হতাশা ঠেলে উদ্যোক্তা হয়েছেন নাঈমা রিকা

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১১ মে ২০২১ ০২:৫৪; আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৩৭

নাঈমা রিকা

নাঈমা রিকা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মেয়ে। পড়াশুনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সংসার করছেন। এর পাশাপাশি হয়ে উঠেছেন উদ্যোক্তা। তাঁর উদ্যোক্তা হয়ে উঠার গল্প শুনেছেন রাজটাইমসের নিজস্ব প্রতিবেদক আব্দুর রাজ্জাক। চলুন জানি বিস্তারিত-


১. রাজ টাইমস২৪: ব্যবসার শুরুর দিকের গল্পটা যদি বলতেন?
নাঈমা রিকা: আসসালামু আলাইকুম। একদম শুরুর গল্পটা একটু অন্যরকম ছিল। অনেক বেশি ডিপ্রেশন এ চলে যাচ্ছিলাম, আর সেটা থেকে মুক্তির জন্যই একটা কাজ খুব দরকার ছিল। আমি যে খুব অবসর সময় কাটাতাম তা কিন্তু না। তখন আমার ১ বছরের ছোট শিশু ছিল। ব্যস্ত থাকতাম সারাদিন, তবু নিজের কিছু একটা করা উচিৎ এই জিনিসটা সারাক্ষণ মাথায় ঘুরতো। আর সেটা করতে না পারায় দিন দিন কেমন যেন হয়ে পড়ছিলাম। তখনই বাসায় থেকে যাতে কিছু করতে পারি এই প্ল্যান মাথায় নিয়ে কাজটা শুরু করেছিলাম। উদ্যোগটা শুরু করেছিলাম আমরা দুই ফ্রেন্ড মিলে মাত্র ২১০০ টাকা দিয়ে। এটা একদম প্রথম দিনের আমাদের উদ্যোগের কাঁচামাল কেনার ইনভেস্টমেন্ট ছিল।
পরবর্তীতে সেটা প্রসেস হয়ে পণ্যের ফাইনাল লুক আসতে আরো বেশ কিছু খরচ এবং অনেক পরিশ্রম ছিল। প্রথমেই বলেছি আমরা দুজনে শুরু করেছিলাম বিজনেসটা। কিন্তু কয়েকমাস যেতেই আমার সেই ফ্রেন্ড তার কিছু সীমাবদ্ধতার জন্য আর কন্টিনিউ করতে পারেনি।
আর তখন থেকেই সম্পূর্ন একাই আমার উদ্যোগ টা পরিচালনা করছি।

২. রাজ টাইমস২৪: কোন ধরনের পণ্য নিয়ে কাজ করছেন?
নাঈমা রিকা: আমি আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাতের কাজের পণ্য নিয়ে কাজ করছি। এটার মধ্যে মেয়েদের থ্রিপিস, বেবিড্রেস, পাঞ্জাবি, ওড়না, শাড়ি সবকিছুই সংযুক্ত।
আর নতুনভাবে শুরু করছি আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জের হ্যান্ডলুম পিউর রেশম সিল্কটা নিয়ে।। শুধুমাত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জের পণ্যই আমার উদ্যোগের পণ্য।


৩. রাজ টাইমস২৪: কোন ধরনের চিন্তা ভাবনা থেকে হাতের কাজের ড্রেস নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করলেন?
নাঈমা রিকা: আমি যখন উদ্যোগটা শুরু করেছিলাম তখন ভেবে দেখেছিলাম দুটো জিনিসঃ
ক. আমি কোন কাজ টা ভালো পারি এবং আগ্রহ নিয়ে করে থাকি
খ. আর কাজটা এমন হতে হবে যেটা আমি বাসায় বসেই যেন করতে পারি

এই দুটো ভাবনা থেকেই মূলত এই কাপড় নিয়ে উদ্যোগ। কারন খুব ছোটবেলা থেকেই আমি আমার আম্মার কাছে এই কাজ টা শিখি এবং পড়াশোনার অবসরে নিজের জন্য বিভিন্ন কিছু তৈরি করতাম নিজ আগ্রহেই।
অনেকদিন আগের কথা গুলো আজ মনে পড়ে যাচ্ছে। প্রায় ১৬ বছর আগের এই কথাগুলো। সময় কত দ্রুত চলে যায়।

৪. রাজ টাইমস২৪: ব্যবসার শুরুটা কি অনলাইনেই, নাকি অন্য কোনো উপায়ে ছিল?

নাঈমা রিকা: না, না, অন্য কোন উপায়ে ছিল না। এটা সম্পুর্ণই অনলাইনে। শুরু থেকে আজ অব্দি আমাদের সকল সার্ভিস অনলাইন বেজড।


৫. রাজ টাইমস২৪: কাজ করতে গিয়ে কখনো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন?

নাঈমা রিকা: কাজ করলে তো সমস্যা আসবেই। কাজ কখনোই সমস্যা ফেস না করে হয়না।
আমার ক্ষেত্রেও তাই। সবপ্রথমে আমি আমার উদ্যোগের কাঁচামাল সংগ্রহ নিয়ে বেশ সমস্যায় পড়েছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, এখন সেটা সলভ হয়ে গিয়েছে। তবে প্রতিদিন-ই আমাদের ছোট বড় বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে দিয়ে পার হতে হয়। সেগুলো নিয়েই এগিয়ে যেতে হয় সামনে, আমিও সেভাবেই এগুচ্ছি।

৬. রাজ টাইমস২৪: নতুন উদ্যোক্তারা এই পেশায় আসতে চাইলে তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?

নাঈমা রিকা: আমার সর্বপ্রথম পরামর্শ হলো, ধৈর্য্য এবং নিয়মিত থাকা৷ একটা কাজ শুরু করলে মিনিমাম একবছর কোন ধরনের প্রফিট ছাড়া কাজ করে যেতে হবে। সেলের চিন্তা করলেই হতাশা চেপে বসে। সেল যেটুকু হয় সেটা বোনাস প্রথম এক বছরে। এই প্রথম একটা বছর নিয়মিত থেকে টিকে থাকতে পারলেই পরে ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে।
আরেকটা কথা হচ্ছে, নিজের কাজ নিয়ে একদম ডিটেইলস জানা থাকতে হবে, যাতে কাস্টমারকে নিজের কাজ নিয়ে জানাতে পারেন। আর এখন একই পণ্য নিয়ে অনেকেই কাজ করে, তাই নিজের পণ্যের মধ্যে অবশ্যই ইউনিক চিন্তাভাবনার প্রয়োগ ঘটাতে হবে। এটা নিজের ব্র‍্যান্ডিং এর জন্য খুব দরকার। গতানুগতিক জিনিসপত্রের চাইতে এখন মানুষ ইউনিক কিছু খুঁজে।

৭. রাজ টাইমস২৪: উদ্যোক্তা জীবন সফল হতে কাদের ভূমিকা বেশি ছিল?

নাঈমা রিকা: একদম প্রথম থেকে এবং সবচাইতে বেশি ভূমিকা আমার হাজবেন্ডের। আমার কাজে সবচেয়ে বেশি হেল্প তার কাছ থেকে পেয়েছি, এখনো পাই।
আমার কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সে সবরকম সাহায্য করে।
আর আমার ছোটভাই সেও আমাকে আমার কাজে যখন যে হেল্প টা চেয়েছি করেছে।
একদম শুরু টা এরা ছাড়া পরিবারের আর কেউ জানতো না। তবে আব্বা আম্মাকে জানানোর পর যখন যতটুকু সাপোর্টের দরকার হয় করে।
এখন আলহামদুলিল্লাহ সবাই সাপোর্ট করেন।

৮. রাজ টাইমস২৪: বর্তমান প্রেক্ষাপটে আপনার ব্যবসা নিয়ে পরিকল্পনা কী?

নাঈমা রিকা: আমি আমার উদ্যোগ টা শুরু করেছিলাম খুব ছোটভাবে। এখন এই কোভিড সিচুয়েশনে গতবছর থেকেই যেটা দেখতে পাচ্ছি সেটা হলো অনলাইনে মানুষের কেনাকাটা প্রচুর বেড়েছে। যার ফলস্বরূপ আমার উদ্যোগ "Lite & Bright" এর ও সেল বেড়েছে, আলহামদুলিল্লাহ । কিন্তু আমি চাহিদানুযায়ী প্রোডাক্ট সাপ্লাই করতে পারছিনা। এখানে মেইন সমস্যা হচ্ছে পুঁজি এবং কারিগর।
এই দুটো সমস্যার সমাধান করে আমার উদ্যোগ টাকে আরেকটু বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে এই সিচুয়েশনে মানুষ ঘরে বসেই আমাদের সার্ভিস টা নিতে পারে। কেউ যাতে আমাদের " Lite & Bright" থেকে ফিরে না যায়।

৯. রাজ টাইমস২৪: আপনার উদ্যোগের সফলতার কথা জানতে চাই?

নাঈমা রিকা: সফলতা বলতে আসলে আমার মনে হয় আমি এখনো সফল হইনি। এখনো স্ট্রাগল করেই যাচ্ছি।
তবে যেটুকু হয়েছে সেটা হলো আমার লেগে থাকার ফল। আমি ব্যবসা নিয়ে কিছুই বুঝতাম না। একদম বিজনেস সম্পর্কে কোন আইডিয়া না থেকেই কাজ শুরু করেছিলাম। শুধু ডিটেইলস জানতাম নিজের পণ্য নিয়ে।
আমি গতবছর " উই" গ্রুপে জয়েন হই। সেখান থেকেই টুকটাক বিজনেস নিয়ে জানাটা শুরু। এখনো সেখান থেকেই শিখে যাচ্ছি। প্রথম একবছর বারবার হতাশ হতাম, আবার উঠে দাঁড়াতাম। কিন্তু ছেড়ে দিইনি। আর তারই ফলস্বরূপ আজ এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। আমি একটা কথা জানাতে চাই সেটা হলো, ব্যবসার প্রথমদিকে অনেকে এটা নিয়ে হাসি তামাশা করে। বিভিন্নভাবে মন ভেংগে দেয়ার চেষ্টা করে। এগুলো ডিরেক্ট ইগনোর করতে হবে। খুব বেশি না, আপনার কাছের ২/৪ জন মানুষের সাপোর্ট পেলেই বাকিদের কথায় মোটেও কান দেয়া যাবে না। আলহামদুলিল্লাহ, আমি সেই সাপোর্ট টা পেয়েছিলাম। তাই আমি অনেক নেগেটিভ কিছুকে ইগনোর করতে পেরেছিলাম।
আর আমি আমার কাজ টা যখন শুরু করি তখন মাত্র ২ জন আমার বর আর আমার ভাই জানতো। ধীরে ধীরে এখন আমার অন্যান্য আত্নীয় স্বজন, পরিবারের সবাই এবং আমার অধিকাংশ ফ্রেন্ড সবাই জানে আমার উদ্যোগের ব্যাপারে। আমি নিজ থেকে প্রথমে কাউকে সেভাবে বলিনি। জানি এটা ঠিক না, নিজের কাজ নিয়ে সবাইকে জানানো উচিৎ। কিন্তু আমি প্রথমে সেটা করতে পারিনি। এর কারন স্বরুপ
আরেকটা ছোট্ট কথা শেয়ার করি, মানে সুযোগ যখন পেয়েছি একটু নিজের গুনগান করে নিই এই আর কি,হা হা। পড়ালিখা জীবনের একদম শুরু থেকে খুব ভালো স্টুডেন্ট ছিলাম। বলা যায়, ওই সময় লিখাপড়ার জন্যই মানুষ চিনতো। ফাইভে, এইটে বৃত্তি, এসসি, এইচ, এসসি তে ভালো রেজাল্ট, পরবর্তীতে ক্যাম্পাস লাইফেও টপ রেজাল্ট থাকতো ডিপার্টমেন্টে। আমি রাজশাহী ইউনিভার্সিটির ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের স্টুডেন্ট ছিলাম। আর আমার বাবা মা সহ আমার অধিকাংশ আত্নীয়স্বজন ই শিক্ষক। সব মিলিয়ে পড়ালিখা এবং জব এটাই রক্তে মিশে ছিল। আর নিজেরও সেরকম ই একটা টার্গেট ছিল। কিন্তু আমার এম.এস শুরুর সময় আমার ছেলের জন্ম হয়। এরপর এম এস টা খুব কষ্ট করে কমপ্লিট করে কিছুদিন পরেই ঢাকা আসি। এর মাঝে আরও কিছু কারনে আমি পড়াশোনা থেকে অনেক দূরে সরে যায়। আর এই জিনিস টায় আমাকে ভেতরে ভেতরে একদম শেষ করে দিয়েছিল। যে আমি পড়াশোনা ছাড়া একদম কিচ্ছু বুঝতাম না, সেই আমি পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারতাম না। আর জব করার মতো সিচুয়েশন না থাকায় জবের জন্য প্রিপারেশন ই নিতে ইচ্ছা করছিলনা আর। আসলে ওই সময় টা মানসিকভাবে খুব খারাপ সময় পার করেছি। বাবা মা সহ নিজেও জানতাম একটা জব করবো৷ কিন্তু পরে যখন আমি পুরো সিচুয়েশন টা অন্যরকম দেখলাম তখনই খুব ভেংগে পড়েছিলাম। ফ্রেন্ডসার্কেল এর সবার জব, পরীক্ষা এসব দেখে নিজে খুব হীনমন্যতায় ভুগতাম। একটা সময় খেয়াল করলাম এভাবে থেকে আসলে আমার ভালো কিছু হচ্ছে না। আমি কেমন যেন খিটখিটে হয়ে যাচ্ছি, যার প্রভাব আমার ছেলের উপরও পড়তো। তখন ই ঠিক করেছিলাম, এই ডিপ্রেশন থেকে বের হতে হবে। এটা থেকে বের হতে না পারলে আমার সামনের দিনগুলো আরো খারাপ হয়ে যাবে। কিছু একটা আমার নিজের একটু পরিচয়ের জন্য করা লাগবে। তখন দেখলাম আমার চারপাশের মানুষ এবং আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ড সবাই আমার ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে জানত। নিশ্চয়ই পড়াশোনা বাদ দিয়ে এই কাজ করাটাকে কেউ ভালো ভাবে নিবেনা। তাই একদম প্রথম থেকেই একরকম সবার থেকে ডিটাচড হয়েই শুরু করেছিলাম কাজ টা। আমার আত্নীয় স্বজন ফ্রেন্ড কেউ ছিলনা আমার ফেইসবুকফ্রেন্ডলিস্টে। কারন আমি জানতাম, একদম শুরুতে সবার এত নেগেটিভ কথাবার্তা আমি নিতে পারবোনা, এমনিতেই মানসিক অবস্থা তখন খুব একটা ভালো ছিলনা। সম্পুর্ণ নতুনভাবে আমি শুরু করেছিলাম। কিন্তু আমার কাজ দেখে পরবর্তীতে সবাই জেনেছে এটা আমার উদ্যোগ এবং নিজ থেকেই তারা আমার সাথে এড হয়েছে। এখন আমাকে অনেক উৎসাহ দেয়, সাপোর্ট করে সবাই।
এমনকি আমার ফ্যামিলি এবং ফ্রেন্ডদের একটা বিশাল অংশ এখন আমার উদ্যোগের ক্রেতা।

এই সাপোর্ট গুলো এখন আমার কাজকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহস যোগায়।

আমার উদ্যোগ শুরুর একবছরের মধ্যেই আমার ২য় বেবি হয়। তবুও উদ্যোগের কাজ টুকটাক চলতো। একদম বন্ধ করে রাখিনি। ছোট ছোট দুই বেবি প্লাস সংসার সবিকছু সামলিয়েই আলহামদুলিল্লাহ উদ্যোগের কাজ টা করতে পারছি এই ই কমার্স এর বদৌলতে।
অনেক বেশি পরিশ্রম করার ইচ্ছা আর ধৈর্য্য এই দুটোর সমন্বয় নিয়েই এগিয়ে চলছি। আমার এই গল্পে আমার চাঁপাইনবাবগঞ্জের সেসকল মেয়েদের কথা বলতে চাই, যাদের হাতের ছোঁয়ায় আমার কাজগুলো পূর্ণাঙ্গ রুপ পায়। আমার প্রতিটি পণ্যের ম্যাটেরিয়াল নিজে যাচাই করে কিনে এনে ডিজাইন ড্র করি। তারপর সেগুলো সুতোর কারুকাজে সেজে উঠে আমার জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের নারীদের কাছে।
এই যে ১৫ থেকে ২০ জন মহিলাকে নিয়ে আমি আমার কাজ টা করি, এতে কিন্তু এই কোভিড সিচুয়েশনে তাদেরও খুব হেল্প হয়। তারা নিজেরাও তাদের পরিবারে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে পারছে এই কাজটার বিনিময়ে এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।
তাদের জন্য অনেক কিছু করার ই পরিকল্পনা আছে ভবিষ্যতে।


১০. রাজ টাইমস২৪: উদ্যোক্তা জীবনের শুরু কতদিন ধরে এবং রেভিনিউ কেমন?
নাঈমা রিকা: উদ্যোক্তা জীবনের শুরু ৩ বছরের বেশি সময় ধরে এবং রেভিনিউ প্রায় ৪ লক্ষের কাছাকাছি।

১১. রাজ টাইমস২৪: মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
নাঈমা রিকা: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আমার কথাগুলো বলার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। ভালো থাকবেন আর আমার জন্য দোয়া করবেন।

 

 

এসকে




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top