স্বস্তি ফিরেছে সবজি বাজারে

রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ৯ আগস্ট ২০২৪ ১৬:৫৮; আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৩৪

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে সরবরাহে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলেও কাঁচাবাজারে প্রভাব পড়েনি। স্বস্তি ফিরে এসেছে সবজির বাজারে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস ঠেকাতে ইতোমধ্যে ‘বাজার মনিটরিং’ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বাজারে সবজির দামও আগে থেকে কমতে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, কম দামেই কাঁচামালের সরবরাহ মিলছে । অন্যদিকে সরকার পতনের কারণে পণ্যপরিবহনে ব্যবসায়ীদের কোনো চাঁদা দিতে হচ্ছে না। এসব কারণে সবজির দাম কমেছে।

খুচরা বিক্রেতারা জানান, বাজারে বেশির ভাগ সবজির কেজি এখন ৫০-৬০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। অথচ সপ্তাহখানেক আগেও যা ছিল ১০০ টাকার কাছাকাছি। বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, কাঁঠালবাগান ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিভিন্ন সবজি মধ্যে পটোল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ও পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে লাউ, কাঁকরোল, করলা, বেগুন ও বরবটি কেনা যাচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। মরিচের বাজার আকাশছোঁয়া থাকলেও গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকায়, যা কয়েকদিন আগেই বিক্রি হয়েছিল ৩৫০ টাকার ওপরে।

সবজির পাশাপাশি দাম কমতে শুরু করেছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম। কেজিপ্রতি ২০ টাকা কমেছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন ডিম ১৫০ টাকা ও সাদা ডিম ১৪৫ টাকা দরে কিনেছেন ক্রেতারা।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আলু, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম আগের মতোই রয়েছে। প্রতি কেজি আলু ৬০ থেকে দাম বেড়ে ৬৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে দাম বেড়ে ১২০ টাকা, আদা (চায়না) ২৮০ থেকে দাম বেড়ে ৩০০ টাকা ও রসুন ২২০ থেকে দাম বেড়ে ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে প্রতি কেজিতে চালের দাম বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ টাকা।

একজন ক্রেতা বলেন, বাজারে জিনিসপত্রের দাম তো সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এত দিন দাম বৃদ্ধির জন্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করা হতো। এখন শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তন এসেছে। আশা করছি, দাম কমে আসবে।

পাইকারি বিক্রেতা ও আড়তদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সবজির দাম কমার পেছনের কারণ-

আগে বিভিন্ন জাগয়া থেকে পণ্য নিয়ে ঢাকার বাজারে আসার পথে বেশ কয়েকবার চাঁদা দিতে হয়। এসব চাঁদা নিতেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা। এদিকে রওয়ান বাজারের এক আড়তদার জানান, এই বাজারে পণ্যবাহী ট্রাকপ্রতি অন্তত ৫০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হত। তবে ৫ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দল পরিবর্তন হওয়ায় এসব চাঁদাবাজি বন্ধ রয়েছে।

বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার বলেন, রাস্তাঘাটে এখন চাঁদাবাজি বন্ধ। তবে সহিংসতা ও ডাকাতির আশঙ্কায় পণ্য পরিবহনে রাজি হচ্ছেন না অনেক ট্রাকচালক। ফলে বিভিন্ন জায়গায় ক্রেতার সংখ্যা কমেছে। এটাও পণ্যের দাম কমার অন্যতম কারণ হতে পারে।

রাস্তায় নতুন করে চাঁদাবাজির চেষ্টা:

ব্যবসায়ীরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের পর বিভিন্ন স্থানে দলটির নেতাকর্মী ও পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে গত তিন দিনে নতুন করে চাঁদাবাজির চেষ্টা করেছে কিছু ব্যক্তি। এসব ব্যক্তি নিজেদের বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মী বলে পরিচয় দিচ্ছেন। কেউ কেউ চাঁদার টাকা পাঠানোর জন্য ব্যবসায়ীদের কাছে বিকাশ নম্বরও দিয়ে গেছেন।

এদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গতকাল একদল শিক্ষার্থী চাঁদাবাজির বন্ধে প্ল্যাকার্ড হাতে সকলকে সচেতন করেন। তার পাশাপাশি হ্যান্ডমাইক দিয়ে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালান। মো. আফফান হোসেন (ছাত্র) বলেন, আমরা কারওয়ান বাজারের ফুটপাতে যে চাঁদাবাজি হয় সেটি আটকাতে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি দল কাজ করছি। এ ছাড়া ব্যবসায়ীরাও যাতে চাঁদা না দেন সে বিষয়ে সচেতন করছি।’



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top