গণহত্যার বিচারের দাবিতে শিবিরের বিক্ষোভ
ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি উন্মুক্ত করে দিতে হবে- শফিউল্লাহ
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৪; আপডেট: ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৭
ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি উন্মুক্তের দাবী এবং বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়সহ কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ গঠনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কলেজ কার্যক্রম সম্পাদক শফিউল্লাহ। বুধবার রাজশাহীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এক বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহের অংশ হিসেবে জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে ছাত্রশিবিরের রাজশাহী মহানগর শাখা এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। এর আগে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর রেলগেট থেকে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জিরো পয়েন্টে এসে একত্রিত হয়ে সমাবেশ করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোঃ শফিউল্লাহ বলেন, শহীদদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে বলতে চাই, ক্যাম্পাসগুলোতে আমাদের ছাত্র রাজনীতি উন্মুক্ত করে দিতে হবে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ গঠন করতে দিতে হবে। যারা সঠিক ছাত্র রাজনীতি করবে তাদেরকে ক্যাম্পাসে মুক্তভাবে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসগুলোকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যে ক্যাম্পাসে কোনো ইভটিজিং, মাদক কিংবা কোনো অন্যায় অবিচার থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, শাপলা চত্বর থেকে শুরু করে জুলাই ও ৫ আগস্ট পর্যন্ত সকল কিছুকে হার মেনে দিয়েছে এই গণঅভ্যুত্থান। যেই গণঅভ্যুত্থানে সাকিব আনজুম থেকে শুরু করে শহীদ আলী রায়হান, মুগ্ধ, আবু সাঈদ সহ অসংখ্য মুসলমানের রক্ত ঝরেছে। এর আগে বিডিআর হত্যাকাণ্ডসহ যত গণহত্যা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার, ২৪ এর গণহত্যা এই সকল গণহত্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। জুলাই গণহত্যা থেকে শুরু করে বিগত বছরগুলোতে যত গণহত্যা সরকার চালিয়েছে এর সাথে জড়িতদের এ বাংলার জমিনে এক ইঞ্চিও ছাড় দেওয়া যাবে না। ছাত্রশিবিরের কলেজ কার্যক্রম সম্পাদক বলেন, এই দেশ ২৪-র জুলাইয়ের সকল শহীদদের জন্য দ্বিতীয় বার স্বাধীন হয়েছে। ৫মে শাপলা চত্বরে গণহত্যা, পিলখানার গণহত্যা, ২৪ এর গণহত্যা সহ সকল গুম খুনের সাথে জড়িতদের অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তিনি ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে বলেন, ছাত্রলীগ এখন ইসকন রুপে বাংলাদেশে ফিরে এসেছে। এই শহীদদের মাটিতে কোন রকম সন্ত্রাসী সংগঠনের ঠাঁই দেওয়া যাবে না। জুলাই গণহত্যার মাধ্যমে এ জাতি দেখিয়ে দিয়েছে যে দেশে কখনও ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারী শাসন চলতে দেওয়া যাবে না। সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, আগামীতে রাজশাহীর মাটিতে কোন ফ্যাসিবাদী ও তার দোসরদের জায়গা হবে না। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ যেন কোনভাবেই মাথাচাড়া দিয়ে বাংলার জমিনে অরাজকতা করতে না পারে সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। জুলাইয়ের গণহত্যার ৩ মাস পার হয়ে গেলেও এখনো খুনিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। জুলাইয়ের গণহত্যায় যারা আমাদের ভাইদের হত্যা করেছেন তাদের গ্রেফতার করে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
তারা আরো বলেন, আমরা একাত্তরের গণহত্যা দেখি নাই, জুলাইয়ের গণহত্যা দেখেছি। একাত্তরে শুনি নাই হেলিকপ্টারে গুলি করতে, জুলাইয়ে গণহত্যায় পুলিশ বাহিনীকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করতে দেখেছি। হাজার হাজার ছাত্র জনতা হত্যা করা করেছে। আমরা আর এই বাংলার জমিনে গণহত্যা দেখতে চাই না। আমরা চাই একটা স্বাধীন দেশ, স্বাধীন ক্যাম্পাস। রাজশাহী নগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি সিফাত আলমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি শামীম উদ্দীনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলটির কেন্দ্রীয় এইচআরএম সম্পাদক সাইদুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আব্দুল মোহাইমিন, রাজশাহী জেলা পশ্চিমের সভাপতি রমজান আলী, রাজশাহী জেলা পূর্বের সভাপতি রুবেল হোসেন প্রমুখ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: