রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে নেতৃবৃন্দ

বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে না

সাদিকুল ইসলাম | প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০২১ ০১:৫৬; আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৩১

বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে মঞ্চে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ।

বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে না। এর প্রমান হচ্ছে ‘আওয়ামীলীগ প্রার্থী কয়েক হাজার ভোট পায়, আর বিএনপি প্রার্থী পায় মাত্র ৯৮ ভোট। এটি কি আদৌ সম্ভব? মানুষ বুঝে। কাজেই এই সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন নয়।’ গনতন্ত্র ফিরে আসবে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে। রাজপথ উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। তাই নেতাকর্মীকে আগামী আন্দোলনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে।
দেশব্যাপী নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন, ভোট চুরি ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ বক্তারা এসব কথা বলেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পৌনে তিনটার দিকে রাজশাহীর মাদ্রাসা ময়দান সংলগ্ন নাইস কনভেনশন সেন্টারে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ শুরু হয়। এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজশাহীর সাথে উত্তরাঞ্চলের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। আবার সমাবেশের জন্য বিএনপি বড় কোন স্থানেও অনুমতি পায়নি।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি বলেন, ৭০ সালে আওয়ামী লীগ ভোটে জিতে ক্ষমতা পায়নি, পাকস্থানিরা নানান বৈষম্য তৈরী করে প্রতিবাদে আমরা স্বাধীনতার সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন করি। আর এখন সে স্বাধীন দেশে ভোট ডাকাতি হয়।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপা আপনি এতো জনপ্রিয় তাহলে আপনাকে কেন ভোট চুরি করতে হয়? দিনের ভোট রাতে সারতে হয়। বিএনপির এ নেতা আরো বলেন, রাজপথেই ফায়সালা হবে গণতান্ত্রিক লড়ায়ে। জিয়াউর রহমানের উপাধি জনগনের মুক্তির অবদান হিসেবে চাইলেই তা কেউ কেড়ে নিতে পারবে না যদি সম্ভব হয় তা হলে তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি দেন।
যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশীদ এমপি বলেন, অবৈধ মধ্যে রাতের সরকারকে হটাতে আন্দোলনকারীদের সকল সহযোগিতা দেয়া হবে। পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, জনগনের টাকায় কেনা আস্ত্র তাদের দিকে তাক করেন এটার ফল শুভ হেবেনা।

সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজশাহীর সাথে উত্তরাঞ্চলের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।

রাজশাহী নগর বিএনপির সভাপতি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষায়ক সম্পাদক সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা সাবেক মেয়র ও এমপি মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা হাবিবুর রহমান হাবীব, যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশালের নেতা মজিবর রহমান সারোয়ার, যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশীদ এমপি, খুলনা সিটি নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু, চট্টগ্রামের মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত, ঢাকার মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল ও সাদেক হোসেন খোকার ছেলে এবং মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা লে. কর্ণেল আ. লতিফ, নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন সমাবেশ পরিচালনা করেন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, সেক্রেটারী মাহফুজুর রহমান রিটন প্রমুখ।
সমাবেশে ইশরাক হোসেন বলেন, জাতীয় নির্বাচনের নামে দেশে কী হয়েছে তা আপনারা দেখেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে একটা আনন্দঘন ও আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তার পরিবর্তে দেশে এই অনির্বাচিত সরকার গুম, খুন, হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ, মানুষের কথা বলার অধিকার হরণ, ভোটের অধিকার হরণ করেছে। মানুষের এসব অধিকার ফিরিয়ে আনতে আজ আমরা স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে আন্দোলনের বার্তা নিয়ে এসেছি। তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে কালো আইন করেছে সরকার। জিয়াউর রহমানের খেতাব নিয়ে সরকার তামাশা করছে। আজ বাংলাদেশে কোন রাজনৈতিক নেতৃত্ব সরকারের ক্ষমতায় নাই। তাই এই অবৈধ সরকারকে উৎখাত করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সমাবেশে পরিচালনা করেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান মিলন।
এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রাজশাহীর সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তা সত্বেও রাজশাহী ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকে হাজার হাজার বিএনপি দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশকে ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছ পুলিশ ও র‌্যাব।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top