মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনে ব্যাপক অনিয়ম

রাজশাহী-ভাঙ্গা রুটে টিকিটের টাকা টিটিসহ সংশ্লিষ্টদের পকেটে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৩২; আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২২ ০৭:০২

ফাইল ছবি

রাজশাহী-ভাঙ্গা রুটে চলাচলকৃত মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সাথে এ রুটের বিভিন্ন স্টপেজের টিকিটের টাকা যাচ্ছে টিটিসহ সংশ্লিষ্টদের পকেটে। যার কারণে বড় অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, অঞ্চলের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা করে বিগত ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের শেষ দিকে রাজশাহী টু ভাঙ্গা রুটে ৭৫৬ আন্তঃনগর মধুমতী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলাচল শুরু করে। সাপ্তাহিক বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকলেও মধুমতী এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাকী ৬ দিন নিয়োমিত চলাচল করে। রাজশাহী টু ভাঙ্গা রুটের মধ্যে স্টপেজ রয়েছে রাজশাহী-ঈশ্বরদী-পাকশী-ভেড়ামারা-মিরপুর-পোড়াদহ-কুষ্টিয়া কোর্ট-কুমারখালি-খোকশা-পাংশা-কালুখালি-রাজবাড়ী-পাচুরিয়া-আমিরাবাদ-ফরিদপুর-তালমা-পুখুরিয়া-ভাঙ্গা। মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়াঃ ফরিদপুর থেকে রাজশাহীর ভাড়া শোভন সাধারন ২১০ টাকা, ১ম শ্রেণীর চেয়ার ৩৭৫ টাকা, শোভন চেয়ার এর ভাড়া ২৫০ টাকা।

ট্রেনটি চলাচলের পর থেকে এ অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়ে উঠেছে। কিন্তু ট্রেনে কর্তব্যরত কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অনৈতিক কর্মকান্ড এবং রুক্ষ ব্যবহার যাত্রীদের মাঝে দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি এই রুটে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে চলছে যাত্রী যাতায়াত। টিকিটের টাকা রেলের ফান্ডে জমা না হয়ে যাচ্ছেযাচ্ছে রেলের টিটিদের পকেটে । রেলপথে এসব দেখার কেউ নেই। নিজেদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত সব কর্মকর্তারা।

রাজশাহী-ভাঙ্গা রুটে চলাচলকৃত যাত্রীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে, শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ লোক ট্রেনে টিকিট না কেটে ওঠে। ট্রেনে যে সব যাত্রীরা বিনা টিকিটে ওঠে তাদের কাছ থেকে আদায়কৃত টিকিটের টাকা চলে যায় টিটির পকেটে। প্রতিদিন এই রুটে পায় দেড় হাজার যাত্রী আসা যাওয়া করলেও টিকিট বিক্রির অর্থ চলে যায় টিটির পকেটে।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, এরুটে টিটি সাকিব একটি সিন্ডিকেট চালায়। তার ডিউটির দিন সিন্ডিকেট সদস্যরা প্রতিটি বগিতে গিয়ে টিকিট চেকের সময় টিকিটবিহীন যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা নিয়ে পকেটে পুরে। তাদের টিকিট না কেটে উঠার অপরাধে কোনো জরিমানাও করা হয় না। আর এ সুযোগে বেশির ভাগ যাত্রী অর্ধেক টাকা দিয়ে তাদের গন্তব্য পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে যাত্রীদের অর্থ সাশ্রয় হলেও লাভবান হচ্ছে ট্রেনের চেকাররা। আর রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ঠিকমতো অর্থ জমা না হওয়ায় বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এদিকে এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করলে যাত্রী সাধারণকে টিটিদের ক্ষোভের পাত্রে পরিণত হতে হয়।

অভিযোগ থেকে আরও জানা গেছে, পবিত্র রমজান মাসে বাজার-ঘাটে রমজানের পবিত্র রক্ষার্থে হোটেল সমুহ বন্ধ করে রাখা হয়। অথবা হোটেল গুলোতে লাল সালু (কাপড়) ঝুলিয়ে আড়াল করা হয়। কিন্তু মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের পানীয় সাথে সাথে অবাধে বিক্রী হচ্ছে সিগারেটসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য। এর সাথে রয়েছে হকারদের উপদ্রব। সব মিলিয়ে যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ চরমে পৌছেছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করে অবিলম্বে যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ হয়রানী বন্ধের জন্য জোর দাবী জানান।

 

 

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top