ভূমিকম্পের ব্যাপারে সাবধান ও প্রস্তুতির এখনি সময়

মিয়ানমারের ভূকম্পন কক্সবাজারেও অনুভূত

রাজটাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:৫৯; আপডেট: ১৩ মে ২০২৫ ০০:১৫

ছবি: ফাইল

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মৃদু মাত্রার ভূমিকম্প ঘটে গেছে গতকাল শনিবার বিকেলে। বাংলাদেশ সময় ৪টা ৩৯ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডে আয়াবতি ও রাখাইন রাজ্যে এ দুই ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে কক্সবাজারেও। এটা ছিল একটি মৃদু মাত্রার ভূমিকম্প। কক্সবাজার মিয়ানমারের কাছে বলে কক্সবাজার অথবা চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতেও ভূমিকম্প বেশ ভালোভাবেই টের পাওয়া যায়। আঘাত হানা ভূকম্পন কক্সবাজার এবং ভারতের কিছু এলাকায়ও অনুভূত হয়েছে।

বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের বর্তমান সীমান্ত এলাকায় বার্মিজ ও ইন্ডিয়ান টেকটোনিক প্লেট মিশে আছে। এই দুই টেকটোনিক প্লেটের মধ্যবর্তী স্থানে অনেক শক্তি সঞ্চিত হয়ে আছে। অতীতে এই প্লেটের সংযোগস্থলে ছোট ছোট অনেক ভূমিকম্প হয়েছে। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট ছোট ভূমিকম্পের পরই হয়তো যেকোনো সময় বড় ভূমিকম্প ঘটে যেতে পারে। তাই সাবধান হওয়া এবং সম্ভাব্য বিপর্যয় সামাল দেয়ার প্রস্তুতি নেয়ার ওপর জোর দিয়েছেন তারা।

গতকালকের ভূমিকম্প সম্বন্ধে আবহাওয়া অধিদফতরের ড. মো: আবুল কালাম মল্লিক জানান, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল রাজধানীর আগারগাঁও আবহাওয়া অফিস থেকে ৩৭৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে মিয়ানমারে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.১।

ভূমিকম্পের তথ্য দিয়ে থাকে ডিসকভারি নামক একটি ওয়েবসাইট। এই ওয়েবসাইটটি বলছে, বঙ্গোপসাগর থেকে ১২৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে মিয়ানমারের আয়াবতি রাজ্যের পাথিন অঞ্চলেও সেখানকার স্থানীয় সময় বেলা ৩টা ৩৬ মিনিটে ৪.৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।

গতকালকের ভূমিকম্পের কারণে মিয়ানমার কিংবা পাশের কক্সবাজার এলাকায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। পাথিনের কিছুক্ষণ পরই রাখাইন রাজ্যে ৪.১ মাত্রার দ্বিতীয় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে, যার উৎপত্তি টেকনাফ থেকে ৯.৭ কিলোমিটার উত্তরে। এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ে মাঝারি মাত্রার আরেক ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের সিলেট জেলায়ও অনুভূত হয়েছিল। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, সেদিন ১৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটের ছাতকে ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ছাতকের ১১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ৪.৩ মাত্রার এই ভূমিকম্প হয়।

প্রসঙ্গ বাংলাদেশের আশপাশে এর আগেও বেশ কিছুদিন থেকে ছোট ছোট অনেক ভূমিকম্প হয়েছে। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট ছোট ভূমিকম্প থেকে যেকোনো সময় বড় ভূমিকম্প হতে পারে। বাংলাদেশের সিলেট-সুনামগঞ্জ হয়ে, কিশোরগঞ্জের ওপর দিয়ে চট্টগ্রাম হয়ে একেবারে দক্ষিণ সুমাত্রা পর্যন্ত চলে গেছে একটি ফল্টলাইন। এই ফল্টলাইনের যেকোনো অঞ্চলে বড় ভূমিকম্প হয়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও বার্মিজ এই তিনটি প্লেটই গতিশীল এবং এই তিন প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। দেশে বিপজ্জনক ভূকম্পনের প্রধান দু’টি উৎস হচ্ছে ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ডাউকি ফল্ট এবং টেকনাফ-পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চল নিয়ে সাবডাকশন জোন।

১৮৯৭ সালে ডাউকি ফল্টের পূর্ব প্রান্তে ৮.৭ মাত্রার একটি বড় ভূমিকম্প হয়, কিন্তু ডাউকি ফল্টের পশ্চিম প্রান্তে ৪০০ বছর ধরে বড় কোনো ভূমিকম্প হয়নি। এই প্রান্তে রয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের অবস্থান।



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top