রোগীদের ভারতমুখিতা কমবে

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:৫৬; আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৩৫

ছবি: সংগৃহীত

দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আস্থাহীনতা দীর্ঘদিন ধরে। অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিক গড়ে তুলে চিকিৎসার নামে রেগাী জিম্মি করে গলাকাটা বিল আদায়, কারণে অকারণে রোগীদের টেস্ট করতে ডায়াগনস্টিক সেটারে পাঠিয়ে কমিশন বাণিজ্য, রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসকদের যচ্ছেতাই আচরণ, এমনকি সরকারি হাসাপাতালগুলোতে অব্যবস্থাপনায় রোগীরা বিদেশমুখি হচ্ছেন।

বিশেষ করে সামান্য রোগেই ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নেয়া ফ্যাশন এবং সামাজিক মর্যাদযার পর্যায়ে চলে গেছে।

থাইল্যা-, সিংগাপুরেও রোগীরা চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে। কিন্তু নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন দায়িত্ব গ্রহণের পর মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও আশা জাগাচ্ছে। যে প্রক্রিয়ায় তিনি ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিট গঠন করে তা চালিয়েছেন তাতে মানুষ তার ওপর যথেষ্ট আশাবাদী। ইতোমধ্যে তিনি দেশের চিকিৎসা সেবা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

ডাক্তারদের ঢাকার বদলে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এমনকি তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর অবৈধ ক্লিনিক ও হাসপাতাল চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া জোরদার করেছেন। গতকালও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে অরাজকতা সহ্য করা হবে না।

বিশেষজ্ঞা বলছেন, নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী যে ভাবে অগ্রসর হচ্ছেন তাকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় উন্নতি ঘটবে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে শৃংখলা, বেসরকারি হাসাপাতালগুলোয় নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসকদের আরো মানবিক করতে পারলে রোগীদের চিকিৎসা নিতে বিদেশ যাওয়া কমে আসবে। বিশেষ করে কথায় কথায় ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার মানসিকতা কমে আসবে।

নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই দিনের পর দিন চলছে চিকিৎসা। নেই সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী অবকাঠামো। এক্সরে মেশিন এমন জায়গায় বসানো হয় যেখানে ন্যূনতম সুরক্ষা-ব্যবস্থা নেই। এতে এক্সরে করতে আসা রোগী, যিনি এক্সরে করাচ্ছেন তিনি এবং আশপাশের মানুষ ভয়াবহ রেডিয়েশনের শিকার হচ্ছেন। রি-এজেন্ট অর্থাৎ কেমিক্যালের পাশে রাখা হচ্ছে তরকারি। ব্যবহৃত ইনজেকশন ও অন্যান্য মেডিকেল যন্ত্রপাতি রাস্তায় ফেলে রাখা হচ্ছে।

যা পরবর্তীতে মাদকসেবীদের কাছে চলে যাচ্ছে। পাশাপাশি এসব হাসপাতালে নিম্নমানের রি-এজেন্ট, ভুয়া চিকিৎসক, অনভিজ্ঞ নার্স ও অদক্ষ আয়া দিয়ে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। অর্থাৎ চিকিৎসার নামে দেশব্যাপি মরণব্যবস্থা চালু আছে। এটা যেন দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রতিদিনের চিত্র। অবশ্য দেশের সব বেসরকারি হাসপাতালেরই একই অবস্থা নয়; অনেক হাসপাতালই ভালো চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। কিন্তু ব্যবসায়ীক দৃষ্টিভঙ্গি বা কমিশন বাণিজ্যে দেশের চিকিৎসকদের প্রতি মানুষের বিশ্বাস বা আস্থা ফিরছে না। তাই অধিকাংশ মানুষ দেশের চিকিৎসা সেবা নিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

কষ্টসাধ্য বা সামর্থ্য না থাকলেও ভালো সেবা পেতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিদেশমুখী হচ্ছেন। যদিও দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে খোদ বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রীই সন্তুষ্ট নন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার দেড় মাস অতিবাহিত না হলেও ইতোমধ্যে একাধিকবার চিকিৎসা সেবা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। এমনকি নিজেও ভুক্তভোগী বলে স্বীকার করেছেন ডা. সামন্ত লাল সেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (স্বাস্থ্যসেবা) পক্ষে হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদন মতে, দেশে অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্ল্যাড ব্যাংকের সংখ্যা ১ হাজার ২৭টি। আর লাইসেন্স আছে ১৫ হাজার ২৩৩টি প্রতিষ্ঠানের। যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্ল্যাড ব্যাংকের যে সংখ্যা বলেছে বাস্তব চিত্র তার চেয়ে অনেক বেশি।

মানহীন এসব প্রতিষ্ঠানসহ চিহ্নিত নয়; এ রকম আরো অনেক প্রতিষ্ঠানের কারণে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার সুনাম দিন দিন ক্ষুন্ন হচ্ছে। আর তাই আগামীকাল মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ১০২৭ অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্ল্যাড ব্যাংক বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় মানুষের অস্থাহীনতা শুধুমাত্র পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চিকিৎসা সেবা নিতে যাওয়া রোগীর সংখ্যা দেখলে অনুমেয়। কয়েকমাস আগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের হেলথ কমিটির চেয়ারম্যান ও চার্নক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত শার্মার সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশিদের পছন্দের শীর্ষে ভারত।

বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ৮৪ শতাংশ। বছরে ২৪ লাখ ৭০ হাজার মেডিকেল ট্যুরিস্ট বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাচ্ছেন। এতে তাদের কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। যদিও এই সংখ্যা আরও বেশি কারণ অনেকেই ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়েও ভারতে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন। তিনি জানান, চিকিৎসাখাতে বাংলাদেশ আকর্ষণীয় স্থান মনে করছেন ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের রোগীদের আকর্ষণে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষাণা দিয়েছে ভারতের বিভিন্ন হাসপাতাল।

বর্তমান স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে দেশের জনগণকে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরাও। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর উচ্চ আদালতে যে তালিকা দিয়েছে, বাস্তবে এই সংখ্যা আরও বেশি হবে। জনবল বা তথ্য ঘাটতির কারণে হয়ত তাদের রিপোর্টে বাস্তব চিত্রটা উঠে আসেনি।

তারপরও সংখ্যাটা যাই হোক না কেন, অনুমোদন ছাড়া শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের একটি প্রতিষ্ঠানও চলতে পারে না। দ্রুত এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এখানে রাজনৈতিক বা অর্থের যতই দাপট থাকুক না কেন এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেওয়া উচিৎ নয়।

চিকিৎসা পেশা, মহৎ পেশা। এই পেশায় প্রবেশের আগে আর্তমানবতার সেবায় চিকিৎসকদের শপথ নিতে হয়। অনেক চিকিৎসক তাঁদের পেশাগত জীবনে প্রকৃত অর্থেই সেই শপথ মেনে চলেন। আবার অনেকেই শপথের কথা বেমালুম ভুলে বৈধ-অবৈধ নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনে তারা এতটাই ডুবে যান যে অনেকে সাধারণ মনুষত্ববোধটুকুও হারিয়ে ফেলেন। চিকিৎসক ছাড়াও এখন এমন অনেকে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ব্যবসা করছেন, যাঁদের নীতি-নৈতিকতার কোনো বালাই নেই।

এসব হাসপাতাল-ক্লিনিকে চিকিৎসার চেয়ে প্রতারণাই চলে বেশি। তার ওপর রোগীদের বহন করতে হয় অযৌক্তিক খরচের বোঝা। ফলে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতি জন্ম নিয়েছে। পাশাপাশি দেশের দরিদ্র মানুষের প্রধান ভরসা সরকারি হাসপাতালেও তদবির বা নিজস্ব লোক ছাড়া চিকিৎসা সেবা মিলে না বললেই চলে। এখানকার অনেক চিকিৎসক রোগীদের বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে পাঠাচ্ছেন কমিশনের লোভে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শুরু রাজধানীর সরকারি হাসপাতালের অনেক চিকিৎসককে কর্মসময়ের মধ্যেও কর্মক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। তারা সে সময় প্রাইভেট ক্লিনিক বা হাসপাতালে ছুটে বেড়ান। অনেক চিকিৎসক নামে-বেনামে একাধিক ক্লিনিক খুলে ব্যবসা করছেন। অথচ ১৯৮২ সালের মেডিকেল অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনেস্টিক সেন্টার চালানোর সুযোগ নেই।

এছাড়া সরকারি হাসপাতালে দালালের উৎপাত তো আছেই। উপজেলা পর্যায়ের অনেক হাসপাতালে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের এক-চতুর্থাংশকেও হাসপাতালে পাওয়া যায় না। সরকারি হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনসহ অনেক যন্ত্রপাতিই বিকল হয়ে থাকে, রোগীদের পাঠানো হয় নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। অপরদিকে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের একটি বড় অংশেরই কোনো অনুমোদন নেই। যেগুলোর অনুমোদন আছে, সেগুলোও সঠিকভাবে নিয়ম-কানুন মানে না।

বেড অনুযায়ী একটি ন্যূনতম যে কজন চিকিৎসক থাকার কথা বাস্তবে তার অর্ধেকও নেই। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স খুব কম ক্লিনিকেই পাওয়া যায়। যাদের নার্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, তাদের একটি বড় অংশের না আছে উপযুক্ত শিক্ষা, না আছে প্রশিক্ষণ। এমনকি অনেকে ওষুধের নামটাও ঠিকমতো পড়তে পারে না। ভুল ইঞ্জেকশনে রোগী মৃত্যুর ঘটনাও কম নয়। সেই সঙ্গে আছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সীমাহীন প্রতারণা। কিছুদিন আগে ঢাকার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ছয় মাস আগে মারা যাওয়া এক চিকিৎসকের সই করা রিপোর্ট বিতরণ করতে গিয়ে ধরা পড়েছে।

অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে উপযুক্ত টেকনিশিয়ানও নেই, নমুনা পরীক্ষা না করেই রিপোর্ট দেওয়া হয়। আর এসব কারণে চিকিৎসা সেবা নিতে মানুষ ভারতে ছুটছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই সচিবালয়ে স্বাস্থ্যখাতে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, অবৈধ ও অননুমোদিত সব হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতে অনেক সমস্যা রয়েছে, বিষয়টি আমি এক দিনে সমাধান করতে পারব না।

কিন্তু আমার মেসেজ হচ্ছে, এই অননুমোদিত ক্লিনিক, হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে। আমি নিজেও ভুক্তভোগী এগুলোর জন্য। এরপর প্রতিদিনই স্বাস্থ্যমন্ত্রী অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক বন্ধের হুশিয়ারি দেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশের আনাচে-কানাচে গজিয়ে উঠেছে হাজার হাজার অনিবন্ধিত ক্লিনিক-হাসপাতাল। ফলে অধিকাংশ হাসপাতালে প্রতিদিনই ঘটছে নানা অঘটন। সম্প্রতি স্বনামধন্য ইউনাইটেড হাসপাতালেও খৎনা করাতে গিয়েও অবহেলা বা ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে আয়ান নামে এক শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের তথ্যও নেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে। দেশজুড়ে এমন অবৈধ, নিবন্ধনহীন হাসপাতালের সংখ্যা হাজার হাজার।

যেগুলোর বেশির ভাগেরই নাম ও অবস্থান জানে না অধিদপ্তর। অনলাইনে আবেদনের পর স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টোকেন, সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করছেন ক্লিনিক মালিকেরা। এসব অবৈধ, নিবন্ধনহীন ক্লিনিক-হাসপাতাল বন্ধে নানা সময়ে অভিযান পরিচালিত হলেও আসলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং এই সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান ইনকিলাবকে বলেন, আমরা উচ্চ আদালতে ১০২৭ প্রতিষ্ঠানের যে তালিকা দিয়েছি, সেটা কম বেশি হতে পারে। এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে চিঠি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। ইতিমধ্যে অনেকগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। আগামীকাল মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ১০২৭ অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্ল্যাড ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা কাউকে ছাড় দেবো না। ডা. মো. মঈনুল আহসান বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলেও চিকিৎসা সেবা নিয়ে প্রত্যারণাও বন্ধ হবে।

পাশাপাশি আস্থাহীনতার কারণে মানুষ এতোদিন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চিকিৎসা নিতে গেলেও প্রতারণা ও আস্থা ফেরাতে পারলে মানুষ ধীরে ধীরে দেশেই চিকিৎসা নিবে। এখন সেটাই লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বন্ধ করার পর আবার কীভাবে সেগুলো চালু হয়? জানতে চাইলে ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক দেখার জন্য আমাদের আলাদা কোন জনবল নেই। একেক সময় একেকজনকে দায়িত্ব দিয়ে এটা করা হয়।

এছাড়া কোন দুর্ঘটনা যদি ঘটে বা সাংবাদিকরা যদি লেখেন তাহলে আমরা জানতে পারি। ফলে আমাদের এগুলো দেখার জন্য নির্দিষ্ট লোকবল ও ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দিতে হবে। তাহলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, এভাবে মাঝে মাঝে শুধু অভিযান চালিয়ে শৃঙ্খলা ফেরানো যাবে না। লাগাতার পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আলাদা একটা উইং তৈরি করা। তাদের পর্যাপ্ত জনবল ও সুযোগসুবিধা দিতে হবে। তারা সারাবছরই এগুলো মনিটরিং করবে। এর পাশাপাশি মফস্বলে স্থানীয় প্রশাসনকেও এর সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে।

প্রয়োজনে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। আর বন্ধ করাও কোন সমাধান না। যেগুলো তৈরি হয়েছে, সেগুলো কীভাবে সঠিকপথে আনা যায় সেই চেষ্টাও করতে হবে। তাহলেই গড়ে উঠবে সুশৃঙ্খল স্বাস্থ্য খাত।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top