বিগত বছরের তুলনায় কৃষি ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৪৩ শতাংশ

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:২০; আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪ ২১:২৭

ছবি: সংগৃহিত

পূর্বের বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে কৃষি ঋণ বিতরণ প্রায় ৪৩ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সার, বীজ, কীটনাশকের দাম, সেচ খরচ এবং মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে ঋণ বিতরণ। খবর টিবিএসের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা ধরা হলেও ব্যাংকগুলো তার চেয়েও বেশি বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১০২ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট এই দুই মাসে ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার ১২ দশমিক ৪১ শতাংশ পূরণ করে ফেলেছে। এই সময়ের মধ্যে তিন হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।

গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যাংকগুলো দুই হাজার ৬৭৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছিল যা লক্ষ্যমাত্রার ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ। অর্থাৎ, আগের বছরের তুলনায় ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ বেড়েছে এক হাজার ১৬২ কোটি টাকা।

অর্থনীতিবিদরা ঋণ প্রবৃদ্ধির বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে তা সূক্ষ্ণভাবে পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রতিবেদনে থাকা তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলো কৃষি ঋণ বিতরণে পিছিয়ে আছে। তবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ঋণ বিতরণ ৫০০ কোটি টাকা বাড়িয়েছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। সরকারি ব্যাংকগুলো যেখানে লক্ষ্যমাত্রার ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে, বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, কৃষি ঋণের প্রায় সব খাতে আগের বছরের তুলনায় ঋণ বিতরণ বেড়েছে। শস্য খাতে ঋণ বিতরণ আগের বছরের তুলনায় ৬৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৮১৮ কোটি টাকা। এছাড়া চলতি অর্থবছরের আগস্ট পর্যন্ত সময়ে লাইভ স্টক ও পোলট্রি ফার্মে ২৮৫ কোটি, ফিশারিজে ১০৪ কোটি, সেচ যন্ত্রপাতিতে ৪২ কোটি, অ্যাগ্রি ইকুইপমেন্টে ২০ কোটি, শস্য মজুদ ও বিপণনে ১৪ কোটি এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ খাতে ৯ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ বেড়েছে।

এছাড়া আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ক্লাসিফাইড ঋণও কমে এসেছে কৃষি ঋণে। গতবছরের আগস্ট শেষে ক্লাসিফাইড কৃষি ঋণ ছিল চার হাজার ৬৩ কোটি টাকা। যেটি মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ। চলতি বছরের আগস্ট শেষে ক্লাসিফাইড ঋণ কমে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৪৪ কোটি টাকা বা মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ০৫ শতাংশে। ক্লাসিফাইড ঋণ কমাতে ভূমিকা রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

প্রতিবেদন অনুযায়ী কৃষি ঋণের পুনরুদ্ধারও বেড়েছে আগের তুলনায়। ২০২২-২৩ অর্থবছরের আগস্ট পর্যন্ত চার হাজার ১২৩ কোটি টাকা ঋণ পুনরুদ্ধার হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ে পুনরুদ্ধারের পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা।

ক্ষেত্রবিশেষে কোনো ডাউনপেমেন্ট ছাড়াই তিন বছরের জন্য স্বল্প মেয়াদের কৃষি ঋণ পুনঃতফসিল করার সুবিধা দেওয়া হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতের নীতিনির্ধারণী এ প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, উৎপাদন কার্যক্রম গতিশীল ও পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে এ বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)-র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান টিবিএসকে বলেন, 'কৃষি খাতে অনেক আগে থেকেই ঋণ বাড়ার প্রয়োজন ছিল। বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে সেচ দিতে হয়েছে। সেকারণে চাষের খরচ বেড়ে গেছে। সেদিক থেকে দেখলে ঋণ বাড়াটা অবশ্যই ইতিবাচক।'

তবে, কোন এলাকা ও খাতে কী জন্য ঋণ প্রবাহ বেড়েছে এবং কোন ধরনের কৃষকেরা এই ঋণগুলো পাচ্ছেন সেটি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দেন তিনি।

নিউজের লিঙ্ক



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top