'মানবিক' পুলিশ শওকত বরখাস্ত : কী হয়েছিল

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:৫০; আপডেট: ১২ মে ২০২৫ ১২:০০

ছবি: সংগৃহীত

রাস্তায় পড়ে থাকা নাম-পরিচয়হীন স্বজনহারা অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আলোচনায় আসা চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) কনস্টেবল শওকত হোসেনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

তিনি একটানা ৭১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় বিভাগীয় মামলা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সশরীরে হাজির হয়ে শওকত পুলিশের চাকরির চেয়ে মানবিক কাজকে অগ্রাধিকার দিবেন বলেও দাবি করেছিলেন। সেই আলোকে পুলিশ থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানায় সিএমপি।

সিএমপির উপকমিশনার (সদর) মোহাম্মদ আবদুল ওয়ারী বলেন, গত ১৬ এপ্রিল শওকতের চাকরিচ্যুতির আদেশে স্বাক্ষর করেন বন্দর বিভাগের উপ-কমিশনার শাকিলা সোলতানা। শওকত চাইলে সিএমপি কমিশনার বরাবর আপিল করতে পারেন।

শওকত হোসেন নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দা। ২০০৫ সালে তিনি পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন। শওকতের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাটি তদন্ত করেছেন কোতোয়ালি জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার অতনু চক্রবর্তী। তিনি বলেন, কর্মস্থলে ছুটি ছাড়া ৭১ দিন অনুপস্থিতির বিষয়টি আমি তদন্ত করেছি।

ছুটি ছাড়া ৭১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে তিনি কোনো প্রকার মেডিক্যাল সার্টিফিকেট বা ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি। আমি সেই আলোকে প্রতিবেদন দিয়েছি। বাকিটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিষয়।

চাকরিচ্যুতির আদেশে বলা হয়েছে, ‘৭১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত (শওকত হোসেন) শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় এবং বেওয়ারিশ মানুষ নিয়ে মানবিক কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব নয়, এমন বক্তব্য লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।’

২০১১ সাল থেকে কনস্টেবল শওকত হোসেন চট্টগ্রাম মহানগরীর অসহায়, দুস্থ ও বেওয়ারিশ মানুষদের চিকিৎসাসেবা দেয়া শুরু করেন। হাসপাতালের নিয়মিত দায়িত্ব পালনের পর তিনি মহানগরীতে ঘুরে ঘুরে স্বজনহারা, নাম-পরিচয়হীন অসুস্থ মানুষদের সেবা দিতেন, ওষুধপথ্য জোগাড় করে দিতেন। তার এই কাজটি পুলিশের ভাবমূর্তিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

২০১৯ সালে সিএমপির তৎকালীন কমিশনার মাহবুবুর রহমান তার সাথে আরো ১০ সদস্য যুক্ত করে সিএমপির মানবিক ইউনিট চালু করেন এবং আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি একটা অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সহযোগিতা করেন।

সর্বশেষ শওকত কর্ণফুলী থানায় বদলি হন। কর্ণফুলী থানায় কনস্টেবল পদে সাধারণ ডিউটি করে দিন পার করলেও সুযোগ পেলেই মহানগরীর বেওয়ারিশ রোগীদের সেবা দেয়া অব্যাহত রাখেন শওকত। দু’দিক সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন শওকত।

মাঝে অসুস্থ হয়ে পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সর্বশেষ কর্মস্থলে দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের আদেশ দেয়া হয়েছে।



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top