ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা: অভিযান চালানোর সময় হামলা, ইউএনওসহ আহত ৩

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২১ ০১:৫৩; আপডেট: ৯ অক্টোবর ২০২১ ০১:৫৮

সংগৃহীত ছবি

আজ শুক্রবার বিকেলে মেহেন্দীগঞ্জের ইউএনও মো. শাহাদাত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বরিশাল থেকে ডুবুরি দল এসে অস্ত্রটি (শটগান) উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে একটি স্পিডবোটে ইউএনও শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনসার সদস্যদের নিয়ে অভিযানে নামেন। সকাল ১০টার দিকে তাঁরা মেঘনার শাখা গজারিয়া নদীর সিকদারেরহাট এলাকায় অনেকগুলো ইঞ্জিনচালিত মাছ ধরার নৌকা দেখতে পেয়ে সেখানে যান। এ সময় তাঁদের দেখে জেলেরা হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে ইউএনওকে বহনকারী স্পিডবোটটিকে সজোরে ধাক্কা দেন। এতে ইউএনও স্পিডবোটের ওপর পড়ে গিয়ে তাঁর বাঁ পায়ে চোট পান এবং মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন আহত হন। এ সময় স্পিডবোটে থাকা আনসার সদস্য তুহিন মিয়া হাতে শটগান নিয়ে নদীতে পড়ে যান। পরে তাঁকে নদী থেকে তোলা হলেও শটগানটি পাওয়া যায়নি।

বরিশাল জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে সরকার ২২ দিনের জন্য ইলিশ আহরণ, বিপণন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে। এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হয় ৪ অক্টোবর। কিন্তু বরিশালের হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জসংলগ্ন মেঘনা নদীর অন্তত ১৫০ কিলোমিটারে স্থানীয় জেলেরা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মা ইলিশ শিকার অব্যাহত রেখেছেন।

হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জসংলগ্ন মেঘনা ও শাখা নদীতে প্রতিবছর নিষেধাজ্ঞার সময় এমন হামলার ঘটনা ঘটছে। গত বছরের ১৫ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ইলিশবোঝাই ৫-৬টি নৌকা আটক করার পর জেলেরা সংঘবদ্ধ হয়ে মেঘনা নদীতে হিজলার নৌ পুলিশের একটি দলের ওপর হামলা চালান। এতে দুই নৌ পুলিশ সদস্য ম‌নিরুল ইসলাম ও আবু জাফর আহত হয়েছিলেন। ওই বছরের ১৮ অক্টোবর মেহেন্দীগঞ্জসংলগ্ন জাঙ্গালিয়া এলাকার মেঘনা নদীতে মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা পুলিশ নিয়ে অভিযানে গেলে স্থানীয় দুই ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে হামলা হয়। ২১ অক্টোবরও ঘটে হামলার ঘটনা। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন।

নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও চলছে মাছ ধরা

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলাসংলগ্ন মেঘনার সাদিকপুর, আলীগঞ্জ ও মহিষা পয়েন্টের ৫০ কিলোমিটারজুড়ে চলছে মা ইলিশ নিধন। তেঁতুলিয়ার আমীরগঞ্জ, জাঙ্গালিয়া, কালাবদর নদীর লেঙ্গুটিয়া ও বামনীরচর পয়েন্টে অসাধু জেলোরা সকাল–রাতে মা ইলিশ নিধন করছেন।

জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির হিজলা উপজেলা শাখার সভাপতি জাকির হোসেন সিকদার অভিযোগ করেন, নিষেধাজ্ঞা শুরুর পর দুদিন মেঘনা নদীতে মৎস্য বিভাগ ও নৌ পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। গত বুধবার থেকে মেঘনায় অভিযান নেই বললেই চলে। এই সুযোগে শত শত জেলে উত্তরে পুরাতন হিজলা থেকে দক্ষিণে বালুরচর পর্যন্ত প্রায় ১৫০ কিলোমিটার মেঘনায় দেদার মা ইলিশ ধরছেন। আর মেঘনার জানপুর, খালিশপুর ও অন্তরবাম স্থানে বড় বড় ট্রলার নিয়ে মা ইলিশ ধরছে আরেকটি পক্ষ। মূল মেঘনাসহ হিজলার সবগুলো শাখা নদীগুলোতে মা ইলিশ ধরা হচ্ছে।

বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ‘জেলার নদ-নদীতে প্রতিদিন ৩৫টি টিম টহল দেয়। অভ্যন্তরীণ নদ–নদীতে এখন প্রচুর মা ইলিশ এসেছে। কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের সমন্বয়ে মা ইলিশ রক্ষায় সর্বশক্তি নিয়ে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। তবে কিছু লোভী জেলে অভিযান ফাঁকি দিয়ে মা ইলিশ ধরছে। আমরা তা–ও বন্ধ করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top