চলে গেলেন এ টি এম শামসুজ্জামান

রাজ টাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৪:১২; আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৪:১৩

এ টি এম শামসুজ্জামান

গুজব নয়, এবার। অতীতে তাঁর মৃত্যুর গুজব উঠেছিল গোটা দশেকবার। প্রতিবারই সেসব গুজব মিথ্যা প্রমাণ করে নিজের অস্তিত্বের জানান দিতেন কিংবদন্তি এই অভিনেতা। গতকাল সকাল ৯টায় সত্যি সত্যি পরপারে পাড়ি জমালেন এ টি এম শামসুজ্জামান।

এমন মানুষ আর পাব না

আকবর হোসেন পাঠান ফারুক অভিনেতা ও সংসদ সদস্য

আমার জীবনে এ টি এম ভাইয়ের অবদান অনেক। আমার প্রথম ছবি ‘জলছবি’ থেকেই তিনি আমার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। পরিচালক এইচ আকবর সাহেবের বাসায় আমি আর এ টি এম ভাই রাতের পর রাত কাটিয়েছি। শীতের রাতে মাত্র একটি কাঁথা ভাগাভাগি করে নিয়েছি আমরা। ‘জলছবি’র পুরো পাণ্ডুলিপি করেছিলেন তিনি। আমাকে ধরে ধরে সংলাপ বলাতেন, অভিনয় শেখাতেন। এই মানুষটা ছিলেন আমার সরাসরি উপদেষ্টা। কোন ছবিটা করব, কোনটা করব না, সেটা নির্ধারণ করে দিতেন তিনি। বরাবরই আমি একরোখা স্বভাবের। এটা নিয়েও বোঝাতেন সে সময়। এমন মানুষ আমরা আর পাব না। দিন দিন কাছের মানুষগুলোকে হারিয়ে ফেলছি। একদিন আমিও হারিয়ে যাব। এটাই সত্যি। অনেক দিন হলো এ টি এম ভাই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেননি। আমাকে ফোনে বলতেনও। বোঝাতাম, বয়স হয়েছে, এখন আর অভিনয় করার দরকার নেই। কিন্তু তাঁর ভেতরের শিল্পীসত্তা এই বয়সেও ভালো চরিত্র খুঁজত।

করোনার কারণে এক বছর আমাদের দেখা নেই। তবে অন্তরের মাঝেই ছিলেন, আছেন। মাঝখানে আমি যখন জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে, তখনো আমার খোঁজ নিয়েছিলেন। সাহস দিয়েছিলেন বেঁচে থাকার। এ টি এম ভাই খুব সাহসী ছিলেন। একমাত্র মনের জোরেই এত দিন রোগে ভুগেও বেঁচে ছিলেন তিনি।

শেষ দেখা দেখতে সূত্রাপুর যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু শরীরটা সায় দিল না। আমিও তো অতটা সুস্থ নই। যা হোক, ওপারে এ টি এম ভাই ভালো থাকুন—এই দোয়া রইল।

ফেসবুক যখন শোক বই

বিদায় বলব না। না, আপনার মতো মানুষের বিদায় হয় না। আমরা যারা অভিনয় করি, তাদের তারকা আপনি। অনুসরণীয়, অনুকরণীয়। আপনাকে দেখেই শিখেছি। আপনার কথায় অনুপ্রাণিত হয়েছি। আপনার স্নেহে ধন্য হয়েছি। জানতাম, প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে আপনার শারীরিক উপস্থিতি থাকবে না। নিশ্চিত জানি, আপনি থাকবেন সবার অন্তরে বহু বহুদিন। যেখানেই থাকেন, ভালো থাকবেন।

তারিক আনাম খান অভিনেতা-নির্দেশক

আপনার ‘চাঁদ ভাই’ [গোলাম মোস্তফা] যেদিন আমাদের ছেড়ে গেলেন, আপনিও সেদিনটাকেই বেছে নিলেন! এ টি এম চাচা, আপনি সব সময় আমাদের মাঝেই থাকবেন। ওপারে শান্তিতে থাকুন, স্যার।

সুবর্ণা মুস্তাফা অভিনেত্রী ও সংসদ সদস্য

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে ঝরে গেল আরো একটি নক্ষত্র। সবার প্রিয় অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান। আমাদের এ টি এম ভাই। বর্ণাঢ্য যাঁর অভিনয়জীবন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী, প্রাণবন্ত, বিনয়ী, সহজ-সরল, সাদামাটা মানুষ। ছিলেন একজন আদর্শ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব...অনেক শিল্পীরই বিকল্প তৈরি হয় কিংবা করা যায়, কিন্তু এ টি এম শামসুজ্জামানের কখনোই কোনো বিকল্প ছিল না, আর তৈরি হবে কি না জানি না। এই মহান শিল্পীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

হানিফ সংকেত মিডিয়া ব্যক্তিত্ব

এত সহজ মানুষ ছিলেন, যাঁর সঙ্গে অকপটে সব কথা বলা যেত। সর্বদা সুপরামর্শ পেয়েছি তাঁর কাছ থেকে। অভিনেতার পাশাপাশি তিনি একজন চমৎকার লেখক, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও কাহিনিকার। যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন, এ টি এম শামসুজ্জামান আংকেল।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top