুক বলেন, ডাকতরা ব্যাংক থেকে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। আমাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে অফিসিয়ালি ঠিক কত টাকা লুট হয়েছে তা তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না।




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top