পথে পথে বাধা, ইচ্ছামতো সিল

ডেক্স রির্পোট | প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০২১ ২০:২৮; আপডেট: ২ জুন ২০২৪ ১৮:০৬

ফাইল ছবি

রাজশাহীর চারঘাটে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার পথে বাধা ও বুথের ভেতরে নৌকায় ইচ্ছামতো সিল মারার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া নৌকায় ভোট দেয়া হয়েছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য ব্যালট পেপারটি নৌকার এজেন্টদের দেখিয়ে বাক্সে ফেলতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেক ভোটার। আবার অনেক কেন্দ্রে বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থীর এজেন্ট দেখা যায়নি।

সরজমিন দেখা গেছে, শলুয়া ইউনিয়নের তাঁতারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হলিদাগাছী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, শলুয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও বামুনদীঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে। তবে প্রশাসনের পক্ষে তাৎক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এসব কেন্দ্রে প্রশাসনের স্টাইকিং ফোর্স পৌঁছালে তারা অবস্থানকালীন সময়ে পরিবেশ শান্ত থাকলেও প্রশাসন চলে গেলে আবারো কেন্দ্রে সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের হলিদাগাছী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নৌকায় ভোট না দেয়ার কারণে মোতালেব মণ্ডল (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে চাপাতি দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত ৩ জন আহত হয়েছেন।

আহত মোতালেব মণ্ডলের নাতি আশা আক্তার জানান, আমার নানা আর আমি একসঙ্গে ভোট দিয়ে বের হচ্ছিলাম। কেন্দ্রের বাইরে বের হতেই নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের লোকজন নৌকায় ভোট দিস নাই কেনো বলে প্রকাশ্যে আমার নানাকে এলোপাতাড়িভাবে চাপাতি দিয়ে কোপাতে শুরু করে। স্থানীয় লোকজন ও কয়েকজন পুলিশ সদস্য এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে নানাকে উদ্ধার করে প্রথমে চারঘাট ও পরবর্তীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। চাপাতির কোপে ওনার বুকে ও পিঠে গুরুতর জখম হয়েছে। এ ঘটনায় রুবেল ও মাসুদ নামে আরও দুজন আহত হয়েছে। এদিকে, শলুয়া ডিগ্রি কলেজ ভোটকেন্দ্রে কেন্দ্র দখল করার অভিযোগে প্রায় ত্রিশ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে। এ সময় কেন্দ্র দখলের ছবি তোলায় দৈনিক আজকের পত্রিকার চারঘাট প্রতিনিধি সনি আজাদ ও দৈনিক মানবজমিনের প্রতিনিধি সজিব ইসলামের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ছবি ডিলিট করা হয়েছে।

শলুয়া ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ভোটার সোহেল রানা (৩০) বলেন, আমার পরিবারের লোকজন ভোটকেন্দ্রেই যেতে পারেনি। সকালে এবং দুপুরে দুইবার ভোট দিতে গেলেও কিছু লোকজন হাসুয়া ও লাঠি হাতে বাধা দিয়ে রাস্তা থেকেই ফেরত পাঠিয়েছে। শলুয়ার তাঁতারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোটার সারোয়ার হোসেন (৩৫) বলেন, আমার ভোট আমি নিজে সিল মেরে দিতে পারিনি। আমার ভোট খাইরুল ইসলাম নামের একজন সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে দিয়েছে। শলুয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মাসুম বলেন, শিবপুর, হলিদাগাছী, শলুয়া কলেজ ও তাঁতারপুর কেন্দ্রে সরকারদলীয় কিছু ক্যাডার নৌকার পক্ষে জোর করে সিল মেরেছে। আমি প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও তারা কোনো সুুরাহা করেননি। সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আমি এর সমাধান চাই। সঠিক নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়তি রানী কৈরী জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেছি। আমরা থাকা অবস্থায় কোনো অপ্রতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে ভোট দেয়ার সময় একজন ভুয়া ভোটারকে আটক করে জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে।

তথ্য সূত্র: মানব জমিন।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top