পুঠিয়া পৌরসভা নির্বাচনে যে কারণে আ’লীগের ভরাডুবি

আরিফ সাদাত, পুঠিয়া প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:৪৭; আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:২৩

 

রাজশাহীর পুঠিয়া পৌরসভা নির্বাচনে বর্তমান সাংসদের অনৈতিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ এবং তার মতদর্শীদের অসহযোগিতার কারণে আ’লীগের পরাজয় হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন দলীয় মেয়র প্রার্থী রবিউল ইসলাম রবি। তবে নেতাকর্মীরা বলছেন দল তৃণমূলের চাহিদা মোতাবেক ত্যাগী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি। অপরদিকে রবি মেয়র থাকাকালিন সময়ে একলা চলো নীতি অবলম্বন করার কারণে অনেক নেতাকর্মীরা তার উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। যার প্রতিফলন হিসাবে নেতাকর্মীরা নৌকার নয় বরং প্রার্থীর কারণে পরাজয় দেখছেন।

আ’লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি বলেন, বর্তমান সাংসদ ডাঃ মনসুর রহমানের নির্দেশক্রমে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা নৌকার বিরোধীতা করেছেন। এমপি বিএনপির প্রার্থীর নিকট থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন। যার প্রমাণ আমার কাছে আছে। আর সে কারণে সাংসদ ও তার মতদর্শীরা প্রকাশ্যে ধানের শীষের ভোট করেছেন। এছাড়া এবার পৌরসভা নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন মোট ১১ জন দলীয় নেতা। তাদের মধ্যে দল আমাকে মনোনয়ন দেয়ায় তারা শুরু থেকেই আমার উপর ক্ষুব্ধ ছিল। আমার পরাজয়ের পিছনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

এই নির্বাচনে বর্তমান সাংসদ কেনো বিরোধীতা করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে রবি বলেন, তিনি আমার কাছে ৩০ লাখ টাকা চেয়েছিলেন। আমি সে চাহিদা পূরণ করতে না পারায় তার একজন নিকট আত্মীয় (স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী) গোলাম আজম নয়নকে প্রতিদ্বন্দ্বি হিসাবে ভোট করিয়েছেন। যা এলাকার সকলেই জানেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আ’লীগের মেয়র প্রার্থী রবি সাবেক একজন সাংসদের বিশেষ ব্যাক্তি হিসাবে এলাকায় পরিচিত। সে সুবাদে গত পৌরসভা নির্বাচনে তিনি সহজেই দলীয় মনোনয়ন পান এবং নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হোন। এরপর রবি সাবেক একজন ইউএনওর বিশেষ সহযোগিতায় নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর পর পূণঃভোট গণনার মাধ্যমে জয়লাভ করেন। আর এরপর রবি মেয়র পদে বসে পৌরসভার বিভিন্ন কাজে অনিয়ম ও দূর্ণীতিতে জড়িয়ে পরেন। পাশাপাশি তিনি দলের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়নের পাশাপাশি সাবেক সাংসদের এজেন্ট হিসাবে কাজ শুরু করেন। এতে করে দলের নেতাকর্মীরা তার উপর চরম ক্ষুব্ধ হয়ে যায়। এবারের পৌরসভা নির্বাচনে দল আবারো তাকে মনোনয়ন দিলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়।

পৌর আ’লীগের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এই নির্বাচনে নৌকা মার্কাকে জয়ী করতে দলের পক্ষ থেকে কোনো গাফলতি ছিল না। গত ৫ বছর আগে পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী জয়লাভ করেন। সে সময় রবি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্যায় ভাবে কৌশলে তাকে সরিয়ে মেয়র হিসাবে ক্ষমতায় আসে। সে কারণে পৌরবাসী তার উপর ক্ষুব্ধ ছিল। এবার অনেক ত্যাগী নেতারা দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিল কিন্তু দল তাকে পূণরায় মনোনয়ন দেন। সে কারণে সুধি সমাজ নৌকাকে নয় ক্ষোভে রবিকে পরাজিত করেছেন।

এ ব্যাপারে বর্তমান সাংসদ ডাঃ মনসুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এনএস



বিষয়: পুঠিয়া


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top