গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার প্রত্যয় বিএনপির
রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২২ ২১:০৪; আপডেট: ২ মে ২০২৫ ২১:৫২
-2022-11-13-10-03-35.jpg)
ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে এক দফার ডাক দিলেন বিএনপি নেতারা। নিজেদের আর পেছনে ফেরার পথ নেই জানিয়ে সরকারকে পদত্যাগের দাবি জানান। খবর মানবজমিনের।
গতকাল ফরিদপুর জেলা সদরের আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউট মাঠে আয়োজিত গণসমাবেশে নেতাকর্মীরা এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সমাবেশে বৃৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সমাবেশে অংশ নিতে দুইদিন আগে থেকেই নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন ফরিদপুরে। গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়ায় বিকল্প উপায়ে, নানাভাবে তারা অংশ নেন সমাবেশে।
সমাবেশের দিন আশপাশের এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ রাখারও অভিযোগ করেছে বিএনপি।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই অবৈধ সরকার দেশে বাকশাল কায়েম করেছে। আগের দুইবারের মতো এবার দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। দেশে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নির্বাচনের পর আমরা জাতীয় সরকার গঠন করবো। এই রাষ্ট্রকে নতুন রূপ দেবো। রাষ্ট্রের মেরামত করবো। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়বো।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যে অগ্নিসন্ত্রাসের কথা বলে, তার হোতা আওয়ামী লীগ। দেশে ১/১১ আনার জন্য তারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে সরকার থেকে পদত্যাগ করেছিলাম। নির্বাচনে আমরা হেরে তা মেনে নিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, এই ফরিদপুরের মানুষ লড়াই করেছে ভোটের অধিকারের জন্য, মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য। এই লড়াই টিকে থাকার লড়াই। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। স্বাধীন দেশের স্বাধীনতার পতাকাকে রক্ষা করার লড়াই আমাদের। যে পতাকা রক্ষা করেছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, সেই নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে।
তরুণ যুবকদের কঠিন ইস্পাতের মতো দাঁড়াতে বার্তা দিয়ে বিএনপি মহসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার রাজনীতিকে ধ্বংস করেছে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ বলে সংবিধানে নাকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। আরে এক সময়তো ছিল। আওয়ামী লীগ তা বাতিল করেছে। আওয়ামী লীগ সব ধ্বংস করে দিয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। বন্দুকের জোরে তারা ক্ষমতায় আছে। কোথায়ও টাকা নেই, রিজার্ভের টাকা নেই। এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে দুর্নীতি করেনি। কোথাও কমিশন না দিয়ে কাজ করতে পারবেন না। ফরিদপুরের সমাবেশে ফখরুল আরও বলেন, কৃষকরা সেচের পানি পাচ্ছে না। টাকার অভাবে তারা কৃষি কাজ করতে চাচ্ছে না। আমাদের ছেলেরা মোটরবাইক চালাচ্ছে, হকারী করছে, এটা বড় কষ্টের। আমরা এমন স্বাধীন বাংলাদেশ চাইনি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের গণতন্ত্র কী আজ দেশের মানুষ জানতে চায়। তাদের গণতন্ত্র কেমন? আওয়ামী লীগ বার বার বলে তারা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। যারা আমাদের সমাবেশ করতে দেয় না, মানুষের জন্য কথা বলা যায় না, তাহলে এটা তাদের কিসের গণতন্ত্র। তারা গণতন্ত্রকে ভয় পায়। কারণ জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আলেম-ওলামাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে রেখেছে। আমাদের গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রেখেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত একযুগে এই সরকার ১০ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। দেশের সম্পদ লুট করে তারা বিদেশে পাচার করছে। সরকার কোথায় চুরি করেনি? মেগা প্রজেক্ট থেকে শুরু করে বেকার ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা পর্যন্ত চুরি করেছে। এখন বলছে রিজার্ভের টাকা চিবিয়ে খায়নি। আমরা বলি আপনারা রিজার্ভের টাকা চিবিয়ে নয় গিলে খেয়েছেন। আজকে দেশের ৪২ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। কিন্তু সরকার বলে আমরা মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি। কারা মধ্য আয়ের দেশে গেছে, কাদের আয় বেড়েছে, যারা চুরি করেছে, দুর্নীতি করেছে, সরকারের সঙ্গে রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক এ এফ এম কাইয়ুম জঙ্গি। সমাবেশে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বৃহত্তর ফরিদপুরবাসী এবার প্রমাণ করেছে ফরিদপুরের মাটি বিএনপি, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের ঘাঁটি। নানা বাধা উপেক্ষা করেও জনগণকে ঠেকাতে পারেনি। গত দুইদিন সভাপতি প্রধান অতিথি ছাড়াই কোমরপুরে সমাবেশ হয়েছে। এই দুইদিন সাধারণ মানুষ সমাবেশ করেছে। এই মাটির মানুষকে দমিয়ে রাখা যাবে না। এই সরকার এতই ভয় পেয়েছে, জলে-স্থলে, আকাশে-বাতাসে যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে। আমাদের সমাবেশের লাইভ প্রচার করবে, তাই নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিয়েছে। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, চুরির টাকা যা নিয়ে গেছেন, তা ফেরত আনেন। দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না। ৪৭ সালে একটা হয়েছিল সেটা অন্য কারণে। রাজনৈতিক কারণে নয়। এখন যদি হয় রাজনৈতিক কারণে হবে। ‘গলা টিপে ধরার দিন শেষ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সরকারের অধীনে কেউ ভোট দিতে পারবেন না। আমরা লড়াই করে ভোটের অধিকার আদায় করবো।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশে নির্বাচন হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হবে। সেই নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তার বার্তা বিএনপির সমাবেশ দেখলেই বুঝা যায়। আওয়ামী লীগ অনেক চেষ্টা করেছে, পথে পথে বাধা দিয়েছে সমাবেশ ঠেকাতে। বাস, টেম্পো সব বন্ধ করেও মানুষের বাঁধ ভাঙা জোয়ার ঠেকাতে পারেনি। ৬ জন সহকর্মী জীবন দিয়েছে ইতিমধ্যে। ৩৫ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সমাবেশ দেখে আওয়ামী লীগও এখন সমাবেশ করতে চায়। গতকাল একটা সমাবেশ করেছে। শুধু যুবলীগ নয়, যত লীগ আছে সবাইকে নিয়ে আসছে। একদিক দিয়ে ঢুকছে, আরেক দিক দিয়ে দেয়াল টপকে বেরিয়ে গেছে। আমীর খসরু বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বেই একটি পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ হবে। গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ রাস্তায় থাকবে। বিএনপি’র ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, যত বাধা আসুক না কেন, গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। সেদিন খালেদা জিয়া মুক্ত হবে। তারেক রহমান দেশে এসে নেতৃত্ব দিবেন।
রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক এমপি ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম বলেন, এমন এক যুগ সন্ধিক্ষণে আমরা বসবাস করছি, ইতিহাসের জঘন্যতম ফ্যাসিবাদ সরকার জগদ্দল পাথরের মতো আমাদের বুকে চেপে বসেছে। অবৈধ সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে, আর এক মুহূর্তও এ সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সরোয়ার, বিএনপি নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, বিএনপি নেতা সেলিমুজ্জামান সেলিম, এডভোকেট সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেজবাহ, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইয়াসীন আলী, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।
সমাবেশের আগের রাতের চিত্র: গত শুক্রবার রাত ৯টা। কোমরপুরে সড়কের ওপর তীব্র যানজট। ট্রাকে, পিকাপভ্যান, মোটরসাইকেল থেকে নামছেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। হাতে ব্যানার ফেস্টুন, গায়ে দলীয় নেতাকর্মীর ছবি ছাপা টি-শার্ট, মাথায় রঙ্গিন ক্যাপ। কারও কারও পিঠে ব্যাগ, হাতে ধানের শীষ। ততক্ষণে কানায় কানায় পূর্ণ আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠ। মঞ্চে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বক্তব্য দিচ্ছেন। মাঠের সামনের অংশে সামিয়ানা টাঙিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন কেউ কেউ। হাঁটাহাঁটিও করছেন অনেকে। সমাবেশ শুরুর ২/৩ দিন আগে আসা নেতাকর্মীরা মাঠের পশ্চিম প্রান্তে খোলা আকাশের নিচে, সবুজ ঘাসের উপর বিছানা করে শুয়ে পড়েন। স্কুল কলেজের বারান্দা, ক্লাস রুম ও মসজিদের বারান্দায় অবস্থান নিয়েছেন অনেকে। মঞ্চের ঠিক সামনে শত শত নারীরা বসে গল্পগুজব করছেন। কেউ সেøাগান দিয়ে নেত্রীদের সাহস জোগাচ্ছেন। রাত ১০টা। সমাবেশস্থল কোমরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে চলছে খিঁচুড়ি রান্না। কেউ রান্না করছেন, কেউ আবার সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের মধ্যে খাবার বিতরণ করছেন। একটা সময় রাতের খাবারের জন্য দীর্ঘ লাইন পড়ে। খাবার নিয়ে যে যার মতো করে খাচ্ছেন। দূর-দুরান্ত থেকে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। রাতে সামবেশস্থলে রাত্রিযাপন করেন হাজার হাজার মানুষ। এদিকে তীব্র শীত পড়ায় অনেকেই রান্নার চুলার কাছে আগুনের তাপ নেন। অনেকেই আশপাশে থাকা বাসাবাড়ির সামনে, বাগানে ও পুকুর পাড়ে দলবদ্ধ হয়ে রাত্রিযাপন করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন বাড়ির আঙ্গিনা ও বারান্দা দুই রাতের জন্য ভাড়া নিয়েছেন সমাবেশে আসা নেতাকর্মীরা।
এদিকে ফরিদপুর বিভাগীয় সামাবেশে মানুষের চাপ বাড়ায় গ্রামের অনেকেই সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের রাতে থাকার জন্য নিজেদের ঘরবাড়ি উন্মুুক্ত করে দেন। কোমরপুর গ্রামের মিয়া বাড়ির আব্দুস সালাম বলেন, বিএনপি’র সমাবেশে হাজার হাজার মানুষ আসছে। তাদের কেউ মাঠে-ঘাটে, পথে-প্রান্তরে রাত্রিযাপন করেছেন। থাকার জায়গা পাচ্ছেন না। শীত ও কুয়াশা পড়েছে। অনেক বয়স্ক লোক আছেন, তারা শীতে কাঁপছেন। এসব দেখে আমাদের গ্রামের মানুষ অনেকেই আশ্রয় দিয়েছেন। তারা রাতে বারান্দায় কিংবা ফাঁকা জায়গায় ঘুমিয়েছেন। আমাদেরে সামর্থ্য অনুযায়ী আমরা মেহমানদারি করার চেষ্টা করেছি। আমি নিজেই বাড়ির ৩টা ঘর বিএনপি’র নেতাকর্মীদের জন্য ছেড়ে দিয়েছি। অনেকেই বাড়ির উঠানে, বাগানে চাদর, জ্যাকেট, পাতলা কম্বল নিয়ে রাত্রিযাপন করেছেন।
সামবেশে ৩০ হাজার লোকের রান্না: গণপরিবহন বন্ধ থাকায় আগেভাগে বিভিন্ন স্থান থেকে সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন বিএনপি নেতারা। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রতি বেলায় প্রায় ৩০ হাজার লোকের রান্না করেন আয়োজকরা। এরমধ্যে ফরিদপুর জেলা বিএনপি’র উদ্যোগে প্রতি বেলায় দশ হাজার ও জেলা কৃষক দলের উদ্যোগে ৮ হাজার এবং গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী জেলা বিএনপি’র উদ্যোগেও পৃথকভাবে রান্নার আয়োজন করা হয়। নেতাকর্মীদের খাবারের সঙ্গে সবজি খিঁচুড়ি ও পানি দেয়া হয় শীর্ষ নেতাদের পক্ষ থেকে। বিএনপি’র ফরিদপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশকুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রান্নার আয়োজন করেছেন। সমাবেশের দিন সকাল পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম চলে।
ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্নের অভিযোগ: বিএনপি’র সমাবেশকে ঘিরে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন সমাবেশে আসা নেতাকর্মীরা। গতকাল সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ফরিদপুর সদর ও কোমরপুর এলাকায় ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন ছিল হাজার হাজার মানুষ। এতে বিপাকে পড়েছেন সমাবেশে আসা মানুষ ও স্থানীয়রা। বিপাকে পড়েছেন গণমাধ্যম কর্মীরাও। সমাবেশ কাভার করতে আসা সাংবাদিকরা মোটরসাকেল কিংবা ভাড়ায় চালিত রিকশা নিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়ে ইন্টারনেট সেবা নেন। কেউ কেউ ব্রডব্যান্ড সেবা নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ ঢাকায় সংবাদ প্রেরণের জন্য মোবাইলে ম্যাসেজ টেক্সড করছেন। বিএনপি নেতাদের দাবি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমাবেশের প্রচার ঠেকাতেই ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়।
যেভাবে সমাবেশে আসলেন নেতাকর্মীরা: বিএনপি’র সমাবেশের ৩ দিন আগেই ফরিদপুরের কোমরপুরে আসেন শরীয়তপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া জেলার নেতাকর্মীরা। শুক্রবার সকাল থেকে ৩৮ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু হলে বিপাকে পড়েন সমাবেশে আসা নেতাকর্মীরা। রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, মাহিদ্র, মোটরসাইল, ট্রাক, পিকআপ, ভ্যান ও মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে এসব জেলা থেকে আসেন তারা। অনেকেই পথে পথে সরকার দলীয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার ভয়ে নদীপথে ফরিদপুরে আসেন। ফরিদপুর জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন বলেন, সব বাধাকে উপেক্ষা করে গত ৩ দিন থরে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে এসেছেন। দলকে ভালোবেসে পায়ে হেঁটে, কেউবা ভ্যান, রিকশা, অটোরিকশা ও ইজিবাইকে ভেঙে ভেঙে দীর্ঘপথ অতিক্রম করে সভায় যোগ দেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: