রাজস্ব আদায়ে ঘাটতিতে এনবিআর

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০২২ ০০:৫৩; আপডেট: ১৯ মে ২০২৪ ০৫:১৮

ফাইল ছবি

দেশে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতিতে পড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। শুল্ক-কর আহরণে ঘাটতিতে থাকা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এনবিআর ৬৭ হাজার ১০৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। খবর বণিক বার্তার

যদিও এ সময়ের জন্য তাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭১ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে শুল্ক-কর আদায়ে এনবিআরের ঘাটতি ৪ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। এনবিআরের ২০২২-২৩ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আয়ের সাময়িক বিবরণী থেকে এসব তথ্য পাওয়া গিয়েছে।

লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও গত বছরের তুলনায় বেড়েছে রাজস্ব আয়। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের রাজস্ব আয়ে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি।

২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য এনবিআরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা, গত অর্থবছরে যা ছিল ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৯৪ দশমিক ২৮ শতাংশ।

সাময়িক বিবরণী থেকে দেখা যায়, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে আমদানি ও রফতানি পর্যায়ে রাজস্ব, স্থানীয় পর্যায়ে মূসক, আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭১ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। এর বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ৬৭ হাজার ১০৪ কোটি টাকা। এছাড়া শুধু সেপ্টেম্বরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা, বিপরীতে আয় হয়েছে ২৬ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা। এ মাসে রাজস্ব আহরণে ঘাটতি ৮৩২ কোটি টাকা। তবে এ বছর আগস্টের থেকে সেপ্টেম্বরে ৪ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আয় হয়েছে।

এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থানীয় পর্যায়ে মূসক আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা, যার বিপরীতে আয় হয়েছে ২৪ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা। স্থানীয় পর্যায়ে ৯৫ কোটি টাকা মূসক আহরণে ঘাটতি রয়েছে। সেপ্টেম্বরে রাজশাহী, যশোর, সিলেট ও ঢাকায় (পশ্চিম) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম মূসক আহরণে হয়েছে।

কাস্টমস খাতে দপ্তরভিত্তিক এ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুল্ক করের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ হাজার ৪৩ কোটি টাকা। যেখানে আদায় হয়েছে ২২ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ শুল্ক-কর আদায়ে ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা। ১৭টি কাস্টম হাউজ ও কমিশনারেটের মধ্যে ১২টিতেই শুল্ক-কর আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঘাটতি রয়েছে।

এ অর্থবছরে ভ্রমণ করসহ অঞ্চলভিত্তিক আয়করের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা, কিন্তু এর বিপরীতে আয় হয়েছে ২০ হাজার ১০২ কোটি টাকা। আয়কর আহরণে ঘাটতি রয়েছে ৩ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। তবে ভ্রমণ কর আহরণে ৩০০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

এনবিআরের সাময়িক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, এ অর্থবছরের গত তিন মাসে মূল্য সংযোজন কর সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে। এ খাতে আয় হয়েছে ২৪ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা। ঘাটতি ৯৫ কোটি টাকা। এরপর আমদানি ও রফতানি পর্যায়ের রাজস্ব আয় হয়েছে ২২ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা। এ খাতে ঘাটতি রয়েছে ২ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা। অন্যদিকে প্রথম তিন মাসে আয়কর ও ভ্রমণ কর আয় হয়েছে ২০ হাজার ১০২ কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ ১ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা।

রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ঘাটতি থাকলেও এ বছর এনবিআর কিছু সুবিধা পাচ্ছে। মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়ায় এ সুবিধা পেয়েছে এনবিআর। দেশে মূল্যস্ফীতির কারণে সবকিছুর দাম বেড়ে গিয়েছে, যার ফলে মূসক আয়ের পরিমাণও বেড়েছে। সব মিলিয়ে এনবিআর এখন ভালো অবস্থায় আছে। অন্যান্য বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এ বছর এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব কিছু না, মাত্র ১২ শতাংশ। অন্যান্য বছরে ২০-২৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রাও ছিল। বরং সেগুলোই ছিল উচ্চাভিলাষী।

নিউজের লিঙ্ক



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top